মুম্বই, 27 জুলাই : শুক্রবার রাতভর প্রবল বর্ষণে প্রায় জলের তলায় বাণিজ্যনগরী । রাতভর এত জোরে বৃষ্টি হয়েছে যে কয়েকশ যাত্রীসহ বদলাপুর ও ওয়াঙ্গানির মধ্যে একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়তে হয় মু্ম্বই-কোলাপুর মহালক্ষ্মী এক্সপ্রেসকে । অবশেষে কপ্টার ও বোটের সাহায্যে উদ্ধার 900 যাত্রী ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, মহালক্ষ্মী এক্সপ্রেস থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, বায়ুসেনা, নৌ সেনা, সেনা ৷
রেললাইনের 2 ফুট উপর দিয়ে বইছিল উল্লাস নদীর স্রোত ৷ জনমানবহীন এলাকায় ওই এক্সপ্রেসে আটকে পড়া যাত্রীদের জল ও খাবার দিতে যান রেল পুলিশ বাহিনীর কর্মীরা । যায় মুম্বই পুলিশ । যাত্রীদের উদ্ধার করতে রওনা হয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) কর্মীরাও । রেল সূত্রে খবর, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর প্রত্যেককেই উদ্ধার করা হয়েছে ৷ যাত্রীদের মধ্যে 9 জন ছিলেন সন্তানসম্ভবা । প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাঁদের কয়েক জনকে পাঠানো হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে । যাত্রীদের একাংশ দাবি করেছেন, প্রায় 15 ঘণ্টা তাঁরা আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করেছেন ৷
যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দূর করতে ট্রেন থেকে নীচে নামতে বারণ করেছিল রেলমন্ত্রক ৷ প্রবল বর্ষণে কিছুই দৃশ্যমান না হওয়ায় বাতিল হয় 11টি বিমান । যে বিমানগুলির মুম্বইয়ে নামার কথা ছিল, সেগুলির গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে । ব্যাহত হয়েছে বেশ কয়েকটি এলাকায় ট্রেন চলাচলও ।
মহালক্ষ্মী এক্সপ্রেসের চাকা আটকে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটে ৷ ফলে ওই লাইনে পর পর সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় একের পর এক এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন । ফলে, ওই এলাকা ও লাগোয়া অঞ্চলগুলিতে প্রায় 12 থেকে 14 ঘণ্টার জন্য সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে ট্রেন চলাচল । গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ । মধ্য রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানান, উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, বদলাপুরে আশ্রয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে তাঁদের জন্য৷
এদিকে, আজও ভারী বৃষ্টি শুরু চলছে মুম্বইয়ে । মুষলধারায় বৃষ্টির জেরে বাণিজ্যনগরীর বিভিন্ন প্রান্ত জলমগ্ন । আবহাওয়া অফিসের তরফে অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে । টানা বৃষ্টির জেরে কল্যাণ এলাকায় একটি বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে ৷ এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন । কয়েকদিন আগেও বৃষ্টিতে জলবন্দী হয়ে পড়েছিল মুম্বই ।