দিল্লি, 8 ফেব্রুয়ারি: কে বড় কৃষকবন্ধু? কেন্দ্র না রাজ্য? আপাতত সেই নিয়েই চলছে দড়ি টানাটানি৷ রবিবার হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করেন, রাজ্যের অসহযোগিতাতেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না বাংলার কৃষকরা৷ এরজন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি৷ এরপর সোমবারও রাজ্য়সভায় বাজেট বক্তৃতার জবাবি ভাষণে কৃষককল্যাণ ইশুতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নিশানা করেন মোদি৷ যার উত্তর দিতে মাঠে নামে তৃণমূলও৷ দলের হয়ে দিল্লিতেই সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়৷
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক খতিয়ান তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষকদরদি ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করেন সৌগত৷ তুলনা টানেন কেন্দ্রের কিষান সম্মান নিধি বনাম রাজ্যের কৃষকবন্ধু প্রকল্পের মধ্যে৷ জানান, কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতায় বাংলার সব চাষিকেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু কেন্দ্রের প্রকল্পের আওতাভুক্ত হচ্ছেন শুধুমাত্রা তাঁরাই, যাঁদের নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি রয়েছে৷ বাংলার 100 শতাংশ কৃষকই রাজ্য় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় এসেছেন 92 শতাংশ কৃষক৷
আরও পড়ুন: বাংলায় রাজনীতি না হলে কিষান সম্মাননিধির লাভ পেতেন কৃষকরা : মোদি
সৌগতর দাবি, রাজ্য়ের কৃষকদের জন্য ফসল বিমারও ব্যবস্থা করেছে তৃণমূলের সরকার৷ যার সবক’টি কিস্তি সরকারই দিচ্ছে৷ অন্যদিকে, কেন্দ্রের ফসল বিমার ক্ষেত্রে কৃষককেই কিস্তির ব্যয়ভার বহন করতে হয়৷
কৃষকবন্ধুর আওতায় সংশ্লিষ্ট কৃষক পরিবারের 18 থেকে 60 বছর বয়সি কোনও সদস্যের মৃত্য়ু হলে এককালীন 2 লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়৷ কিন্তু কেন্দ্রের প্রকল্পে এমন কোনও সুবিধা নেই৷ সৌগত জানান, প্রথম আটমাসে বাংলার 94 শতাংশ কৃষক রাজ্য়সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন৷ অথচ এখনও পর্যন্ত পিএম কিষাণ সম্মাননিধির সুবিধা পেয়েছেন মাত্র 48 শতাংশ কৃষক৷
গেরুয়াশিবির যখন বাংলার কৃষকদের দুর্দশা ঘোচাতে রাজ্য়ে পদ্ম ফোটানোর দাওয়াই দিচ্ছে, সেখানে সৌগতর দাবি, মমতার শাসনকালে কৃষকদের আয় বেড়েছে তিনগুণ৷ 2011 সালে বছরে 90 হাজার টাকা রোজগার করতেন তাঁরা৷ বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে 2 লাখ 90 হাজার৷
পাশাপাশি, কৃষক ইশুতে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সৌগত৷ তিনি জানান, বাংলা চাল উৎপাদনে দেশে প্রথম হওয়া সত্ত্বেও যথেষ্ট পরিমাণ চাল কেনেনি নয়া দিল্লি৷ সৌগতর দাবি, রাজ্য়ের তরফে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার কাছে 6 লাখ মেট্রিকটন চাল কেনার আবেদন জানানো হয়েছিল৷ অথচ তারা কেন মাত্র 76 হাজার মেট্রিকটন৷ বদলে চাল উৎপাদনে পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলি থেকে অনেক বেশি পরিমাণে চাল কেনা হয়৷