ETV Bharat / bharat

একাই গঙ্গা পরিষ্কার করেন মুর্শিদাবাদের গৌতম বিশ্বাস

author img

By

Published : Jan 29, 2020, 7:53 AM IST

Updated : Jan 29, 2020, 9:39 AM IST

নৌকায় চেপে গঙ্গার জলে ভেসে যাওয়া প্লাস্টিক বোতলগুলি তুলে জল পরিষ্কার রাখায় একমাত্র লক্ষ্য মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা গৌতম বিশ্বাসের ৷

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

বহরমপুর, 29 জানুয়ারি : মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা গৌতমচন্দ্র বিশ্বাস ৷ একাই বহু বছর ধরে গঙ্গা পরিষ্কার করে চলেছেন ৷ একটি ছোটো নৌকায় চেপে গঙ্গার জলে ভেসে যাওয়া প্লাস্টিক বোতলগুলি তুলে জল পরিষ্কার রাখায় তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ৷

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে নৌকা ভরতি করে প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে বাড়ি ফেরেন গৌতমবাবু ৷ তার মধ্যে থাকে একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক ব্যাগ থেকে শুরু করে প্লাস্টিক বোতল ৷ সেগুলি পরেরদিন সকালে বিক্রি করে দেন ৷

এখন প্রশ্ন একটাই ৷ যে কাজ করে তিনি কোনও টাকা পান না, সে কাজ করেন কেন ? গৌতমবাবু জানান, "এটা খারাপ দেখায় ৷ নদীর উপর এত প্লাস্টিক বর্জ্য বয়ে চলেছে ৷ প্রতিদিন ভাগীরথীতে দূষণের পরিমাণ বেড়ে চলেছে ৷ আমি শুধু সেগুলিকে জল থেকে তুলে নদীকে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছি ৷"

কেন্দ্রীয় সরকার অনেক দিন ধরেই প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করে চলেছে ৷ গান্ধিজির স্বচ্ছ ভারতের স্বপ্নকে পুরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সবাইকে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের আবেদন করে চলেছেন ৷

গৌতম বিশ্বাস একজন মৎস্যজীবী ছিলেন ৷ ভাগীরথীর কাছেই কাজ করতেন তিনি ৷ পাঁচ বছর আগে মাছ ধরতে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করেন, নদীর উপর প্লাস্টিক বোতল ভেসে বেড়াচ্ছে ৷ যা জলকে দূষিত করছে ৷ সিদ্ধান্ত নিতে তিনি দু'বার ভাবেননি ৷ তারপর থেকেই গঙ্গাকে পরিষ্কার রাখার লক্ষ্য নিয়েছেন ৷

নৌকায় চেপে একাই গঙ্গা পরিষ্কার করেন গৌতমবাবু

গৌতমবাবু জানান, "বয়স বাড়ায় মাছ ধরার কাজ ছাড়তে হয়েছে ৷ কিন্তু, আমি শুধু বসে বসে নদীর এই অবস্থা দেখতে পারব না ৷ প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে মাছগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি ৷"

এই কাজের প্রতি গৌতম বিশ্বাসের দায়বদ্ধতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্থানীয়রা ৷ অসীম দাস বলেন, "শরীরে এত ক্ষমতা না থাকলেও তিনি প্রতিদিন নদী থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য তুলে নিয়ে আসেন ৷ আমি অনেকদিন ধরে তাঁকে এই কাজ করতে দেখছি ৷ তিনি এই কাজ করে আমাদের সবাইকে সাহায্য করছেন ৷"

প্রতিবেশী মীরা বিশ্বাস বলেন, নদী থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য তুলে এনে সেগুলি বিক্রি করে এমন কিছু রোজগার হয় না গৌতমবাবুর ৷ "তাঁর কাছে এটা খুবই কঠিন কাজ ৷ শীতের সময় ঠান্ডা বাড়লে তাঁর কষ্টও বাড়ে ৷ প্রশাসনের তরফে তাঁকে কোনও সাহায্য করলে খুবই ভালো হত ৷"

স্থানীয় ক্লাব বা সংস্থাগুলি তাঁকে এই কাজের জন্য সম্মান জানালেও তেমন কোনও উপকার হয়নি ৷ SDPO (বহরমপুর) দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই মানুষটি যা করছে, তা শুধু উদাহরণ দেওয়ার মতো নয় ৷ অন্যদের অনুপ্রাণিতও করছে ৷"

বহরমপুর, 29 জানুয়ারি : মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা গৌতমচন্দ্র বিশ্বাস ৷ একাই বহু বছর ধরে গঙ্গা পরিষ্কার করে চলেছেন ৷ একটি ছোটো নৌকায় চেপে গঙ্গার জলে ভেসে যাওয়া প্লাস্টিক বোতলগুলি তুলে জল পরিষ্কার রাখায় তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ৷

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে নৌকা ভরতি করে প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে বাড়ি ফেরেন গৌতমবাবু ৷ তার মধ্যে থাকে একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক ব্যাগ থেকে শুরু করে প্লাস্টিক বোতল ৷ সেগুলি পরেরদিন সকালে বিক্রি করে দেন ৷

এখন প্রশ্ন একটাই ৷ যে কাজ করে তিনি কোনও টাকা পান না, সে কাজ করেন কেন ? গৌতমবাবু জানান, "এটা খারাপ দেখায় ৷ নদীর উপর এত প্লাস্টিক বর্জ্য বয়ে চলেছে ৷ প্রতিদিন ভাগীরথীতে দূষণের পরিমাণ বেড়ে চলেছে ৷ আমি শুধু সেগুলিকে জল থেকে তুলে নদীকে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছি ৷"

কেন্দ্রীয় সরকার অনেক দিন ধরেই প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করে চলেছে ৷ গান্ধিজির স্বচ্ছ ভারতের স্বপ্নকে পুরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সবাইকে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের আবেদন করে চলেছেন ৷

গৌতম বিশ্বাস একজন মৎস্যজীবী ছিলেন ৷ ভাগীরথীর কাছেই কাজ করতেন তিনি ৷ পাঁচ বছর আগে মাছ ধরতে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করেন, নদীর উপর প্লাস্টিক বোতল ভেসে বেড়াচ্ছে ৷ যা জলকে দূষিত করছে ৷ সিদ্ধান্ত নিতে তিনি দু'বার ভাবেননি ৷ তারপর থেকেই গঙ্গাকে পরিষ্কার রাখার লক্ষ্য নিয়েছেন ৷

নৌকায় চেপে একাই গঙ্গা পরিষ্কার করেন গৌতমবাবু

গৌতমবাবু জানান, "বয়স বাড়ায় মাছ ধরার কাজ ছাড়তে হয়েছে ৷ কিন্তু, আমি শুধু বসে বসে নদীর এই অবস্থা দেখতে পারব না ৷ প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে মাছগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি ৷"

এই কাজের প্রতি গৌতম বিশ্বাসের দায়বদ্ধতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্থানীয়রা ৷ অসীম দাস বলেন, "শরীরে এত ক্ষমতা না থাকলেও তিনি প্রতিদিন নদী থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য তুলে নিয়ে আসেন ৷ আমি অনেকদিন ধরে তাঁকে এই কাজ করতে দেখছি ৷ তিনি এই কাজ করে আমাদের সবাইকে সাহায্য করছেন ৷"

প্রতিবেশী মীরা বিশ্বাস বলেন, নদী থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য তুলে এনে সেগুলি বিক্রি করে এমন কিছু রোজগার হয় না গৌতমবাবুর ৷ "তাঁর কাছে এটা খুবই কঠিন কাজ ৷ শীতের সময় ঠান্ডা বাড়লে তাঁর কষ্টও বাড়ে ৷ প্রশাসনের তরফে তাঁকে কোনও সাহায্য করলে খুবই ভালো হত ৷"

স্থানীয় ক্লাব বা সংস্থাগুলি তাঁকে এই কাজের জন্য সম্মান জানালেও তেমন কোনও উপকার হয়নি ৷ SDPO (বহরমপুর) দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই মানুষটি যা করছে, তা শুধু উদাহরণ দেওয়ার মতো নয় ৷ অন্যদের অনুপ্রাণিতও করছে ৷"

Intro:গঙ্গা নদীতে স্রোতে ভেসে যাওয়া প্লাস্টিক পরিষ্কার করেন বহরমপুর এর সাধারন এক ব্যক্তি।Body:স্বচ্ছ ভারত অভিযান নিয়ে যেখানে কেন্দ্র থেকে রাজ্য সরকার নানান রকম উদ্যোগ নিচ্ছেন সেখানে এমন বহু মানুষ আছেন যারা সেই স্বচ্ছ ভারত অভিযান নিয়ে অতটা ওয়াকিবহাল নন। তবে এমন বহু মানুষ আছেন যারা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে খুব পছন্দ করেন। এমনই এক ব্যক্তি যিনি বহরমপুরের গান্ধী কলোনির বাসিন্দা। না ওনার ঘরে টিভি রয়েছে না উনি পেপার পড়েন। গান্ধী কলোনির একচিলতে ছাউনিতে তিনি এবং তার ছেলে বাস করেন। গান্ধী কলোনীর এই বাসিন্দাটির নাম গৌতম চন্দ্র বিশ্বাস। গঙ্গা নদীতে ডিঙি নিয়ে মাছ ধরতেন তিনি। তবে মাছ ধরার কাজ তিন বছর আগে ছেড়ে দিয়েছেন। মাছ ধরতে ধরতেই ওনার হঠাৎই এই শখটি জন্মালো। তিনি সেই ডিঙি নিয়ে মাছধরা ছাড়াও গঙ্গা নদীতে যে সমস্ত প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের বিভিন্ন জিনিসপত্র যেগুলো ফেলে দিয়ে যায় সকলে সেগুলি তিনি পাড় থেকে বা ভেসে যাওয়া অবস্থায় তোলেন। দিনে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা উনি এই ভাবেই নদীর বুকে ঘুরে ঘুরে প্লাস্টিক বস্তুগুলিকে সংগ্রহ করেন। সেই সমস্ত কুড়িয়ে আনা প্লাস্টিকের বিভিন্ন বস্তু একজোট করে বাড়ি নিয়ে আসেন। তারপর সময়মতো সেগুলিকে বাজারে বিক্রি করে যে টাকাটা দিয়ে নিজের সংসার চালান। এরকম উদ্যোগ কেনই বা শখে পরিণত হলো জানতে চাইলে উনি বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকতে ভালবাসি যদি সেই জায়গায় চোখের সামনে এতোবড় নদীকে অপরিচ্ছন্ন দেখি তাকে ভালো লাগে না। আর তাই মাছ ধরতে ধরতেই এই শখটি জেগে ওঠে। গত পাঁচ বছর থেকে তাই এই কাজ করে চলেছি। স্বচ্ছতা বজায় রাখার লক্ষ্যে তিনি এ কাজ শুরু করলেও হঠাৎ একদিন নিজের কিছু সমস্যার কারণে মাছধরা ছেড়ে বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে ফাইফরমাশির কাজ শুরু করেন। ওনার সংসার বলতে উনি নিজে এবং ওনার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে গৌড় মন্ডল। এবছর প্রথম শ্রেণীর পরীক্ষা দিয়েছে সে। গৌতম বাবু কথার মাঝে এ কথাও বলেন, এসব সরকারি প্রকল্প ওনার মাথায় ঢোকে না। তবে তিনি পছন্দ করেন স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আর নিজের সময়টাকে ওই নদীর বুকে বেশ অতিবাহিত করতে। এবং তাতে তিনি যথেষ্টই খুশি। ওনার এই কাজের কারণে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে স্মারকলিপি ও পেয়েছেন। যদিও সরকারি সাহায্যের কোনরকম ইচ্ছে প্রকাশ করেননি। তবে এই বিষয়টি নিয়ে সদর মহকুমা শাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় যথেষ্টই সাধুবাদ জানিয়েছেন। এবং এও জানিয়েছেন আগামী দিনে যত সত্ত্বর সম্ভব বহরমপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে চিন্তা ভাবনা করে পরিকল্পনামাফিক গৌতম চন্দ্র বিশ্বাসের জন্য কি করবেন।Conclusion:তবে এই বিষয়টি নিয়ে সদর মহকুমা শাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় যথেষ্টই সাধুবাদ জানিয়েছেন। এবং এও জানিয়েছেন আগামী দিনে যত সত্ত্বর সম্ভব বহরমপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে চিন্তা ভাবনা করে পরিকল্পনামাফিক গৌতম চন্দ্র বিশ্বাসের জন্য কি করবেন।
Last Updated : Jan 29, 2020, 9:39 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.