লন্ডন, 23 মার্চ : কোরোনা প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন শহরে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ আদৌও কি তাতে কোরোনার সংক্রমণ ঠেকানো যাবে ? একদমই নয়, বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান ৷ গতকাল তিনি জানান, COVID-19 রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন কোনওভাবেই কার্যকরী হবে না, এই ভাইরাসের পুনরুত্থান সম্ভব ৷ সেকারণে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হওয়া দরকার ৷
একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, "যাঁরা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, তাঁদের খুঁজে বের করা এবং আইসোলেট করা, তাঁদের পরিচিত ও তাঁদের সংযোগ আসা প্রত্যেককে খুঁজে আইসোলেট করতে হবে ৷ লকডাউনের সবথেকে বড় বিপদ হল , যদি আমরা এখনই কোনওরকম শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা গ্রহণ না করি তাহলে এরপর যখন লকডাউন প্রত্যাহার করা হবে, তখন এই ডিজ়িজ় আরও মাথাচারা দিয়ে উঠবে ৷"
ইউরোপ ও অ্যামেরিকার বেশিরভাগ অংশ চিন এবং অন্যান্য এশিয়ার দেশগুলিকে অনুসরণ করছে ৷ কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আনছে ৷ প্রত্যেক মানুষকে বাড়িতে সেলফ কোয়ারানটাইনে থাকার কথা বলা হচ্ছে ৷ স্কুল, পাব এবং রেস্তরাঁ বন্ধ রাখার কথা বলা হচ্ছে ৷ মাইক রায়ান চিন, সিঙ্গাপুর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ টেনে বলেন, " তারা প্রত্যেক সম্ভাব্য ব্যক্তিকে পরীক্ষা করছে এবং ইউরোপকেও সেই রাস্তা অনুসরণের মডেল দিয়েছে ৷ কিন্তু, তা না করে তারা শুধুমাত্র লকডাউন করছে ৷ ফলে এশিয়া নিজেকে এই প্যানডেমিকের এপিসেন্টারে পরিণত করছে ৷ একবার আমরা সংক্রমণটি দমন করতে পারলে, আমাদের ভাইরাসটির পিছনে যেতে হবে । এরপর আমাদের লড়াই ভাইরাসের সাথে ৷ "
বর্তমানে গোটা বিশ্বের মধ্যে কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হল ইট্যালি ৷ UK প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, "সামাজিক যোগাযোগ বন্ধ না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে ৷" ব্রিটিশ আবাসনমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক বলেন, "আগামী সপ্তাহে আক্রান্তের পরিসংখ্যান আরও বাড়বে ৷"
মাইক রায়ান বলেন, "মানুষের আরও বাস্তববাদী হওয়া উচিত ৷ বিশ্বের কয়েকটি জায়গায় ভ্যাকসিন তৈরি হলেও শুধুমাত্র অ্যামেরিকার তৈরি ভ্যাকসিনের মানুষের উপর পরীক্ষা শুরু হয়েছে ৷ তাও সময়সাপেক্ষ ৷ পরীক্ষা সফল হলেও ব্রিটেনে সেই ভ্যাকসিন কবে পাওয়া যাবে তাও মানুষের বোঝা উচিত ৷ ভ্যাকসিনটি সম্পূর্ণ নিরাপদ কি না তা দেখতে হবে ৷ আমাদের কমপক্ষে এক বছর সময় লাগবে ৷ ভ্যাকসিন আসবে, তবে আমাদের এখনই যা করা দরকার তা করা উচিত ।"