চেন্নাই, 21 ডিসেম্বর : চলতি বছর 22 জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপিত হয়েছিল চন্দ্রযান -2 ৷ সব ঠিক থাকলেও পরে তার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয় ল্যান্ডার বিক্রম ৷ বিক্রমকে নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই চন্দ্রযান -3 এর প্রস্তুতি শুরু করে ISRO । এবার চাঁদের মাটিতে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে এই তিন নম্বর মিশনের নেতৃত্বের জন্য নিয়োগ করা হল চেন্নাইয়ের বিজ্ঞানী পি ভিরামুথুভেলকে । এম ভানিতার পরিবর্তে তাঁকে চন্দ্রযান 3-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর পদে আনা হল ।
অন্য কোনও কারণে নয়, পি ভিরামুথুভেলকে চন্দ্রযান -3 মিশনের দায়িত্বে আনা হয়েছে প্রশাসনিক পরিবর্তনের জন্য । এবিষয়ে এক ISRO আধিকারিক বলেন, "ISRO-র হেডকোয়াটারে ভিরামুথুভেল স্পেস ইনফ্রাস্টাকচার প্রোগ্রাম অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন । প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য তাঁর সুনাম রয়েছে ।" তিনি আরও জানান, চন্দ্রযান ২ -এর সময় ISRO-র সঙ্গে NASA-র যে আলোচনা চলছিল, তার তিনি সদস্য ছিলেন । NASA-র তৈরি LRA প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য যে দল গঠিত হয়েছিল তারও সদস্য ছিলেন তিনি ।
ভিরামুথুভেলকে নিয়ে ISRO-র আধিকারিকদের মত, একেবারে নতুন সদস্য হিসেবে চন্দ্রযানের দায়িত্ব নেওয়ায় তাঁর মাথায় ব্যর্থতার বোঝা থাকবে না । যে কারণে তিনি ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন । যদিও ISRO-র অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, "প্রজেক্টটি বাস্তবায়িত হওয়া আগেই এই পরিবর্তন না করলে ভালো হত । কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত এই মিশনে অনুমোদন দেয়নি ।"
22 জুলাই দুপুর 2টো 23 মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় চন্দ্রযান-2 ৷ এরপর পৃথিবীর চারপাশে পাক খেতে খেতে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ায় সেটি ৷ পাঁচবার পাক খাওয়ার পর সেটি চাঁদের কক্ষপথে পাড়ি দেয় ৷ 20 অগাস্ট সকাল 9 টা 28 মিনিটে সেটি চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে পড়ে ৷ এরপর কক্ষপথ বদল করে ক্রমশ চাঁদের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে থাকে চন্দ্রযান ৷ গতকাল সফলভাবে পঞ্চম অর্থাৎ সর্বশেষ কক্ষপথটি বদল করে চন্দ্রযান-2 ৷ ভারতীয় সময় সন্ধ্যা 6টা 21 মিনিটে শুরু হয় এই প্রক্রিয়া ৷ চলে 52 সেকেন্ড ৷ এরপরই ISRO-র তরফে টুইট করা হয় ৷ জানানো হয়, প্রপালশন সিস্টেম ব্যবহার করে পুরো কাজটি নিঁখুতভাবে হয়েছে ৷ সবকিছু ঠিকঠাক রয়েছে চন্দ্রযান 2-এর ৷ আপাতত চন্দ্রযানটি যে কক্ষপথে রয়েছে সেখান থেকে চাঁদের দূরত্ব 119 কিলোমিটার x 127 কিলোমিটার ৷
ISRO-র তরফে জানানো হয়েছিল, তাদের পরবর্তী লক্ষ্য চন্দ্রযান-2 থেকে সফলভাবে ল্যান্ডার বিক্রমকে আলাদা করা ৷ এরপর 2 সেপ্টেম্বর দুপুরে সেই প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পূর্ণ হয় ৷ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখার আগে এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা ৷ এরপর 3 সেপ্টেম্বর ও 4 সেপ্টেম্বর আরও দু'বার কক্ষপথ বদল করবে বিক্রম ৷ এরপরই শুরু হয় বিক্রমকে চাঁদে নামানোর তোড়জোড় ৷ কিন্তু তারপরই ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় ISRO-র।