হায়দরাবাদ, 11 অগাস্ট : প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর দিনই শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে ETV ভারতকে জানালেন, শ্রীলঙ্কার জন্য একটি নতুন সাংবিধানিক সংস্কার প্রয়োজন যা দেশের মানুষের স্বার্থপূরণ করবেন, বিদেশি শক্তির নয় । মাহিন্দ্র রাজাপক্ষে গত সপ্তাহে COVID-19 প্যানডেমিকের আতঙ্কের মধ্যেই দেশের সংসদীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন । রবিবার কলম্বোর কল্যাণীয়া বৌদ্ধ মন্দিরে শপথ নেন রাজাপক্ষে । নয় মাস আগে, 2019 সালের নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গোতাবায়া রাজাপক্ষে প্রায় 52 শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন । মাহিন্দা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ক্ষমতাশীল SLPP (শ্রীলঙ্কা পদুজনা পার্টি)-র হয়ে উত্তর-পশ্চিম কুরুনেগালা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন । 225 আসনের মধ্যে 145টি আসন যেতে তাঁর দল । নির্বাচনী ইসতেহারের প্রতিশ্রুতি মত 19তম সংবিধান সংশোধনের সংস্কার করতে পাঁচটি আসন কম রয়েছে । 19তম সংবিধান সংশোধনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা কতটা সে সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে মাহেন্দ্র রাজাপক্ষে সাংবাদিক স্মিতা শর্মাকে বলেন, "19তম সংশোধন সাবলীল-উৎপাদনশীল সরকারি কাজকর্মের ক্ষেত্রে একটা বড় বাধা । শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ কেন পূর্বতন সরকারকে প্রত্যাখ্যান করল তার অন্যতম কারণ এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ।"
19তম সংবিধান সংস্কার করা হয়েছিল 2015 সালে যখন 10 বছর ক্ষমতায় থাকার পর হেরে যান মাহিন্দা রাজাপক্ষে । প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মৈত্রীপালা সিরিসেনা । প্রধানমন্ত্রী হন রনিলবিক্রম সিংহে । ক্ষমতায় আসে UNP (ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি) । সেই সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কম করা হয়েছিল । প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করা হয়েছিল, যেমনটি সংস্কারবাদী সরকার বলতে বোঝায় । যাই হোক । প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষে সেই সংশোধনের তুমুল কটাক্ষ করেছেন । তাঁর দাবি, এই সংস্কার বিদেশি শক্তির হাত শক্ত করেছিল । প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষে বলেন, "আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মানুষের স্বার্থ পূরণ করবে, এমন ভাবেই সংবিধান সংশোধন করব। বিদেশি শত্রুর হাত শক্ত করতে নয় ।"
সিরিসেনা এবং বিক্রমসিংহে মাত্র তিন শতাংশ ভোট নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছেন । UNP থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া SJB( সামাজি জানা বালাসংঘ)- এর সাজিথ প্রেমাদাসা 54 আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছেন । তবে মাহিন্দা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে চান কি না সেটা দেখার । এটা নিয়ে দুই রাজাপক্ষে ভাইয়ের মধ্যে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে । ইস্টার্ন কন্টেইনার টার্মিনাল(ETC)-এর ভাগ্য এবং ভারত- জাপান অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আগামী দিনে কোন খাতে বইবে, এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান রাজাপক্ষে । তার একটাই মন্তব্য, "এখনই এনিয়ে বলার সময় আসেনি ।"