ETV Bharat / bharat

কার্গিল যুদ্ধ : পাকিস্তানি সেনার অকথ্য অত্যাচারে শহিদ হন ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া - kargil war

1999 সালে পাকিস্তানের হাত থেকে কার্গিল ছিনিয়ে এনেছিল ভারতীয় সেনা ৷ মাইনাস ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে যুদ্ধ জয় সহজ ছিল না ৷ দেশের মাটি ছিনিয়ে আনতে খোয়াতে হয়েছিল তরতাজা সেনা জওয়ানদের প্রাণ ৷ ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া ও আরও পাঁচ ভারতীয় জওয়ানের উপর অকথ্য অত্যাচার করেছিল পাকিস্তানি সেনা ৷

kargil war
কার্গিল যুদ্ধ
author img

By

Published : Jul 25, 2020, 6:53 PM IST

Updated : Jul 26, 2020, 7:31 AM IST

কে ছিলেন সৌরভ কালিয়া?

  • পাঞ্জাবের অমৃতসরের বাসিন্দা সৌরভ কালিয়া ৷ UPSC অধীনে কম্বাইনড ডিফেন্স সার্ভিসেস পরীক্ষায় পাশ করে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন ৷ 1998 সালে ভারতীয় সেনায় নিযুক্ত হন সৌরভ
  • 1999 সালের জানুয়ারিতে কারগিল সেক্টরে জাঠ রেজিমেন্টের 4র্থ ব্যাটেলিয়নে তিনি যোগ দেন
  • সৌরভ কালিয়া প্রথম ভারতীয় সেনা জওয়ান, যিনি মাত্র 22 বছর বয়সে পাকিস্তানি সেনার হাতে শহিদ হন

কী হয়েছিল 1999 সালের 15 মে?

15 মে, 1999-এ ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া এবং আরও পাঁচ জওয়ান রোজকার নজরদারিতে বের হন ৷ গাছপালাহীন লাদাখের কাকসর সেক্টরের বজরং পোস্টে নজরদারি চালাচ্ছিলেন তাঁরা ৷ বজরং সেক্টরে পাকিস্তানি সেনার সঙ্গে সৌরভ কালিয়া ও বাকিদের গুলির লড়াই চলে ৷ ক্যাপ্টেন সৌরভ ও বাকিদের কাছে অস্ত্রের ভাণ্ডার ফুরিয়ে আসে ৷ ভারতীয় সেনা পৌঁছানোর আগে পাকিস্তানি সেনার হাতে ধরা পড়েন সৌরভ ও আরও পাঁচজন ৷ তিন সপ্তাহ বন্দী করে রাখা হয় তাঁদের ৷ সেইসময় অকথ্য অত্যাচার করা হয় ক্যাপ্টেন সৌরভ ও বাকি পাঁচ জওয়ানের উপর ৷ 1999-এর 9 জুন তাঁদের দেহ ফেরত দেয় পাকিস্তান ৷

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেনাদের উপর অত্যাচারের উল্লেখ...

  • বন্দী অবস্থায় সৌরভ ও অন্যদের উপর সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়
  • গরম লোহার রড দিয়ে কানের পর্দা ফুটো করা হয়
  • চোখ খুবলে নেওয়ার আগে তা ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়
  • শরীরে বেশিরভাগ হাড় ও দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়
  • ঠোঁট ও নাক কেটে দেওয়া হয়
  • হাত ও গোপন অঙ্গ কেটে নেওয়া হয়
  • শেষপর্যন্ত গুলি করে হত্যা করা হয় তাঁদের

ক্যাপ্টেন সৌরভের বাবা বিচারের জন্য লড়াই করেন ৷ কিন্তু 21 বছর ধরে বিচার পাননি...

1999-এর অক্টোবরে তৎকালীন সেনা প্রধান জেনেরাল ভি পি মালিক সৌরভ কালিয়ার বাড়িতে যান ৷ তিনি কথা দেন, কেন্দ্রের কাছে এই বিষয় উল্লেখ করবেন ৷ কিন্তু, পরে সেনা প্রধান সৌরভের বাবাকে জানান, এই বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল ৷ দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রক, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও প্রতিরক্ষা দপ্তর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ৷

  • প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, বিদেশ মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন শহিদ সৌরভের বাবা
  • 1999 সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন সৌরভের বাবা ৷ দিল্লিতে পাকিস্তানের হাই কমিশনের মাধ্যমে তিনি চিঠি লেখেন ৷ কিন্তু কোনও উত্তর পাননি
  • 2001 সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পারভেজ মোশারফ আগ্রায় আসলে, 10 মিনিটের জন্য দেখা করতে চান ৷ কিন্তু, তার অনুমোদন দেয়নি ভারত সরকার
  • জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে বিষয়টি নিয়ে গেলে ক্যাপ্টেন সৌরভের বাবাকে বলা হয়, এই বিষয়ে তারা কোনও পদক্ষেপ করবে না ৷ সশস্ত্র বাহিনী ট্রাইব্যুনালকে অনুরোধ করলে তারা কেন্দ্রীয় সরকারকে পাকিস্তানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বলে
  • 2012 সালে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সৌরভের বাবা
  • আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার জন্য আবেদন জানান শহিদ সৌরভের পরিবার ৷ কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সরকার জানায়, এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া বাস্তব সম্মত নয়
  • UPA সরকারের আমলেও এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ এটা দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলে মনে করে ভারত সরকার
  • পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়, ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া ও তাঁর সঙ্গী সেনা জওয়ানরা খারাপ আবহাওয়ার কারণে মারা যান ৷ তাঁদের দেহ খাদ থেকে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করে পাকিস্তান

কে ছিলেন সৌরভ কালিয়া?

  • পাঞ্জাবের অমৃতসরের বাসিন্দা সৌরভ কালিয়া ৷ UPSC অধীনে কম্বাইনড ডিফেন্স সার্ভিসেস পরীক্ষায় পাশ করে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন ৷ 1998 সালে ভারতীয় সেনায় নিযুক্ত হন সৌরভ
  • 1999 সালের জানুয়ারিতে কারগিল সেক্টরে জাঠ রেজিমেন্টের 4র্থ ব্যাটেলিয়নে তিনি যোগ দেন
  • সৌরভ কালিয়া প্রথম ভারতীয় সেনা জওয়ান, যিনি মাত্র 22 বছর বয়সে পাকিস্তানি সেনার হাতে শহিদ হন

কী হয়েছিল 1999 সালের 15 মে?

15 মে, 1999-এ ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া এবং আরও পাঁচ জওয়ান রোজকার নজরদারিতে বের হন ৷ গাছপালাহীন লাদাখের কাকসর সেক্টরের বজরং পোস্টে নজরদারি চালাচ্ছিলেন তাঁরা ৷ বজরং সেক্টরে পাকিস্তানি সেনার সঙ্গে সৌরভ কালিয়া ও বাকিদের গুলির লড়াই চলে ৷ ক্যাপ্টেন সৌরভ ও বাকিদের কাছে অস্ত্রের ভাণ্ডার ফুরিয়ে আসে ৷ ভারতীয় সেনা পৌঁছানোর আগে পাকিস্তানি সেনার হাতে ধরা পড়েন সৌরভ ও আরও পাঁচজন ৷ তিন সপ্তাহ বন্দী করে রাখা হয় তাঁদের ৷ সেইসময় অকথ্য অত্যাচার করা হয় ক্যাপ্টেন সৌরভ ও বাকি পাঁচ জওয়ানের উপর ৷ 1999-এর 9 জুন তাঁদের দেহ ফেরত দেয় পাকিস্তান ৷

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেনাদের উপর অত্যাচারের উল্লেখ...

  • বন্দী অবস্থায় সৌরভ ও অন্যদের উপর সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়
  • গরম লোহার রড দিয়ে কানের পর্দা ফুটো করা হয়
  • চোখ খুবলে নেওয়ার আগে তা ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়
  • শরীরে বেশিরভাগ হাড় ও দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়
  • ঠোঁট ও নাক কেটে দেওয়া হয়
  • হাত ও গোপন অঙ্গ কেটে নেওয়া হয়
  • শেষপর্যন্ত গুলি করে হত্যা করা হয় তাঁদের

ক্যাপ্টেন সৌরভের বাবা বিচারের জন্য লড়াই করেন ৷ কিন্তু 21 বছর ধরে বিচার পাননি...

1999-এর অক্টোবরে তৎকালীন সেনা প্রধান জেনেরাল ভি পি মালিক সৌরভ কালিয়ার বাড়িতে যান ৷ তিনি কথা দেন, কেন্দ্রের কাছে এই বিষয় উল্লেখ করবেন ৷ কিন্তু, পরে সেনা প্রধান সৌরভের বাবাকে জানান, এই বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল ৷ দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রক, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও প্রতিরক্ষা দপ্তর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ৷

  • প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, বিদেশ মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন শহিদ সৌরভের বাবা
  • 1999 সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন সৌরভের বাবা ৷ দিল্লিতে পাকিস্তানের হাই কমিশনের মাধ্যমে তিনি চিঠি লেখেন ৷ কিন্তু কোনও উত্তর পাননি
  • 2001 সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পারভেজ মোশারফ আগ্রায় আসলে, 10 মিনিটের জন্য দেখা করতে চান ৷ কিন্তু, তার অনুমোদন দেয়নি ভারত সরকার
  • জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে বিষয়টি নিয়ে গেলে ক্যাপ্টেন সৌরভের বাবাকে বলা হয়, এই বিষয়ে তারা কোনও পদক্ষেপ করবে না ৷ সশস্ত্র বাহিনী ট্রাইব্যুনালকে অনুরোধ করলে তারা কেন্দ্রীয় সরকারকে পাকিস্তানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বলে
  • 2012 সালে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সৌরভের বাবা
  • আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার জন্য আবেদন জানান শহিদ সৌরভের পরিবার ৷ কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সরকার জানায়, এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া বাস্তব সম্মত নয়
  • UPA সরকারের আমলেও এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ এটা দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলে মনে করে ভারত সরকার
  • পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়, ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া ও তাঁর সঙ্গী সেনা জওয়ানরা খারাপ আবহাওয়ার কারণে মারা যান ৷ তাঁদের দেহ খাদ থেকে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করে পাকিস্তান
Last Updated : Jul 26, 2020, 7:31 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.