ETV Bharat / bharat

নির্ভয়া ঘটনার 7 বছর : ধর্ষণের মতো অপরাধে ভারতের অবস্থান কোথায় ?

আজ নির্ভয়া ঘটনার 7 বছর ৷ দিল্লির মুনিরকায় ঠিক সাত বছর আগের 16 ডিসেম্বরের যে গণধর্ষণের ঘটনায় শিউরে উঠেছিল সারা দেশ ৷ এখনও ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনা । তাহলে বর্তমানে কী অবস্থান ভারতের ? উন্নাও-সেঙ্গার মামলা বা দিল্লি-নির্ভয়া কাণ্ড বা যে কোনও ঘটনার রায় প্রকাশের মুহূর্তে এই প্রশ্নটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক । একই সঙ্গে প্রশ্ন, 2020 সালের প্রবেশের পরও কি ভারতে একই ছবি দেখা যাবে, আইনে কোনও বদল কি আনা হবে ? প্রতিবেদনটি লিখেছেন সি উদয় ভাস্কর ।

rape
ছবি
author img

By

Published : Dec 16, 2019, 10:37 AM IST

দিল্লি, 16 ডিসেম্বর : ফের গণধর্ষণ । ফের উত্তরপ্রদেশ । শনিবার ( 14 ডিসেম্বর) উত্তরপ্রদেশের ফতেপুরে একটি 18 বছরের মেয়েকে গণধর্ষণের পর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা । এই প্রতিবেদনটি যখন লিখছি, তখন নির্দোষ মেয়েটি কানপুরের এক হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে । পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিদিন আমাদের দেশে কমবেশি 100 টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে, উত্তরপ্রদেশের ঘটনাটি এর মধ্যে একটি । আরও একটু বললে, উত্তরপ্রদেশের ঘটনাটি সাত বছর আগে এমনই এক ডিসেম্বর মাসের 16 তারিখের ঠিক দু'দিন আগের ঘটনা । 2012 সালের 16 ডিসেম্বর, সাত বছর কেটে গেল দিল্লির নির্ভয়া গণধর্ষণের ।

সেই নৃশংস ঘটনায় অভিযুক্তদের চূড়ান্ত শাস্তির অপেক্ষায় নির্যাতিতার মা । দোষীদের চূড়ান্ত শাস্তি হবে, তাদের ঝোলানো হবে ফাঁসিতে ? আশা করা যায়, আগামী বুধবারের ( 18 ডিসেম্বর) মধ্যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে, জানা যাবে ফাঁসি হলে কবে হবে ? কারণ, মঙ্গলবার চার অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের রিভিউ পিটিশনের রায় শোনাবে শীর্ষ আদালত । পাশাপাশি আজ ( 16 ডিসেম্বর ) আরও একটি ঘটনা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে । আজই উন্নাও গণধর্ষণের ঘটনায় রায় ঘোষণা করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট । যে ঘটনায় জড়িত BJP-র প্রাক্তন বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার এবং তার অনুগামীরা । 2017 সালের জুন মাসে কুলদীপ এবং তার দলবল এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ । উন্নাওয়ের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের একটি রাজনৈতিক পরিচয় আছে । আর সে জন্যই বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে একাধিক বিতর্ক ।

প্রথমে নির্যাতিতা মেয়েটির এবং তার পরিবারের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে স্থানীয় পুলিশ, আদালতে সাক্ষী দিতে যাওয়ার সময় গাড়ি 'দুর্ঘটনা'-র মধ্যে পড়ে নির্যাতিতা মেয়েটি, তার আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যরা । পাশাপাশি, গত মাসে দেশের নানা প্রান্ত ধর্ষণ এবং পুড়িয়ে দেওয়ার একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে । এই ঘটনাগুলিই ধর্ষণের ভয়াবহতাকেই ফের একবার প্রমাণ করছে, একই সঙ্গে দাবি করছে, ধর্ষণের মতো ঘটনাকে বন্ধ করার ক্ষেত্রে কঠোর আইন এবং শাস্তির ।

ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর রিপোর্টও ধর্ষণের ভয়াবহতার দিকে আঙুল তুলছে । 2017 সালে 33,885টি ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে । যার অর্থ প্রতিদিন 93 জন মহিলা ধর্ষিত হচ্ছেন, যার প্রতি তিন জনের মধ্যে একটি নাবালিকা । এছাড়াও 88 হাজার মহিলা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন, যার অর্থ প্রতিদিন 240 জন করে মহিলা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন । কেবল মাত্র গত মাসেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে একাধিক ভয়ঙ্কর ধর্ষণ-খুনের ঘটনা সামনে এসেছে । এর মধ্যেই রয়েছে হায়দরাবাদ-তেলঙ্গানার মহিলা চিকিত্সককে গণধর্ষণের পর খুনের ঘটনাও । ফের একবার প্রকাশ্যে এসেছে উন্নাও । আদালতের বিচার বিচার পর্ব চলার সময়ই এক নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে খুন করার ঘটনা ঘটেছে । আবার পটনায় 20 বছরের এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে... নৃশংসতা, অমানবিকতা, ঘৃণার এই তালিকা ক্রমবর্ধমান ।

বিচারপর্বে সামান্য সময় লাগলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে । দাবি উঠছে দ্রুত বিচারের । বিচার ব্যবস্থার গাফিলতি হিসেবে বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে । যদি আমরা হায়দরাবাদের মহিলা চিকিত্সকের ঘটনার দিকে নজর দিই, তাহলে দেখতে পাব 'দ্রুত বিচারের' উদাহরণ । পুলিশের সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে চার অভিযুক্তের । বিচারের এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ বেশ কয়েকজন সাংসদ, এঁদের মধ্যে রয়েছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীও । কিন্তু, আইন রক্ষকদের এহেন পদক্ষেপ কি সমর্থনযোগ্য ? এখানে আইন হাতে তুলে নেওয়ার এক ভয়ঙ্কর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে । কেবল মাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে গণপিটুনির ঘটনা যে ভাবে কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে, তার থেকে এটাকে কোনও ভাবেই পৃথক করা যাবে না । পুলিশ যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে । আইন

শৃঙ্খলা রক্ষা কোনওভাবেই সম্ভব হবে না । ভেঙে পড়বে বিচার প্রক্রিয়া । বিষয়টিতে অন্যভাবে নজর দেওয়া যাক । পরিসংখ্যান বলছে, গত প্রায় 50 বছরের পরিসংখ্যানের দিক নজর দিলে দেখা যাবে, প্রায় 33 মিলিয়নের বেশি মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে । এটা কোনও ভাবেই একটা আদর্শ গণতন্ত্রের পক্ষে ভালো উদাহরণ হতে পারে না । বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের কাছে এই দৃষ্টান্ত নিসন্দেহে বড় ধাক্কা । অতি শীঘ্র, দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা উচিত । আইন প্রণেতারা গণতন্ত্রের একটা বড়-গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছেন । জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে তাঁরা আইনসভায় পা রাখেন । সংবিধানের ছাতার তলায় আইন রচনার গুরু দায়িত্ব সামলান তাঁরা । এটা বাস্তব যে, ধর্ষণের ঘটনা বিশ্বজুড়ে ভয়ঙ্কর ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে । একে কোনও ভাবেই রাজনৈতিক রং বা পৌরুষত্ব দিয়ে নয়, মানবিকতার দিক থেকে বিষয়টিকে বিচার করা দরকার ।

গোটা বিশ্বের মতো ভারতেও মি-টু সমস্যা মারাত্মক আকার নিয়েছে । ঘটনাক্রম এবং নৃশংসতা প্রমাণ করে উন্নাও-সেঙ্গার যোগসূত্র ( যে ঘটনার রায় আজ শোনাতে পারে আদালত ) তুলে ধরে এর অন্ধকারময় দিকটা । ADR (Association for Democratic Reform) নামক একটি অসরকারি সংগঠন অনুসন্ধান চালিয়েছিল বিভিন্ন রাজ্যের বিধায়ক এবং সাংসদের উপর । 2009 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত চালানো এই পরিসংখ্যানের ফলে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা যতটা চমকে দেওয়ার মতো, ঠিক ততটাই মারাত্মক । দেখা গেছে, বিভিন্ন দুর্নীতি-অপরাধের মামলা ঝুলছে এমন সাংসদের সংখ্যা এই সময় ( 2009-2019)-এর কয়েক হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে । নারী নির্যাতনের অভিযোগ-মামলা রয়েছে এমন ব্যক্তিরা লোকসভাকে তাঁদের আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছেন । এটা ভারতীয় গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে মোটেই সুখকর নয় ।

গণতন্ত্রের রক্ষকরা যখন নিজেরাই এমন ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছেন, তখন পরিস্থিতি কতটা খারাপ হতে পারে তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট । ADR -রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, নারীঘটিত মামলা রয়েছে যে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে, তাদের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে BJP, এর পরে রয়েছে কংগ্রেস এবং তারপর YSRCP । এই সব দলের বিধায়ক-সাংসদদের বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি মামলা ঝুলে রয়েছে ।

ভারতের মতো দেশে ধর্ষকদের বিচার বা পরিচয়ের ক্ষেত্রে কেনও রাজনীতি রক্ষা কবচ হবে ? উন্নাও-সেঙ্গার মামলা বা দিল্লি-নির্ভয়া কাণ্ড বা যে কোনও ঘটনার রায় প্রকাশের মুহূর্তে এই প্রশ্নটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক । একই সঙ্গে প্রশ্ন, 2020 সালের প্রবেশের পরও কি ভারতে একই ছবি দেখা যাবে, আইনে কোনও বদল কি আনা হবে ?

দিল্লি, 16 ডিসেম্বর : ফের গণধর্ষণ । ফের উত্তরপ্রদেশ । শনিবার ( 14 ডিসেম্বর) উত্তরপ্রদেশের ফতেপুরে একটি 18 বছরের মেয়েকে গণধর্ষণের পর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা । এই প্রতিবেদনটি যখন লিখছি, তখন নির্দোষ মেয়েটি কানপুরের এক হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে । পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিদিন আমাদের দেশে কমবেশি 100 টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে, উত্তরপ্রদেশের ঘটনাটি এর মধ্যে একটি । আরও একটু বললে, উত্তরপ্রদেশের ঘটনাটি সাত বছর আগে এমনই এক ডিসেম্বর মাসের 16 তারিখের ঠিক দু'দিন আগের ঘটনা । 2012 সালের 16 ডিসেম্বর, সাত বছর কেটে গেল দিল্লির নির্ভয়া গণধর্ষণের ।

সেই নৃশংস ঘটনায় অভিযুক্তদের চূড়ান্ত শাস্তির অপেক্ষায় নির্যাতিতার মা । দোষীদের চূড়ান্ত শাস্তি হবে, তাদের ঝোলানো হবে ফাঁসিতে ? আশা করা যায়, আগামী বুধবারের ( 18 ডিসেম্বর) মধ্যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে, জানা যাবে ফাঁসি হলে কবে হবে ? কারণ, মঙ্গলবার চার অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের রিভিউ পিটিশনের রায় শোনাবে শীর্ষ আদালত । পাশাপাশি আজ ( 16 ডিসেম্বর ) আরও একটি ঘটনা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে । আজই উন্নাও গণধর্ষণের ঘটনায় রায় ঘোষণা করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট । যে ঘটনায় জড়িত BJP-র প্রাক্তন বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার এবং তার অনুগামীরা । 2017 সালের জুন মাসে কুলদীপ এবং তার দলবল এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ । উন্নাওয়ের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের একটি রাজনৈতিক পরিচয় আছে । আর সে জন্যই বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে একাধিক বিতর্ক ।

প্রথমে নির্যাতিতা মেয়েটির এবং তার পরিবারের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে স্থানীয় পুলিশ, আদালতে সাক্ষী দিতে যাওয়ার সময় গাড়ি 'দুর্ঘটনা'-র মধ্যে পড়ে নির্যাতিতা মেয়েটি, তার আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যরা । পাশাপাশি, গত মাসে দেশের নানা প্রান্ত ধর্ষণ এবং পুড়িয়ে দেওয়ার একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে । এই ঘটনাগুলিই ধর্ষণের ভয়াবহতাকেই ফের একবার প্রমাণ করছে, একই সঙ্গে দাবি করছে, ধর্ষণের মতো ঘটনাকে বন্ধ করার ক্ষেত্রে কঠোর আইন এবং শাস্তির ।

ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর রিপোর্টও ধর্ষণের ভয়াবহতার দিকে আঙুল তুলছে । 2017 সালে 33,885টি ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে । যার অর্থ প্রতিদিন 93 জন মহিলা ধর্ষিত হচ্ছেন, যার প্রতি তিন জনের মধ্যে একটি নাবালিকা । এছাড়াও 88 হাজার মহিলা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন, যার অর্থ প্রতিদিন 240 জন করে মহিলা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন । কেবল মাত্র গত মাসেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে একাধিক ভয়ঙ্কর ধর্ষণ-খুনের ঘটনা সামনে এসেছে । এর মধ্যেই রয়েছে হায়দরাবাদ-তেলঙ্গানার মহিলা চিকিত্সককে গণধর্ষণের পর খুনের ঘটনাও । ফের একবার প্রকাশ্যে এসেছে উন্নাও । আদালতের বিচার বিচার পর্ব চলার সময়ই এক নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে খুন করার ঘটনা ঘটেছে । আবার পটনায় 20 বছরের এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে... নৃশংসতা, অমানবিকতা, ঘৃণার এই তালিকা ক্রমবর্ধমান ।

বিচারপর্বে সামান্য সময় লাগলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে । দাবি উঠছে দ্রুত বিচারের । বিচার ব্যবস্থার গাফিলতি হিসেবে বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে । যদি আমরা হায়দরাবাদের মহিলা চিকিত্সকের ঘটনার দিকে নজর দিই, তাহলে দেখতে পাব 'দ্রুত বিচারের' উদাহরণ । পুলিশের সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে চার অভিযুক্তের । বিচারের এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ বেশ কয়েকজন সাংসদ, এঁদের মধ্যে রয়েছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীও । কিন্তু, আইন রক্ষকদের এহেন পদক্ষেপ কি সমর্থনযোগ্য ? এখানে আইন হাতে তুলে নেওয়ার এক ভয়ঙ্কর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে । কেবল মাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে গণপিটুনির ঘটনা যে ভাবে কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে, তার থেকে এটাকে কোনও ভাবেই পৃথক করা যাবে না । পুলিশ যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে । আইন

শৃঙ্খলা রক্ষা কোনওভাবেই সম্ভব হবে না । ভেঙে পড়বে বিচার প্রক্রিয়া । বিষয়টিতে অন্যভাবে নজর দেওয়া যাক । পরিসংখ্যান বলছে, গত প্রায় 50 বছরের পরিসংখ্যানের দিক নজর দিলে দেখা যাবে, প্রায় 33 মিলিয়নের বেশি মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে । এটা কোনও ভাবেই একটা আদর্শ গণতন্ত্রের পক্ষে ভালো উদাহরণ হতে পারে না । বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের কাছে এই দৃষ্টান্ত নিসন্দেহে বড় ধাক্কা । অতি শীঘ্র, দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা উচিত । আইন প্রণেতারা গণতন্ত্রের একটা বড়-গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছেন । জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে তাঁরা আইনসভায় পা রাখেন । সংবিধানের ছাতার তলায় আইন রচনার গুরু দায়িত্ব সামলান তাঁরা । এটা বাস্তব যে, ধর্ষণের ঘটনা বিশ্বজুড়ে ভয়ঙ্কর ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে । একে কোনও ভাবেই রাজনৈতিক রং বা পৌরুষত্ব দিয়ে নয়, মানবিকতার দিক থেকে বিষয়টিকে বিচার করা দরকার ।

গোটা বিশ্বের মতো ভারতেও মি-টু সমস্যা মারাত্মক আকার নিয়েছে । ঘটনাক্রম এবং নৃশংসতা প্রমাণ করে উন্নাও-সেঙ্গার যোগসূত্র ( যে ঘটনার রায় আজ শোনাতে পারে আদালত ) তুলে ধরে এর অন্ধকারময় দিকটা । ADR (Association for Democratic Reform) নামক একটি অসরকারি সংগঠন অনুসন্ধান চালিয়েছিল বিভিন্ন রাজ্যের বিধায়ক এবং সাংসদের উপর । 2009 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত চালানো এই পরিসংখ্যানের ফলে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা যতটা চমকে দেওয়ার মতো, ঠিক ততটাই মারাত্মক । দেখা গেছে, বিভিন্ন দুর্নীতি-অপরাধের মামলা ঝুলছে এমন সাংসদের সংখ্যা এই সময় ( 2009-2019)-এর কয়েক হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে । নারী নির্যাতনের অভিযোগ-মামলা রয়েছে এমন ব্যক্তিরা লোকসভাকে তাঁদের আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছেন । এটা ভারতীয় গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে মোটেই সুখকর নয় ।

গণতন্ত্রের রক্ষকরা যখন নিজেরাই এমন ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছেন, তখন পরিস্থিতি কতটা খারাপ হতে পারে তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট । ADR -রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, নারীঘটিত মামলা রয়েছে যে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে, তাদের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে BJP, এর পরে রয়েছে কংগ্রেস এবং তারপর YSRCP । এই সব দলের বিধায়ক-সাংসদদের বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি মামলা ঝুলে রয়েছে ।

ভারতের মতো দেশে ধর্ষকদের বিচার বা পরিচয়ের ক্ষেত্রে কেনও রাজনীতি রক্ষা কবচ হবে ? উন্নাও-সেঙ্গার মামলা বা দিল্লি-নির্ভয়া কাণ্ড বা যে কোনও ঘটনার রায় প্রকাশের মুহূর্তে এই প্রশ্নটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক । একই সঙ্গে প্রশ্ন, 2020 সালের প্রবেশের পরও কি ভারতে একই ছবি দেখা যাবে, আইনে কোনও বদল কি আনা হবে ?

Chennai, Dec 16 (ANI): India suffered defeat against West Indies in the 1st One Day International in Chennai. Rishabh Pant's knock of 71 (69) went in vain as West Indies chased down India's total with help of two centuries by Shimron Hetmyer and Shai Hope. Rishabh Pant said that he is trying to improve every day to help team India.
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.