দেবভূমি দ্বারকা (গুজরাত) , ১৯ ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019 - এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে দেশজুড়ে । এরই মধ্যে এক পাকিস্তানি মহিলাকে নাগরিকত্ব দিল গুজরাত সরকার । নাগরিকত্ব আইন 1955-র ভিত্তিতেই হাসিনা বেন ভারতের নাগরিকত্ব পেলেন ।
হাসিনা বেনের জন্ম আদতে গুজরাতের ভনবাদ তালুকায় । সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা । পরে নিকাহ সূত্রে তিনি 1999 সালে পাকিস্তানে চলে যান । তারপর থেকে এতদিন সেখানেই ছিলেন । কিন্তু শওহরের মৃত্যুর পর হাসিনা ভারতে ফিরে আসেন । দুই বছর আগে তিনি ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন । 18 ডিসেম্বর তাঁকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় ।
11 ডিসেম্বর পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019 । লোকসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পর থেকেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয় । প্রথমে অসম ও পরে দেশের অন্য রাজ্যগুলিতেও শুরু হয় বিক্ষোভ । বিরোধীরা দাবি করেন, এই সংশোধনী ধর্মের ভিত্তিতে হয়েছে যা সংবিধানের 14 নম্বর ধারার বিরুদ্ধে । আজও বিক্ষোভ হয়েছে হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, উত্তরপ্রদেশ সহ দেশের একাধিক জায়গায় । গত রবিবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া এলাকায় বিক্ষোভের পর দিল্লির অন্যান্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লির উত্তর-পূর্ব ও লালকেল্লা এলাকায় 144 ধারা জারি হয়েছে । লখনউর হাসানগঞ্জে গাড়ি ও বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা । আহমেদাবাদে প্রতিবাদ মিছিলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ । উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে সরকারি বাসে আগুন ধরায় বিক্ষুব্ধ জনতা । CPM-র প্রকাশ কারাত, বৃন্দা কারাত, সীতারাম ইয়েচুরিকে আটক করেছে পুলিশ ।
আরও পড়ুন : দিল্লিতে 144 ধারা উপেক্ষা করে জমায়েত, উত্তরপ্রদেশে বাসে আগুন
এই পরিস্থিতিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019 গুজরাতে কার্যকরি হওয়ার আগেই সেই রাজ্যের সরকার নাগরিকত্ব আইন 1955 মেনে নাগরিকত্ব দিল হাসিনা বেনকে । এই প্রসঙ্গে দ্বারকার জেলাশাসক নরেন্দ্র কুমার মীনা টুইট করে লেখেন , 'হাসিনা বেনের শওহর মারা যাওয়ার পর তিনি পাকিস্তান থেকে ফিরে আসেন ও নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন । ভারত সরকার তাঁর আবেদন গ্রহণ করে । '
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব আইন 1955 অনুযায়ী, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ভারত সরকার তার বিবেচনা অনুযায়ী অন্য রাষ্ট্রের বাসিন্দাদের আবেদনের ভিত্তিতে এদেশের নাগরিকত্ব দেয় ।