ওয়াশিংটন: বর্তমানে সমাজে নিষিদ্ধ ভিডিয়ো ভয়ঙ্কর ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে৷ অত্যাধিক মাত্রায় যুব সমাজ এই ভিডিয়ো দেখছে ৷ যা যুব সমাজকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে ৷
স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ, অত্যাধিক স্বাধীনতা, বাবা-মায়েদের উদাসীনতা সন্তানদের কু-পথে নিয়ে যাচ্ছে ৷ ইন্টারনেটের রমরমা পরিস্থিতি আরও জটিল এবং ভয়াবহ করছে ৷ এর সব থেকে বড় কু-প্রভাব সমাজে উপর পড়তে দেখা যাচ্ছে ৷ ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের মতো ঘটনা দেশের নানা প্রান্তে ভয়াবহ আকারে বেড়ে চলেছে ৷
ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে চলা ধর্ষণ, খুন এবং ধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারার ঘটনা, যেমন হায়দরাবাদের মহিলা পশু চিকিৎসককে খুন করার ঘটনা- এ সবেরই সব থেকে বড় উদাহরণ ৷ যখন দিশার দুই চাকার গাড়িটি খারাপ হয়ে গেছিল তখন তাঁর অসহায়তার সুযোগ নিয়ে প্রথমে গণধর্ষণ করে এবং পরে আগুনে পুড়িয়ে দেয় চার জন ৷ দোষী চারজনেরই বয়স কুড়ি বছরে আশপাশে ৷ কারও কম, কারও এক-দু বছর বেশি ৷
সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, অত্যাধিক স্বাধীনতা, খারাপ বন্ধুত্ব, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং যৌন ভিডিয়োর বারবাড়ন্ত এই সব ঘটনার জন্য প্রধান দায়ী ৷
তরুণী এবং মহিলাদের ধর্ষণ সমাজে কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে পড়েছে ৷
বছর কয়েক আগের কথা, দেরহাদুনে যুবকরা যৌন ভিডিয়ো দেখে নিজেদের তরুণী বান্ধবীকে যৌন নির্যাতন করে, যখন সেই তরুণী একা ছিলেন ৷ পরবর্তীতে পুলিশ ওই যুবকদের গ্রেফতার করার পর জানতে পারে প্রতিদিন ইন্টারনেটের মাধ্যমে যৌন দৃশ্য এবং যৌন ভিডিয়ো দেখত তারা ৷
স্মার্ট ফোন এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা নীল ছবি ( ব্লু-ফ্লিম) এবং যৌন দৃশ্য দেখার প্রবণতা বাড়িয়ে তুলেছে ৷
উত্তরপ্রদেশ হাইকোর্টের নির্দেশ মতো, 2015 সালে কেন্দ্রীয় সরকার 857 টি পর্ন ভিডিয়ো এবং সাইট বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছিল ৷
একইসঙ্গে 827টি ইন্টারনেট সাইট তাদের পর্ন সাইট ব্লক করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ৷ আবার পর্ন ভিডিয়ো এবং পর্ন সাইটের বারবাড়ন্ত শুরু হয়েছে ৷
প্রবীনদের কী করা উচিত
সবার আগে তাঁদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের দিকে নজর দিতে হবে ৷ যাতে তারা স্মার্ট ফোন নিতে না পারে এবং নিজে বা বন্ধুদের সঙ্গে নীল ছবি দেখার সুযোগ না পায় সে দিকটা খেয়াল রাখতে হবে, পর্ন সাইটের যোগাযোগ বন্ধ করতে হবে, অফুরন্ত ফোন ডেটা এবং ইন্টারনেটের দিকে রাশ টানতে হবে ৷
সন্তানরা যাতে কুসঙ্গে না পড়ে সে দিকে নজর রাখতে হবে এবং তাদের সঠিক বন্ধু নির্বাচনের জন্য বোঝাতে হবে ৷ যাতে বন্ধুদের সঙ্গে মিশে পর্ন সাইট না দেখে, না দেখার সুযোগ পায়, সে দিকে নজর রাখতে হবে ৷
সন্তানদের একা রাখা চলবে না ৷ একা থাকার ফলে তাদের মধ্যে একাকিত্ব বোধ তৈরি হয়, এ সবই তাদের পর্ন ভিডিয়ো দেখার দিকে নিয়ে যায় ৷
যদি তাদের ব্যবহারে কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়ে তাহলে দ্রুত কাউন্সেলিং করা উচিত, যাতে তারা কোনওভাবেই পর্ন ভিডিয়োর প্রতি আশক্ত হয়ে না পড়ে ৷
অজস্র পর্ন সাইট
সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পর্ন সাইট পুরোপুরি বন্ধ হয়নি ৷
পর্ন সাইটের প্রাচুর্য এবং ভিডিয়োর অশ্লীলতা যুব সমাজকে আকর্ষণ করে এবং তারা কার্যত নীল ছবি এবং পর্ন সাইটের ক্রীতদাসে পরিণত হয়ে পড়ে ৷
হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা অশ্লীল ভিডিয়ো এবং পর্ন ভিডিয়ো বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয় ৷
কখনও কখনও চ্যাট, কখন প্রেম নিবেদন, কখনও আবার পার্টির নাম করে যুবকরা মেয়েদের বিরক্ত করে ৷ আবার কখনও লরি চালক-খালাসি কোনও মহিলার একাকিত্বের সুযোগ নিয়ে তার উপর যৌন নির্যাতন চালায়, যেমন দিশার ঘটনা ৷
নীল ছবির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যুবক-তরুণরা অল্প বয়সের মেয়েদের গোপনে ছবি তোলে লুকিয়ে রাখা ক্যামেরার মাধ্যমে ৷ কখনও স্নানের ছবি, কখনও পোশাক পরিবর্তনের ছবি ৷ এই সব ছবি দেখিয়ে পরবর্তী সময় যৌন নির্যাতন চালায় ৷
নীল ছবি এবং নিষিদ্ধ ভিডিয়ো যুব সমাজের উপর খারাপ প্রভাব তৈরি করছে, এবং মহিলাদের প্রতি তাদের কু-মানসিকতার জন্ম দিচ্ছে ৷