ETV Bharat / bharat

রাম জন্মভূমি না নতুন রাম মন্দির, কী নাম হবে ?

author img

By

Published : Aug 4, 2020, 4:23 PM IST

Updated : Aug 4, 2020, 5:04 PM IST

রাম জন্মভূমি না নতুন রাম মন্দির ? অযোধ্যায় যে মন্দির নির্মিত হতে চলেছে তা কি বলা হবে ? আলোচনায় দিলীপ অবস্থি ।

Ram Janmabhoomi or new Ram temple?
রাম জন্মভূমি না নতুন রাম মন্দির?

অযোধ্যায় যে নতুন রাম মন্দির তৈরি হতে চলেছে, তা সকলকে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেবে । একে আমরা রাম জন্মভূমি বলব না শুধুই রাম মন্দির বলব ?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে রাম জন্মভূমি মন্দির সেই জমিতেই গড়ে তোলা হয়েছিল, যেখানে বাবরি মসজিদের কাঠামো ছিল । শুধুমাত্র বিগ্রহটিকে পুনরুদ্ধার করা যায়নি এবং পরবর্তীকালে সেটিকে একটি অস্থায়ী তাবুর ভিতরে রেখে দেওয়া হয় পূজার্চনার জন্য । 1992 সালের 6 ডিসেম্বরের ধ্বংসলীলায় প্রকৃত গর্ভগৃহটি কোথাও কাঁদা, মাটি—পাথরে ভুলুণ্ঠিত হয়ে গিয়েছে ।

নতুন রাম মন্দিরে ভূমি পুজো এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠান সূচি শুরু হবে 3 অগাস্ট থেকে । 5 অগাস্ট ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে, ভূমি পুজো হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাঁচটি রূপোর ব্লক স্থাপন করবেন । প্রাথমিকভাবে, এই অনুষ্ঠানে 250 জন অতিথির আসার কথা ছিল কিন্তু এখন তালিকা ছোট করে 125 জন করা হয়েছে । তালিকায় নাম রয়েছে এল কে আদবানি, এম এম যোশী, RSS প্রধান মোহন ভাগবত এবং রাম জন্মভূমি আন্দোলনের পতাকাবাহী মহন্ত নৃত্যগোপাল দাস । নতুন গর্ভগৃহ যেখানে তৈরি হবে, সেখানে একটি 40 কেজি রূপোর স্ল্যাব রাখা হবে ।

এর অর্থ এই যে, প্রকৃত গর্ভগৃহ যেখানে ছিল অর্থাৎ যেখানে ভগবান রামের জন্ম হয়েছিল বলে মনে করা হয়, তার অনুপস্থিতিতেই এই গর্ভগৃহ তৈরি করা হচ্ছে । সমস্ত পবিত্র নদী থেকে জল সংগ্রহ করা হয়েছে । আনা হয়েছে মাটিও । আর এই সব কিছুই ভূমি পুজো এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে ওই স্থানে ঢেলে দেওয়া হবে ।

ram-janmabhoomi-or-new-ram-temple
রাম জন্মভূমি না নতুন রাম মন্দির, কী নাম হবে ?

নতুন রাম মন্দির চত্বর সতি্যই অভাবনীয় দৃষ্টিনন্দন হবে । প্রায় 120 একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত, এই মন্দিরই হবে বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহৎ হিন্দু দেবালয় । প্রথম স্থানে রয়েছে কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাট মন্দির এবং দ্বিতীয় স্থানে তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লির শ্রীরঙ্গনাথস্বামী মন্দির । এই চত্বরে প্রধান মন্দির হিসাবে থাকবে ভগবান রামচন্দ্রের মন্দির । আর তার চারপাশ জুড়ে থাকবে সীতা, লক্ষ্মণ, ভরত, শত্রুঘ্ন এবং হনুমানের মন্দির ।

নতুন রাম মন্দিরের মডেলের পরিকল্পনা করা হয়েছে নাগারাজ শৈলীর স্থাপত্যকলা অনুসারে । মন্দিরের পরিসর 76,000—84,000 বর্গফুট এলাকা । এর নকশা প্রস্তুত করেছিলেন চন্দ্রকান্ত সোমপুরা, 1983 সালে । এই সোমপুরা পরিবারই গুজরাতে সোমনাথ মন্দিরেরও বিন্যাসশৈলী প্রস্তুত করেছিলেন । আর তাঁদের হাতেই রাম মন্দিরের মডেল তৈরি করা এবং স্তম্ভ তথা দেওয়ালের স্থাপত্যকীর্তি তৈরির ভার অর্পণ করা হয়েছে । প্রাথমিক নকশায় মন্দিরের উচ্চতা রাখা হয়েছেল 141 ফুট । পরে তা বাড়িয়ে 161 ফুট করা হয় । প্রথমে সোমপুরা চেয়েছিলেন মন্দির দোতলা হবে । কিন্তু এখন মন্দিরের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য উচ্চতা তিন তলা করা হচ্ছে । মন্দিরের একটি প্রধান বড় গম্বুজ অংশ থাকবে আর থাকবে আরও চারটি ছোট গম্বুজ অংশ ।

মন্দির উচ্চতায় হবে 300 ফুট এবং চওড়ায় হবে 280 ফুট । এখানে চারটি উঠোন থাকবে । গুড় মন্ডপ হল চারদিক ঘেরা উঠোন অংশ, যার মধে্য থাকবে মূল গর্ভগৃহ । এই উঠোন অংশ প্রধানত ব্যবহার হবে দেবদর্শনের জন্য । এছাড়া পুণ্যার্থীদের জন্য থাকবে প্রার্থনা মণ্ডপ, কীর্তন মণ্ডপ, নৃত্য মণ্ডপ এবং রং মণ্ডপ । এক সময়ে এই মণ্ডপগুলিতে 5,000—8,000 জন পুণ্যার্থীর সমাগম হতে পারবে ।

এই মন্দির মূলত তৈরি হবে রাজস্থানের ‘বংশীপন্দ’ বালুপাথর দিয়ে । অন্তত 1.75 লাখ কিউবিক ফিট বালুপাথর ব্যবহৃত হবে মন্দির নির্মাণে । মন্দিরে মোট 212টি খোদাই করা স্তম্ভ থাকবে, যার মধে্য একশোটিরও বেশি ইতিমধে্যই তৈরি হয়ে গিয়েছে VHP-র সমস্ত রকম সুযোগ—সুবিধা সম্পন্ন ওয়ার্কশপে, গত 30 বছরে । অযোধ্যার ওয়ার্কশপে বাকি স্তম্ভ খোদাইয়ের কাজ চলছে । এই সমস্ত স্তম্ভকে দু’দফায় একত্রিত করা হবে এবং তার উপর হিন্দু দেবদেবীর ছবি ও অন্যান্য নানা রকম নকশা ফুটিয়ে তোলা হবে । নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা আশিস সোমপুরা জানিয়েছেন, “প্রধান প্রবেশপথ এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে সেখানে কেউ দাঁড়ালে, অতদূর থেকেই মূর্তি দেখতে পারবেন ।” সোমপুরা মনে করেন, 3.5 বছরের মধে্য ভগবান রামের মন্দির তৈরি হয়ে যাবে ।

যা হচ্ছে, তাতে রাম লালাও খুশি । ভূমি পুজোর দিন তাঁর মূর্তিতে পরানো হবে 9টি মূল্যবান রত্নখচিত ভূষণ । তাঁর ভূষণ তৈরি করেছেন পোশাক প্রস্তুতকারক ভগওয়াত পাহাড়ি এবং তাঁর এই সৃষ্টির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘নবগ্রহ’কে ।

অযোধ্যায় যে নতুন রাম মন্দির তৈরি হতে চলেছে, তা সকলকে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেবে । একে আমরা রাম জন্মভূমি বলব না শুধুই রাম মন্দির বলব ?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে রাম জন্মভূমি মন্দির সেই জমিতেই গড়ে তোলা হয়েছিল, যেখানে বাবরি মসজিদের কাঠামো ছিল । শুধুমাত্র বিগ্রহটিকে পুনরুদ্ধার করা যায়নি এবং পরবর্তীকালে সেটিকে একটি অস্থায়ী তাবুর ভিতরে রেখে দেওয়া হয় পূজার্চনার জন্য । 1992 সালের 6 ডিসেম্বরের ধ্বংসলীলায় প্রকৃত গর্ভগৃহটি কোথাও কাঁদা, মাটি—পাথরে ভুলুণ্ঠিত হয়ে গিয়েছে ।

নতুন রাম মন্দিরে ভূমি পুজো এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠান সূচি শুরু হবে 3 অগাস্ট থেকে । 5 অগাস্ট ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে, ভূমি পুজো হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাঁচটি রূপোর ব্লক স্থাপন করবেন । প্রাথমিকভাবে, এই অনুষ্ঠানে 250 জন অতিথির আসার কথা ছিল কিন্তু এখন তালিকা ছোট করে 125 জন করা হয়েছে । তালিকায় নাম রয়েছে এল কে আদবানি, এম এম যোশী, RSS প্রধান মোহন ভাগবত এবং রাম জন্মভূমি আন্দোলনের পতাকাবাহী মহন্ত নৃত্যগোপাল দাস । নতুন গর্ভগৃহ যেখানে তৈরি হবে, সেখানে একটি 40 কেজি রূপোর স্ল্যাব রাখা হবে ।

এর অর্থ এই যে, প্রকৃত গর্ভগৃহ যেখানে ছিল অর্থাৎ যেখানে ভগবান রামের জন্ম হয়েছিল বলে মনে করা হয়, তার অনুপস্থিতিতেই এই গর্ভগৃহ তৈরি করা হচ্ছে । সমস্ত পবিত্র নদী থেকে জল সংগ্রহ করা হয়েছে । আনা হয়েছে মাটিও । আর এই সব কিছুই ভূমি পুজো এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে ওই স্থানে ঢেলে দেওয়া হবে ।

ram-janmabhoomi-or-new-ram-temple
রাম জন্মভূমি না নতুন রাম মন্দির, কী নাম হবে ?

নতুন রাম মন্দির চত্বর সতি্যই অভাবনীয় দৃষ্টিনন্দন হবে । প্রায় 120 একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত, এই মন্দিরই হবে বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহৎ হিন্দু দেবালয় । প্রথম স্থানে রয়েছে কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাট মন্দির এবং দ্বিতীয় স্থানে তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লির শ্রীরঙ্গনাথস্বামী মন্দির । এই চত্বরে প্রধান মন্দির হিসাবে থাকবে ভগবান রামচন্দ্রের মন্দির । আর তার চারপাশ জুড়ে থাকবে সীতা, লক্ষ্মণ, ভরত, শত্রুঘ্ন এবং হনুমানের মন্দির ।

নতুন রাম মন্দিরের মডেলের পরিকল্পনা করা হয়েছে নাগারাজ শৈলীর স্থাপত্যকলা অনুসারে । মন্দিরের পরিসর 76,000—84,000 বর্গফুট এলাকা । এর নকশা প্রস্তুত করেছিলেন চন্দ্রকান্ত সোমপুরা, 1983 সালে । এই সোমপুরা পরিবারই গুজরাতে সোমনাথ মন্দিরেরও বিন্যাসশৈলী প্রস্তুত করেছিলেন । আর তাঁদের হাতেই রাম মন্দিরের মডেল তৈরি করা এবং স্তম্ভ তথা দেওয়ালের স্থাপত্যকীর্তি তৈরির ভার অর্পণ করা হয়েছে । প্রাথমিক নকশায় মন্দিরের উচ্চতা রাখা হয়েছেল 141 ফুট । পরে তা বাড়িয়ে 161 ফুট করা হয় । প্রথমে সোমপুরা চেয়েছিলেন মন্দির দোতলা হবে । কিন্তু এখন মন্দিরের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য উচ্চতা তিন তলা করা হচ্ছে । মন্দিরের একটি প্রধান বড় গম্বুজ অংশ থাকবে আর থাকবে আরও চারটি ছোট গম্বুজ অংশ ।

মন্দির উচ্চতায় হবে 300 ফুট এবং চওড়ায় হবে 280 ফুট । এখানে চারটি উঠোন থাকবে । গুড় মন্ডপ হল চারদিক ঘেরা উঠোন অংশ, যার মধে্য থাকবে মূল গর্ভগৃহ । এই উঠোন অংশ প্রধানত ব্যবহার হবে দেবদর্শনের জন্য । এছাড়া পুণ্যার্থীদের জন্য থাকবে প্রার্থনা মণ্ডপ, কীর্তন মণ্ডপ, নৃত্য মণ্ডপ এবং রং মণ্ডপ । এক সময়ে এই মণ্ডপগুলিতে 5,000—8,000 জন পুণ্যার্থীর সমাগম হতে পারবে ।

এই মন্দির মূলত তৈরি হবে রাজস্থানের ‘বংশীপন্দ’ বালুপাথর দিয়ে । অন্তত 1.75 লাখ কিউবিক ফিট বালুপাথর ব্যবহৃত হবে মন্দির নির্মাণে । মন্দিরে মোট 212টি খোদাই করা স্তম্ভ থাকবে, যার মধে্য একশোটিরও বেশি ইতিমধে্যই তৈরি হয়ে গিয়েছে VHP-র সমস্ত রকম সুযোগ—সুবিধা সম্পন্ন ওয়ার্কশপে, গত 30 বছরে । অযোধ্যার ওয়ার্কশপে বাকি স্তম্ভ খোদাইয়ের কাজ চলছে । এই সমস্ত স্তম্ভকে দু’দফায় একত্রিত করা হবে এবং তার উপর হিন্দু দেবদেবীর ছবি ও অন্যান্য নানা রকম নকশা ফুটিয়ে তোলা হবে । নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা আশিস সোমপুরা জানিয়েছেন, “প্রধান প্রবেশপথ এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে সেখানে কেউ দাঁড়ালে, অতদূর থেকেই মূর্তি দেখতে পারবেন ।” সোমপুরা মনে করেন, 3.5 বছরের মধে্য ভগবান রামের মন্দির তৈরি হয়ে যাবে ।

যা হচ্ছে, তাতে রাম লালাও খুশি । ভূমি পুজোর দিন তাঁর মূর্তিতে পরানো হবে 9টি মূল্যবান রত্নখচিত ভূষণ । তাঁর ভূষণ তৈরি করেছেন পোশাক প্রস্তুতকারক ভগওয়াত পাহাড়ি এবং তাঁর এই সৃষ্টির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘নবগ্রহ’কে ।

Last Updated : Aug 4, 2020, 5:04 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.