দিল্লি, 10 এপ্রিল : দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা । বাড়ছে মৃত্যুও । এরই মাঝে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একটা অভিযোগ বার বার উঠে আসছে । সেটা হল পর্যাপ্ত পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট(PPE)-এর অভাব । কোরোনা সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে বিভিন্ন হাসপাতালের তরফে PPE কিট চাওয়া হচ্ছে । কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, একমাত্র কোরোনা সংক্রমিত গুরুতর রোগীর ক্ষেত্রেই PPE কিট পড়লে হবে । কোরোনার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সকলের PPE কিট থাকা আবশ্যিক নয় । তাই PPE কিট না পাওয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই ।
গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল জানান যে, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে PPE কিটের ক্রমবর্ধমান চাহিদার দিকে নজর রেখে 30টি দেশীয় নির্মাতার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে । তাদের 1.7 কোটি PPE ও 49 হাজার ভেন্টিলেটর তৈরির অর্ডার দেওয়া হয়েছে । তারা ইতিমধ্যে সেগুলি সরবরাহ করতে শুরু করে দিয়েছে । এরপরই যুগ্ম সচিব জানান, কোরোনা সংক্রমণের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সকলের PPE কিটের প্রয়োজনীয়তা নেই । যারা কোরোনা সংক্রমণের গুরুতর রোগীর চিকিৎসরা সঙ্গে যুক্ত তারা PPE কিট ব্যবহার করলেই হবে । এই দিকে নজর রেখেই সরকারের তরফে PPE কিট সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয় ।
লব আগরওয়াল বলেন, "PPE কভারঅল, বুট, হেড গিয়ার ও N-95 মাস্কের সহযোগে তৈরি একটি পোশাক । কোরোনা সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে যাদের অবস্থা গুরুতর তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেই এই পোশাক আবশ্যিক । তুলনামূলক কম গুরুতর রোগীর চিকিৎসার সময় মাস্ক ও গ্লাভসই যথেষ্ট । আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে PPE কিট নির্মাতাদের থেকে সংগ্রহ করেছি । ইতিমধ্যে সেগুলি বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে । তবে, এই কিটের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত ।"
গতকাল মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে যুগ্ম সচিব বলেন, "চিকিৎসকরা সৈনিকের মতো । তাই তাদের সমাজের সহযোগিতার প্রয়োজন । মানুষের কোনওকম ভুয়ো খবরে কান দেওয়া উচিত নয় ।" সরকারি নির্দেশিকা প্রসঙ্গে কথা বলা সময় তিনি বলেন, "স্বাস্থ্যকর্মীদের PPE কিট পাওয়া উচিত । তবে, তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত ।"
লব আগরওয়াল জানান, "ভারতীয় রেল 600 হাজার পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক ও 4 হাজার লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার তৈরি করেছে । 2 হাজার 500 চিকিৎসক ও 35 হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করেছে । তারা 5 হাজার কোচকে 80 হাজার বেডের একটি আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করার অনুমতি পেয়েছে । ইতিমধ্যে 3,250 টি কোচকে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে । "
বৈঠকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহারের বিষয়টিও তুলে ধরা হয় । জানানো হয় যে, চিকিৎসক প্রেসক্রাইব করলেই এই ওষুধের ব্যবহার করা উচিত । হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে এরকম রোগীদের এই ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয় । কারণ তা ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে । এছাড়াও,কোরোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন রাজ্যে যে অভিনব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফে সেবিষয়েও আলোচনা হয় প্রসঙ্গে ।