মথুরা, 2 সেপ্টেম্বর : মধ্যরাতে মথুরার সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান কাফিল খান । সংশোধানাগার থেকে বেরিয়ে কার্যত উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকে আরও একবার আঙুল তোলেন তিনি । উত্তরপ্রদেশের 'এনকাউন্টার নীতি' প্রসঙ্গ টেনেই বলেন, আমি কৃতজ্ঞ । আমায় এনকাউন্টার করা হয়নি !
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী বক্তব্য পেশের অভিযোগ ছিল কাফিল খানের বিরুদ্ধে । ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করছেন, এই অভিযোগ এনে তাঁকে জাতীয় সুরক্ষা আইনের আওতায় বন্দী করেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার ।
কাফিল খানের মামলার শুনানিতে গতকাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানায় তাঁকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে । এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারকে অবিলম্বে কাফিল খানকে মুক্ত করার নির্দেশ দেয় । আদালত জানায়, চিকিৎসক কাফিল খানের মন্তব্য হিংসা বা বিদ্বেষমূলক ছিল না । অন্তত উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তার সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি তারা ।
আদালতের নির্দেশের পরেও অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি । এলাহাবাদ আদালতে অবমাননার মামলা করবে বলে জানায় কাফিল খানের পরিবার ।
মধ্যরাতে কাফিল খানকে মুক্তি দেওয়া হয় । সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে কাফিল বলেন, "আমি আইন-প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ । আদালত জানিয়েছে আমার বক্তব্য কোনও হিংসাকে উসকে দেয়নি । এবং পুলিশের বিশেষ বাহিনী যাঁরা আমায় মুম্বই থেকে মথুরা নিয়ে এসেছেন । তাঁদেরও ধন্যবাদ । তাঁরা আমায় এনকাউন্টার করেননি । মেরে ফেলেননি । "
তাঁর সংযোজন, রামায়ণে মহর্ষি বাল্মিকী বলেছিলেন রাজার রাজ ধর্ম পালন করা উচিত । কিন্তু উত্তরপ্রদেশে রাজা রাজধর্ম পালন করছেন না ।
কাফিলের মুক্তির পর খুশি তাঁর মা নুজ়হত পরভিনও । তিনি শেষ পর্যন্ত তাঁর ছেলেকে দেখতে পারবেন ভেবেই খুব খুশি । মথুরা সংশোধনাগারে যাওয়ার পথে নুজ়হত পরভিন বলেন, আমার ছেলে সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়েছে । আমি ওকে আবার দেখতে পারব , ছুঁতে পারব । অনেকটা সময় পর আবার অনুভব করতে পারব ।
গত বছর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে CAA বিরোধী মন্তব্যের অভিযোগে আনা হয়েছিল কাফিলের বিরুদ্ধে । 29 জানুয়ারি তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় । প্রথমে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ ছিল । জামিনের আবেদন করা হয় পরিবারের তরফে । জামিনের পরও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি । এরপরই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রয়োগ করে বন্দী করা হয় কাফিলকে ।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট সম্পূর্ণ বিষয়টির বিবেচনা করে । প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয় । কাফিলের বক্তৃতা হিংসা ছড়িয়েছে, এরকম কোনও প্রমাণ উত্তরপ্রদেশ সরকার দিতে পারেনি বলে জানায় আদালত ও মুক্তির আদেশ দেয় ।