পালঘর (মহারাষ্ট্র), 24 এপ্রিল: লকডাউনের মধ্যেই রবিবার মনোর হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন । কিন্তু শরীরে রক্তের ঘাটতি হয়েছিল । অসুস্থ হয়ে পড়েন । স্বামীকে বলা হয় দ্রুত রক্তের জোগাড় করতে । কয়েকদিন পর থানের একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওই মহিলাকে । এদিকে লকডাউনের মধ্যে গাড়ি মেলাও দুষ্কর । কোনওরকমে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স করে থানের হাসপাতালে মহিলাকে নিয়ে যান স্বামী । কিন্তু এখানেই ঝক্কির শেষ নয় । বলা যেতে পারে শুরু । O নেগেটিভ রক্ত জোগাড় করতে বলা হয় বলা হয় ওই হাসপাতালের তরফে । কিন্তু ওই শহরে কিছুই না চেনার কারণে রক্ত জোগাড় করতে পারেননি স্বামী । অগত্যা আবার পালঘর ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দম্পতি । এখান থেকেই ঝক্কি হয় দ্বিগুণ । লকডাউনের মধ্যে গাড়ি না পেয়ে অগত্যা সদ্যোজাতকে নিয়ে অসুস্থ শরীরেই সাত কিলোমিটার পথ হাঁটেন ওই মহিলা ।
রসিদা খাতুন নামে ওই মহিলার বাড়ি পালঘরের তামসাই গ্রামে । মনোর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল তাঁকে । সেখানে সন্তানের জন্ম দেন তিনি । এদিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রক্তের ঘাটতি হওয়ায় তাঁকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান সেখানকার ডাক্তররা । এদিকে মহিলার রক্তের গ্রুপ O নেগেভিভ । সহজে মেলে না এই গ্রুপের রক্ত । থানের হাসাপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় তাঁকে । অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর অ্যাম্বুলেন্স মেলে । সেই অ্যাম্বুলেন্সে করে থানে জেনারেল হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই মহিলাকে ।
কিন্ত ফেরার সময় আর কোনও গাড়ি পাননি । আর কোনও উপায় না দেখে অগত্যা হেঁটে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা । এদিকে গ্রীষ্মের প্রখর রোদ । খটখটে রোদের মধ্যে রসিদা কোলে সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে এবং সাদ্দাম হাতে জিনিসপত্রের ব্যাগ হাতে রওনা দেন । প্রায় আট কিলোমিটার পথ এভাবে পাড়ি দেওয়ার পর একটি অটো রিকশা মেলে । বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে । এরপর পুলিশের নির্দেশেই অটোটি তাঁদের পালঘর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসে । অটো চালক তাঁদের পালাগড়ের মনোর মাস্তা নাকা পর্যন্ত ছেড়ে দেন । তামসাই পৌঁছানোর জন্য বাকি তিন কিলোমিটার পথ তাঁদের হেঁটেই পাড়ি দিতে হয় । এরপর বাড়ির মালিকের সহায়তায় রসিদাকে পালঘরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় । রক্ত দানের জন্য স্থানীয়দের অনুরোধ করা হয় । কয়েকজন এগিয়ে আসেন । শেষপর্যন্ত O নেগেটিভ রক্ত মেলে । হাসপাতাল সূত্রে খবর, রসিদা এখন সুস্থ আছেন ।