দিল্লি, 23 এপ্রিল: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ফাঁসানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলা হয়েছে । গতকাল সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এই দাবি করেন আইনজীবী উৎসব বেইন্স । আজ সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ আইনজীবী উৎসব বেইন্সের কাছে এই নিয়ে প্রমাণ চাইল । আগামীকাল তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে ।
বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি রোহিনটন ফলি নরিম্যান ও বিচারপতি দীপক গুপ্তার বেঞ্চ আজ নোটিস ইশু করেছে । নোটিসে বেইন্সকে জানানো হয়েছে, এই বিষয়ে আগামীকাল শুনানি হবে । তিন বিচারপতির বেঞ্চের তরফে আইনজীবী উৎসব বেইন্সকে কোর্টে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে । সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট এই বেঞ্চেই প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের বিরুদ্ধে আনা যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে । প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন সুপ্রিম কোর্টেরই এক বহিষ্কৃত মহিলা কর্মী ।
প্রধান বিচারপতি যাতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তাই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেই এই যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা হয়েছে । আইনজীবী উৎসব বেইন্স গতকাল সুপ্রিম কোর্টে এই মর্মে একটি হলফনামা দাখিল করেন । তাঁর দাবি, এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁকে ওই অভিযোগকারী মহিলার হয়ে মামলা লড়ার জন্য প্রথমে 50 লাখ টাকা অফার করেন । কিন্তু মহিলার বক্তব্যে বেশ কিছু অসামঞ্জস্য থাকায় তিনি মামলাটি লড়তে চাননি । আর তিনি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালে ওই ব্যক্তি তাঁকে মামলা লড়ার জন্য দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি হয়ে যান ।
আইনজীবী উৎসব বেইন্স তাঁর হলফনামায় জানান, তদন্ত করে তিনি জানতে পেরেছেন রমেশ শর্মা নামে এক ব্যক্তি বেশ কিছু বছর ধরে টাকার বিনিময়ে একটি র্যাকেট চালাচ্ছেন । অনেক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আইনের হাত থেকে বাঁচাতেই অর্থের বিনিময়ে এই র্যাকেট চালাতেন তিনি । কিন্তু রঞ্জন গগৈ শেষমেশ এই র্যাকেটের পর্দা ফাঁস করেন । তিনি প্রধান বিচারপতির পদে আসীন হওয়ার পরই তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেন । তাই প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতেই তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে । সেইসঙ্গে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেন, "এটা সেই সব বিচারকের জন্য এক প্রকার হুমকি যাঁরা বিত্তশালী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে স্বাধীনভাবে রায় দেন । "
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে অনলাইনে মিডিয়ার রিপোর্ট নিয়ে শনিবার সুপ্রিম কোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চে আলোচনা করা হয় । সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে বলা হয়, "বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা আজ চরম হুমকির মুখে এবং বৃহত্তর ষড়যন্ত্র বিচার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে । "