ETV Bharat / bharat

বাঘ বাঁচান, মানুষও বাঁচবে

পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, মাংসাশী, হিংস্র প্রাণীদের অন্যতম রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ৷ কিন্তু কতদিন প্রাণীটির অস্তিত্ব থাকবে ?

বাঘ বাঁচান, মানুষও বাঁচবে
author img

By

Published : Jul 29, 2019, 12:04 AM IST

Updated : Jul 31, 2019, 7:22 PM IST

দিল্লি, 29 জুলাই : অভিজাত, রয়্যাল বললেই প্রথমেই একটি প্রাণীর চেহারা ভেসে ওঠে ৷ গোটা শরীর ডোরাকাটা ৷ প্রাণীটি ভারতের জাতীয় পশু ৷ বাঘ ৷ উপন্যাস বা সিনেমাতেও একাধিকবার উঠে এসেছে সে নানাভাবে৷ এসেছে ঘর সাজানোর খেলনা হিসেবেও ৷ এসেছে বাংলার বহুরূপীর চরিত্রেও (শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস শ্রীকান্তে শ্রীনাথ বহুরূপী কিংবা বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ছবি বাঘ বাহাদুর) ৷

কতদিন বাঁচবে রয়্যাল এই প্রাণী ?

সারা বিশ্বে অন্যতম সমাদৃত পশুটির অস্তিত্ব আজ একেবারে বিপন্ন ৷ 100 বছর আগেও গোটা এশিয়ায় প্রায় এক লাখ বাঘ ছিল ৷ চোরাশিকার ও শিকার, প্রাকৃতিক বাসস্থান ধ্বংসের জেরে এখন সংখ্যাটা মাত্র 3900 ৷ ভারতে 2226টি বাঘ রয়েছে ৷ সবচেয়ে বেশি বাঘ রয়েছে কর্নাটকে ৷ 2010 সালে সারা দেশে মোট বাঘের সংখ্যা ছিল 1706টি ৷

বাঘের অস্তিত্ব সংকটে

2010 সালে 13টি দেশ (যেখানে বাঘের দেখা মেলে ) অর্থাৎ টাইগার রেঞ্জ কান্ট্রিজ় (ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চিন, রাশিয়া, তাইল্যান্ড, লাওস)-র নেতারা সমবেত হয়েছিলেন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে টাইগার কনজ়ারভেশন ফোরামে ৷ লক্ষ্য 2022 সালের মধ্যে সারা বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে হবে৷ সে সেময়ই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস হিসেবে পালিত হবে 29 জুলাই দিনটি ৷

কেন বাঘের উপরেই নজর চোরাশিকারিদের ?

পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, মাংসাশী, হিংস্র প্রাণীদের অন্যতম রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ৷

বিশেষ কিছু তথ্য

সত্যিই কি এতটাই হিংস্র ? সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের পিলিভিতে এক বাঘিনিকে পিটিয়ে মেরে ফেলল একদল গ্রামবাসী । সেই ঘটনা গ্রামবাসীরা মোবাইলে রেকর্ড করেন । ভিডিয়ো পোস্টও করা হয় সোশাল মিডিয়ায় ।

বাঘিনিটিকে মারার অভিযোগে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল প্রশাসন । তাঁদের মধ্যে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন । পিলিভিত ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিরেক্টর এইচ রাজামোহন জানিয়েছেন, বাঘিনিটির শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে । এমন কী মারের চোটে পাঁজরের চারটি হাড় পর্যন্ত ভেঙে গেছে । বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিলিভিতের জেলাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব । এই জাতীয় ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে ৷

বাঘে-মানুষে লড়াই

বিশ্বের বৃহত্তম ''ক্যাট স্পিসিস'' বাঘ ৷ প্রায় দু'লাখ বছর ধরে বিশ্বে রয়েছে প্রাণীটি ৷ কিন্তু ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড (WWF) বলছে, বাঘ বাঁচান । নাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও বাঁচবে না । তাই নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতেই বাঁচাতে হবে প্রাণীটিকে ৷

অরণ্য সংলগ্ন এলাকায় গ্রামের বাসিন্দারা এখন জড়িয়ে যাচ্ছেন অপরাধমূলক কাজে । চোরাশিকারিরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে । বন দপ্তরের কর্তাদের দাবি, চোরাশিকারিরা বহু ক্ষেত্রেই নির্ভর করে ওই সব গ্রামের বাসিন্দাদের উপরে । কারণ তথ্যের জন্য তাঁদের উপরে নির্ভর করাটাই চোরাশিকারিদের কাছে সবচেয়ে সুবিধাজনক । বিনিময়ে গ্রামবাসীদের টাকা দেয় তারা । আর ক্রমশ অপরাধের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়েন নিরুপায় মানুষ ।

বাঘ বাঁচান, বাঁচবেন আপনিও ৷

দৈনন্দিন প্রয়োজনেই ঘাস, গাছের ডালপালা কাটেন স্থানীয় মানুষ । চলে গৃহপালিত পশু চরানোর কাজও । এতে ক্ষতি একাধিক। প্রথমত গবাদি পশুবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ভয় থাকে অন্য বন্য প্রাণীদের মধ্যে। তার জের মারাত্মক হতে পারে । আর একটা বড় কারণও রয়েছে । পেট ভরানোর জন্য বাঘ হরিণ খা য়। হরিণ খায় ঘাস । ঘাস কমে যাওয়ায় অনাহারে হরিণের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ে । আর হরিণের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বাঘের ক্ষুণ্ণিবৃত্তি ।

বিশ্বের বৃহত্তম ''ক্যাট স্পিসিস'' বাঘ ৷

এই প্রসঙ্গে মনে করতে হবে জিম করবেটকে । জিমের নামেই এ দেশে প্রথম ন্যাশনাল পার্ক । 1957 সালে (আগে ছিল হেলির নামে) । অরণ্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে যারা চর্চা করেন তাঁদের অনেকেই আজ মনে করেন ভারতে এই সংরক্ষণের অগ্রপথিক জিম করবেটই । তবে ভুলে গেলে চলবে না যে জিমের আগে সংরক্ষিত অরণ্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন দুই ব্রিটিশ ফরেস্ট অফিসার । ই আর স্টিভেন্স এবং তারপর ই এ স্মাইথস । যথাক্রমে 1916 এবং 1917 সালে । কিন্তু তদানীন্তন ব্রিটিশ রাজপুরুষ পারসি উইন্ডহ্যাম সে প্রস্তাব অগ্রাহ্য করেন ।

বিশ্বের বৃহত্তম ''ক্যাট স্পিসিস'' বাঘ ৷

এদেশের জঙ্গলে বুনো জন্তু নিকেশ করার কাজে মেতে ওঠা ব্রিটিশ পুরুষদের সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা বুঝিয়েছিলেন এক শিকারিই । যিনি ভারতের গ্রামে-গঞ্জে থাকা মানুষজনকে ভালবাসতেন । স্বাধীনতারও বেশ কিছুদিন পর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন আনার তাগিদ তৈরি হয় এদেশে ৷ জিম করবেট, যাঁকে দেহাতি মানুষগুলো কার্পেট সাহেব বলতেন, তিনি সেই আমলে শিকার করলেও সংরক্ষণের মহিমাও বুঝেছিলেন । বন এবং বন্যপ্রাণ, দুয়েরই ।

কে বেশি বিপন্ন মানুষ না পশু?

দিল্লি, 29 জুলাই : অভিজাত, রয়্যাল বললেই প্রথমেই একটি প্রাণীর চেহারা ভেসে ওঠে ৷ গোটা শরীর ডোরাকাটা ৷ প্রাণীটি ভারতের জাতীয় পশু ৷ বাঘ ৷ উপন্যাস বা সিনেমাতেও একাধিকবার উঠে এসেছে সে নানাভাবে৷ এসেছে ঘর সাজানোর খেলনা হিসেবেও ৷ এসেছে বাংলার বহুরূপীর চরিত্রেও (শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস শ্রীকান্তে শ্রীনাথ বহুরূপী কিংবা বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ছবি বাঘ বাহাদুর) ৷

কতদিন বাঁচবে রয়্যাল এই প্রাণী ?

সারা বিশ্বে অন্যতম সমাদৃত পশুটির অস্তিত্ব আজ একেবারে বিপন্ন ৷ 100 বছর আগেও গোটা এশিয়ায় প্রায় এক লাখ বাঘ ছিল ৷ চোরাশিকার ও শিকার, প্রাকৃতিক বাসস্থান ধ্বংসের জেরে এখন সংখ্যাটা মাত্র 3900 ৷ ভারতে 2226টি বাঘ রয়েছে ৷ সবচেয়ে বেশি বাঘ রয়েছে কর্নাটকে ৷ 2010 সালে সারা দেশে মোট বাঘের সংখ্যা ছিল 1706টি ৷

বাঘের অস্তিত্ব সংকটে

2010 সালে 13টি দেশ (যেখানে বাঘের দেখা মেলে ) অর্থাৎ টাইগার রেঞ্জ কান্ট্রিজ় (ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চিন, রাশিয়া, তাইল্যান্ড, লাওস)-র নেতারা সমবেত হয়েছিলেন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে টাইগার কনজ়ারভেশন ফোরামে ৷ লক্ষ্য 2022 সালের মধ্যে সারা বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে হবে৷ সে সেময়ই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস হিসেবে পালিত হবে 29 জুলাই দিনটি ৷

কেন বাঘের উপরেই নজর চোরাশিকারিদের ?

পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, মাংসাশী, হিংস্র প্রাণীদের অন্যতম রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ৷

বিশেষ কিছু তথ্য

সত্যিই কি এতটাই হিংস্র ? সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের পিলিভিতে এক বাঘিনিকে পিটিয়ে মেরে ফেলল একদল গ্রামবাসী । সেই ঘটনা গ্রামবাসীরা মোবাইলে রেকর্ড করেন । ভিডিয়ো পোস্টও করা হয় সোশাল মিডিয়ায় ।

বাঘিনিটিকে মারার অভিযোগে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল প্রশাসন । তাঁদের মধ্যে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন । পিলিভিত ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিরেক্টর এইচ রাজামোহন জানিয়েছেন, বাঘিনিটির শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে । এমন কী মারের চোটে পাঁজরের চারটি হাড় পর্যন্ত ভেঙে গেছে । বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিলিভিতের জেলাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব । এই জাতীয় ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে ৷

বাঘে-মানুষে লড়াই

বিশ্বের বৃহত্তম ''ক্যাট স্পিসিস'' বাঘ ৷ প্রায় দু'লাখ বছর ধরে বিশ্বে রয়েছে প্রাণীটি ৷ কিন্তু ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড (WWF) বলছে, বাঘ বাঁচান । নাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও বাঁচবে না । তাই নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতেই বাঁচাতে হবে প্রাণীটিকে ৷

অরণ্য সংলগ্ন এলাকায় গ্রামের বাসিন্দারা এখন জড়িয়ে যাচ্ছেন অপরাধমূলক কাজে । চোরাশিকারিরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে । বন দপ্তরের কর্তাদের দাবি, চোরাশিকারিরা বহু ক্ষেত্রেই নির্ভর করে ওই সব গ্রামের বাসিন্দাদের উপরে । কারণ তথ্যের জন্য তাঁদের উপরে নির্ভর করাটাই চোরাশিকারিদের কাছে সবচেয়ে সুবিধাজনক । বিনিময়ে গ্রামবাসীদের টাকা দেয় তারা । আর ক্রমশ অপরাধের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়েন নিরুপায় মানুষ ।

বাঘ বাঁচান, বাঁচবেন আপনিও ৷

দৈনন্দিন প্রয়োজনেই ঘাস, গাছের ডালপালা কাটেন স্থানীয় মানুষ । চলে গৃহপালিত পশু চরানোর কাজও । এতে ক্ষতি একাধিক। প্রথমত গবাদি পশুবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ভয় থাকে অন্য বন্য প্রাণীদের মধ্যে। তার জের মারাত্মক হতে পারে । আর একটা বড় কারণও রয়েছে । পেট ভরানোর জন্য বাঘ হরিণ খা য়। হরিণ খায় ঘাস । ঘাস কমে যাওয়ায় অনাহারে হরিণের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ে । আর হরিণের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বাঘের ক্ষুণ্ণিবৃত্তি ।

বিশ্বের বৃহত্তম ''ক্যাট স্পিসিস'' বাঘ ৷

এই প্রসঙ্গে মনে করতে হবে জিম করবেটকে । জিমের নামেই এ দেশে প্রথম ন্যাশনাল পার্ক । 1957 সালে (আগে ছিল হেলির নামে) । অরণ্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে যারা চর্চা করেন তাঁদের অনেকেই আজ মনে করেন ভারতে এই সংরক্ষণের অগ্রপথিক জিম করবেটই । তবে ভুলে গেলে চলবে না যে জিমের আগে সংরক্ষিত অরণ্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন দুই ব্রিটিশ ফরেস্ট অফিসার । ই আর স্টিভেন্স এবং তারপর ই এ স্মাইথস । যথাক্রমে 1916 এবং 1917 সালে । কিন্তু তদানীন্তন ব্রিটিশ রাজপুরুষ পারসি উইন্ডহ্যাম সে প্রস্তাব অগ্রাহ্য করেন ।

বিশ্বের বৃহত্তম ''ক্যাট স্পিসিস'' বাঘ ৷

এদেশের জঙ্গলে বুনো জন্তু নিকেশ করার কাজে মেতে ওঠা ব্রিটিশ পুরুষদের সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা বুঝিয়েছিলেন এক শিকারিই । যিনি ভারতের গ্রামে-গঞ্জে থাকা মানুষজনকে ভালবাসতেন । স্বাধীনতারও বেশ কিছুদিন পর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন আনার তাগিদ তৈরি হয় এদেশে ৷ জিম করবেট, যাঁকে দেহাতি মানুষগুলো কার্পেট সাহেব বলতেন, তিনি সেই আমলে শিকার করলেও সংরক্ষণের মহিমাও বুঝেছিলেন । বন এবং বন্যপ্রাণ, দুয়েরই ।

কে বেশি বিপন্ন মানুষ না পশু?

Nagpur (Maharashtra), July 28 (ANI): While speaking to ANI on Nationalist Congress Party (NCP) Chief Sharad Pawar's statement, Maharashtra Chief Minister Devendra Fadnavis said, "Many Congress and NCP leaders are ready to join Bharatiya Janata Party (BJP) but a few chosen ones will be inducted. Those involved in an ongoing investigation by Enforcement Directorate (ED) or any agency won't be inducted. We don't need to invite or chase anyone, people are approaching us." "BJP has never done politics of pressuring others. In last five years, government helped several sugar factories, facing difficult times. There's a long list but no one was asked to join BJP for this. Pawar sahab should have introspection within his own party," Fadnavis added. Sharad Pawar had earlier said, "Central Government is misusing their power before elections (Maharashtra), pressuring those leaders who are not willing to join BJP. This is not limited to Maharashtra, it has happened everywhere."
Last Updated : Jul 31, 2019, 7:22 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.