মুম্বই, 23 নভেম্বর : মুহূর্তে বদলে যাওয়া হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস যেন বলে দিল অনেক কিছু ৷ সুপ্রিয়া সুলে লিখলেন, 'ভেঙে গেল দল এবং পরিবার' ৷
নাটকীয় ভাবে আজ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফড়নবিস ৷ উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন NCP-র অজিত পাওয়ার ৷ আর এখানেই শুরু হয় নতুন জল্পনা-বিতর্কের ৷ এক দিন আগে পর্যন্ত যে অজিত পাওয়ার ছিলেন কংগ্রেস-শিবসেনা-NCP-র বৈঠকের অন্যতম চালিকা শক্তি, তিনিই বিরোধী পক্ষের সঙ্গে হাত মেলালেন ৷ অজিতের সিদ্ধান্তের ফলে স্বাভাবিক ভাবেই NCP প্রধান শরদ পাওয়ারের দিকে বিশ্বাসঘাতকতার আঙুল তুলতে শুরু করেছিল কংগ্রেস ৷ বিষয়টির মধ্যে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল শরদ পাওয়ারের অতীত কর্মকাণ্ড ৷ আগেও একাধিক বার কথা দিয়ে শেষ মুহূর্তে সরে এসেছিলেন তিনি ৷ স্বাভাবিক ভাবেই এ ক্ষেত্রেও সেই ঘটনা বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, ঠিক তখনই টুইট করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন শরদ পাওয়ার ৷ জানিয়ে দেন, গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে হাত মেলানোর বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অজিতের ব্যক্তিগত ৷ দলের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই ৷ দলের কয়েকজন বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে দাবি করেন শরদ পাওয়ার ৷
কয়েক মুহূর্ত পরেই বড় ছোবলটা আসে শরদ পাওয়ারে মেয়ে সুপ্রিয়া সুলের মোবাইল থেকে ৷ হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে লেখেন, ভেঙে গেল পরিবার, দল ৷ বাবা-মেয়ের পর পর এমন বার্তা ছড়িয়ে পড়তেই স্পষ্ট হতে শুরু করে NCP-র অন্দরের ছবিটা ৷
সালটা 1999 ৷ কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন শরদ পাওয়ার ৷ সঙ্গে ছিলেন আরও দু'জন, পি এ সাংমা এবং তারিক আনওয়ার ৷ 20 মে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে নতুন দল গড়ে ফেলেন শরদ ৷ নাম দেওয়া হয় ন্যাশানালিস্ট কংগ্রেস পার্টি ৷ কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গেলেও নতুন দলের প্রতীকের মধ্য কোথায় যেন একটা পুরনো দলের ছোঁয়া থেকে যায় ৷ যদিও, রাজনীতির গতি প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফের কংগ্রেসে কাছে আসতে শুরু করেন শরদ পাওয়ার ৷ কিন্তু, BJP-সঙ্গে দূরত্বটা বজায় ছিল ৷
মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফড়নবিস ক্ষমতায় আসার পর BJP-NCP দূরত্ব আরও বাড়ে ৷ ফড়নবিস একটা সময় টুইট করে শরদ ও অজিত পাওয়ারদের নিয়মিত আক্রমণ করতেন ৷ অজিত পাওয়ার, শরদ পাওয়ারদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন ফড়নবিস ৷ এমনকি, সে সময় তাঁর ঘোষণা ছিল কোনও মূল্যেই NCP-র সঙ্গে জোট করবেন না ৷
কিন্তু, পাঁচ বছর আগের ঘটনা আজ অতীত ৷ এক সময় যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই অজিত পাওয়ারকে সঙ্গে নিয়েই দ্বিতীয় বারের জন্য মসনদে বসলেন দেবেন্দ্র ফড়নবিস ৷ তাও আবার নাটকীয় ভাবে ৷ ভোরের আলো ফোটার আগেই ৷ আর সেই ঘটনার পরই এবার পাওয়ারের পরিবারে ভাঙনের ইঙ্গিত ৷ ইঙ্গিত দলেও ৷