দিল্লি, 18 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন 2019-র বিরুদ্ধে সরব দেশের একাধিক রাজ্য । দিল্লিতেও চলছে বিক্ষোভ । ইতিমধ্যে এই আইন নিয়ে একাধিক পিটিশন দাখিল হয়েছে শীর্ষ আদালতে। তার মধ্যে 60টি আবেদনের শুনানি ছিল আজ । সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ নেই। পরবর্তী শুনানি হবে জানুয়ারি মাসে । পাশাপাশি 60টি আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আইনের সাংবিধানিক বৈধতা জানতে চেয়ে কেন্দ্রর কাছে জবাব তলব শীর্ষ আদালতের । মামলার পরবর্তী শুনানি 22 জানুয়ারি ।
আজ এস এ বোবদে অ্যাটর্নি জেনেরাল কে কে বেণুগোপালকে বলেন, "আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের তরফে একটি অন্যরকম অনুরোধ এসেছে ।" অশ্বিনী উপাধ্যায় জানান, তিনি জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছিলেন । সেখানকার মানুষজন আইন সম্পর্কে জানেন না । আইনটি কি জনস্বার্থে প্রকাশ করা যায়? উত্তরে অ্যাটর্নি জেনেরাল বলেন, "সরকারি কর্তৃপক্ষ এই আইন প্রকাশ করতে সক্ষম ।"
উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির পর পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লিতেও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে মানুষজন। সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ ও অসমে BJP-র অন্যতম জোটসঙ্গী অসম গণ পরিষদ-সহ একাধিক রাজনৈতিক দল সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছে । আবেদনগুলি শোনার জন্য একটি তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে এই বেঞ্চে রয়েছেন বি আর গাভাই ও সূর্য কান্ত।
পাকিস্তান ,বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়াই এই আইনের মূল উদ্দেশ্য । হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসিক এবং খ্রিশ্চান সম্প্রদায়ের মানুষজন ভারতে ছ'বছর বসবাসের পর এখানকার নাগরিকত্ব পাবেন। যা আগে ছিল 11 বছর । 2014 সালের 31 ডিসেম্বর ও তার আগে আফগানিস্তান, ছাড় দেওয়া হয়েছে এই আইনে।
যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের যুক্তি নাগরিকত্ব প্রদানের ভিত্তি ধর্ম হতে পারে না। তাদের দাবি, সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী। ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া মানে নাগরিকদের জীবন-যাপন ও সাম্যের অধিকারকে লঙ্ঘন করা। তা ছাড়া এই আইন দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার মৌলিক নীতিকে প্রভাবিত করে। আবেদনকারীদের বক্তব্য, সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সমান আচরণ করা সরকারের কর্তব্য।