ETV Bharat / bharat

সুলেমানি নিহতের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিতে গেলে বিপাকে পড়তে পারে ভারত

ইরানের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক । বর্তমানে অ্যামেরিকার কাছে এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদেশ হল ভারত । কূটনীতির ক্ষেত্রে দিল্লি কখনও ওয়াশিংটন ও তেহরানকে চটাতে চাইবে না । দুটো দেশই তার কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ । তাই সুলেমানির মৃত্যুর ঘটনায় ভারত ঠিক কী প্রতিক্রিয়া দেবে তা দিল্লির কাছে একটা বড় সমস্যা।

Qasem Soleimani
ছবি
author img

By

Published : Jan 5, 2020, 4:20 AM IST

Updated : Jan 5, 2020, 10:10 AM IST

দিল্লি, 5 জানুয়ারি : ড্রোন হামলায় শুক্রবার ভোরে ইরানের সেনা কমান্ডার জেনেরাল কাসেম সুলেমানি (62) নিহত হন । অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই এই হামলা বলে জানা গেছে । ইরানের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব সুলেমানির মৃত্যুর বদলা যে সে দেশের সরকার নেবে, তা বলাবাহুল্য । 22 বছর আগে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের (IRGC) শাখা আল-কুদসের কমান্ডার হন সুলেমানি । তারপর থেকেই তাঁর উপর একাধিক হামলা হয় । কিন্তু প্রতিবারই তিনি বেঁচে গেছেন । তাই তাঁর যে এভাবে মৃত্যু হবে, তা ইরান সরকার ও সুলেমানি নিজেও কখনও ভাবতে পারেনি । সুলেমানি ভাবতেন তাঁর শত্রুরা যতই চেষ্টা করুক না কেন, তাঁকে মারতে পারবে না । এমনকি অপারেশন ডেজ়ার্ট স্টর্মের মাধ্যমে ইরাক দখল করার পরও সুলেমানির উপর হামলা চালায়নি অ্যামেরিকা । তাই অ্যামেরিকা ঠিক কী কারণে সুলেমানির উপর হামলা চালাল, তা জানতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে । তবে এটা স্পষ্ট যে, সুলেমানির মৃত্যুর ঘটনার প্রভাব পড়বে ইরানের সঙ্গে ভারত সহ একাধিক দেশের সম্পর্কের উপর ।

ইরানের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক । ইরানের নানা ক্ষেত্রে ভারতের প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সে দেশের দক্ষিণ পূর্ব অংশে মাকরান উপকূলে ছাবাহার বন্দর শহর । এখানে সমুদ্র বন্দরের পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য ভারত মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে । কিন্তু বর্তমানে অ্যামেরিকার কাছে এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদেশ হল ভারত । তাই সুলেমানির মৃত্যুর ঘটনায় ভারত ঠিক কী প্রতিক্রিয়া দেবে তা দিল্লির কাছে একটা বড় সমস্যা । কারণ কূটনীতির ক্ষেত্রে দিল্লি কখনও ওয়াশিংটন ও তেহরানকে চটাতে চাইবে না । কারণ দুটো দেশই তার কাছে কূটনীতির ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ । তাই সুলেমানির মৃত্যু নিয়ে ভারত এখনও পর্যন্ত অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে কোনও নিন্দাসূচক বিবৃতি দেয়নি । এটা ওয়াশিংটনকে খুশি করলেও তেহরানকে যে খুশি করেনি তা বলাবাহুল্য । যদিও তেহরান ছাবারে শাহিদ বেহেস্তি বন্দর পরিচালনার জন্য ভারতকে 10 বছরের অনুমতি দিয়েছে । ইরানের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের গদরে বালুচ বন্দরের পরিকাঠামো উন্নতির জন্য চিন প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে । ইরানের গুরুত্বপূর্ণ শাহিদ বেহেস্তি বন্দরেও চিন বিনিয়োগের চেষ্টা করেছিল । কিন্তু ইরান চিনকে বাদ দিয়ে সেখানে ভারতকে বিনিয়োগের অনুমতি দেয় । এর পিছনে অবশ্য ইরানের নিজস্ব কিছু স্বার্থ রয়েছে । ইরানের ওমান সমুদ্রের উপকূলে অবস্থিত এই বন্দরটিতে বিনিয়োগ হল ভারতের প্রথম দেশের বাইরে কোনও বন্দরে বিনিয়োগ । এই বন্দর ভারতকে সাহায্য করবে পাকিস্তানকে এড়িয়ে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ তৈরি করতে ।

ছাবার উষ্ণ সমুদ্র বন্দর । বিশ্বের অনেক দেশ এই গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি দখল করতে চেয়েছিল । একসময় রাশিয়াও জারের আমল থেকে এই বন্দরটিকে নিজেদের দখলে আনতে চেয়েছিল । আল-বেরুনির লেখাতেও এই বন্দরের উল্লেখ পাওয়া যায় । তাই ভারতও স্বাভাবিকভাবেই এই বন্দরে বিনিয়োগের চেষ্টা করছিল দীর্ঘদিন ধরে । এই লেখক একবার ছাবার গিয়েছিলেন । সেখানে তিনি দেখেন অনেকেই হিন্দুস্থানি ভাষায় কথা বলছেন । লেখক এটাও লক্ষ্য করেন যে, স্থানীয় বাসিন্দারা ভারতের এই বিনিয়োগে যথেষ্ট খুশি । ইরানের কূটনীতিকরা বরাবরই স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, ছাবার এলাকার কাছেই পাকিস্তানের সীমান্ত । এই পরিস্থিতিতে ছাবার এলাকায় ভারতের উপস্থিতি তাদের অনেকটা নিশ্চিন্ত করবে । ভারতের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য এই ছাবার এলাকা থেকেই কুলভূষণ যাদবকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান ।

ছাবার প্রকল্পের দুটি ভাগ রয়েছে । একটি হল, বন্দর এবং অন্যটি সড়ক ও রেল যোগাযোগ যার সাহায্যে এই বন্দর শহরটি ইরান ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে যুক্ত । ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোওহিনি এবং আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি 2016 সালে এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন । এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই আশা করে যে, P5+1 দেশগুলি তেহরানকে বৈদেশিক বাণিজ্যে সাহায্য করবে । কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই চুক্তি থেকে অ্যামেরিকা সরে এল এবং ইরানের উপর নানা বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ আরোপ করল । বৈদেশিক ব্যাঙ্কগুলি ইরানে কোনও কাজের জন্য ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দিল । আর তার জেরে ছাবরা বন্দরে ভারতের বিনিয়োগও আটকে গেল । বন্দরের পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও সেখানে রেলপথ নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে গেল । ভারতকে এখন প্রতিনিয়ত ভাবতে হয় যে, তেহরানের সঙ্গে তার সম্পর্ককে অ্যামেরিকা কী চোখে দেখছে । পরবর্তীতে ছাবার বন্দর অ্যামেরিকার বিধিনিষেধের তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল । কারণ আফগানিস্তানের পুনর্গঠনের জন্য এই বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে । কিন্তু তাতেও ভারতের সমস্যা মিটল না । সপ্তাহখানেক আগে ওয়াশিংটনে অ্যামেরিকা ও ভারতের মধ্যে টু প্লাস টু বৈঠকে এই বিষয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর কিছু লিখিত প্রতিশ্রুতি অ্যামেরিকার কাছ থেকে আদায় করতে পেরেছেন । যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভারত প্রায় 85 মিলিয়ন ডলারের সরঞ্জাম কিনতে পারবে । ভারতও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আরও কিছু বন্দরকে ছাবারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য ।

শুক্রবার সকালে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই হামলা হয় । নিহত হন সুলেমানি । তার ফলে প্রতিটি চুক্তি ও সমঝোতা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়ে । ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খামেইনি জানিয়েছেন, সুলেমানির মৃত্যুর উপযুক্ত বদলা নেওয়া হবে । তারপর সুলেমানির মৃত্যুর ঘটনায় ভারত কী প্রতিক্রিয়া দেবে তা কেউ জানে না । সুলেমানি ইরানে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন । তাঁর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ফলোয়ারের সংখ্যাও যথেষ্ট । ইরাক ও সিরিয়া সহ একাধিক এলাকায় ISIS জঙ্গিদের দমন করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল । ওয়াকিবহাল মহল এটাও বলছে যে, ইরাকে ISIS জঙ্গিদের দমনে ও আফগানিস্তানে তালিবানদের দমনে সুলেইমানি অ্যামেরিকাকে নানাভাবে সাহায্য করেছিলেন । ভারতের গুপ্তচর সংস্থার একাধিক প্রাক্তন কর্মী জানিয়েছেন, তাঁরা অনেকেই সুলেমানির সঙ্গে একসময় কাজ করেছেন । তাঁরা এটাও জানিয়েছেন যে, আফগানিস্তানে সুলেমানি যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন একসময় । স্মৃতিচারণে তাঁরা বলছেন, সুলেইমানি বেশি কথা বলতেন না, তার বদলে তিনি অপরপক্ষের কথা বেশি শুনতেন । তিনি ভারত সফরেও কয়েকবার এসেছিলেন । কিন্তু এখন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন যে, সুলেইমানি না কি দিল্লিতে নাশকতামূলক কাজে জড়িত ছিলেন । দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত যতগুলি নাশকতামূলক ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে একটি ক্ষেত্রেই ইরানের বিরুদ্ধে আঙুল উঠেছিল । সেটা হল দিল্লিতে ইজ়রায়েল দূতাবাসের এক কূটনীতিকের উপর হামলা । সেই ঘটনায় এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । ট্রাম্প চান ভারত ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করুক । তিনি চান ভারত এই ইশুতে কোন দিকে রয়েছে তা স্পষ্ট করুক । আর সুলেমানির মৃত্যুর পর ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে যা বলেছেন, তা যদি সত্যি হিসেবে ধরে নেওয়া হয় তবে ছাবার বন্দর এলাকায় ভারতের পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হবে ।

দিল্লি, 5 জানুয়ারি : ড্রোন হামলায় শুক্রবার ভোরে ইরানের সেনা কমান্ডার জেনেরাল কাসেম সুলেমানি (62) নিহত হন । অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই এই হামলা বলে জানা গেছে । ইরানের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব সুলেমানির মৃত্যুর বদলা যে সে দেশের সরকার নেবে, তা বলাবাহুল্য । 22 বছর আগে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের (IRGC) শাখা আল-কুদসের কমান্ডার হন সুলেমানি । তারপর থেকেই তাঁর উপর একাধিক হামলা হয় । কিন্তু প্রতিবারই তিনি বেঁচে গেছেন । তাই তাঁর যে এভাবে মৃত্যু হবে, তা ইরান সরকার ও সুলেমানি নিজেও কখনও ভাবতে পারেনি । সুলেমানি ভাবতেন তাঁর শত্রুরা যতই চেষ্টা করুক না কেন, তাঁকে মারতে পারবে না । এমনকি অপারেশন ডেজ়ার্ট স্টর্মের মাধ্যমে ইরাক দখল করার পরও সুলেমানির উপর হামলা চালায়নি অ্যামেরিকা । তাই অ্যামেরিকা ঠিক কী কারণে সুলেমানির উপর হামলা চালাল, তা জানতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে । তবে এটা স্পষ্ট যে, সুলেমানির মৃত্যুর ঘটনার প্রভাব পড়বে ইরানের সঙ্গে ভারত সহ একাধিক দেশের সম্পর্কের উপর ।

ইরানের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক । ইরানের নানা ক্ষেত্রে ভারতের প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সে দেশের দক্ষিণ পূর্ব অংশে মাকরান উপকূলে ছাবাহার বন্দর শহর । এখানে সমুদ্র বন্দরের পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য ভারত মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে । কিন্তু বর্তমানে অ্যামেরিকার কাছে এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদেশ হল ভারত । তাই সুলেমানির মৃত্যুর ঘটনায় ভারত ঠিক কী প্রতিক্রিয়া দেবে তা দিল্লির কাছে একটা বড় সমস্যা । কারণ কূটনীতির ক্ষেত্রে দিল্লি কখনও ওয়াশিংটন ও তেহরানকে চটাতে চাইবে না । কারণ দুটো দেশই তার কাছে কূটনীতির ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ । তাই সুলেমানির মৃত্যু নিয়ে ভারত এখনও পর্যন্ত অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে কোনও নিন্দাসূচক বিবৃতি দেয়নি । এটা ওয়াশিংটনকে খুশি করলেও তেহরানকে যে খুশি করেনি তা বলাবাহুল্য । যদিও তেহরান ছাবারে শাহিদ বেহেস্তি বন্দর পরিচালনার জন্য ভারতকে 10 বছরের অনুমতি দিয়েছে । ইরানের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের গদরে বালুচ বন্দরের পরিকাঠামো উন্নতির জন্য চিন প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে । ইরানের গুরুত্বপূর্ণ শাহিদ বেহেস্তি বন্দরেও চিন বিনিয়োগের চেষ্টা করেছিল । কিন্তু ইরান চিনকে বাদ দিয়ে সেখানে ভারতকে বিনিয়োগের অনুমতি দেয় । এর পিছনে অবশ্য ইরানের নিজস্ব কিছু স্বার্থ রয়েছে । ইরানের ওমান সমুদ্রের উপকূলে অবস্থিত এই বন্দরটিতে বিনিয়োগ হল ভারতের প্রথম দেশের বাইরে কোনও বন্দরে বিনিয়োগ । এই বন্দর ভারতকে সাহায্য করবে পাকিস্তানকে এড়িয়ে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ তৈরি করতে ।

ছাবার উষ্ণ সমুদ্র বন্দর । বিশ্বের অনেক দেশ এই গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি দখল করতে চেয়েছিল । একসময় রাশিয়াও জারের আমল থেকে এই বন্দরটিকে নিজেদের দখলে আনতে চেয়েছিল । আল-বেরুনির লেখাতেও এই বন্দরের উল্লেখ পাওয়া যায় । তাই ভারতও স্বাভাবিকভাবেই এই বন্দরে বিনিয়োগের চেষ্টা করছিল দীর্ঘদিন ধরে । এই লেখক একবার ছাবার গিয়েছিলেন । সেখানে তিনি দেখেন অনেকেই হিন্দুস্থানি ভাষায় কথা বলছেন । লেখক এটাও লক্ষ্য করেন যে, স্থানীয় বাসিন্দারা ভারতের এই বিনিয়োগে যথেষ্ট খুশি । ইরানের কূটনীতিকরা বরাবরই স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, ছাবার এলাকার কাছেই পাকিস্তানের সীমান্ত । এই পরিস্থিতিতে ছাবার এলাকায় ভারতের উপস্থিতি তাদের অনেকটা নিশ্চিন্ত করবে । ভারতের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য এই ছাবার এলাকা থেকেই কুলভূষণ যাদবকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান ।

ছাবার প্রকল্পের দুটি ভাগ রয়েছে । একটি হল, বন্দর এবং অন্যটি সড়ক ও রেল যোগাযোগ যার সাহায্যে এই বন্দর শহরটি ইরান ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে যুক্ত । ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোওহিনি এবং আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি 2016 সালে এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন । এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই আশা করে যে, P5+1 দেশগুলি তেহরানকে বৈদেশিক বাণিজ্যে সাহায্য করবে । কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই চুক্তি থেকে অ্যামেরিকা সরে এল এবং ইরানের উপর নানা বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ আরোপ করল । বৈদেশিক ব্যাঙ্কগুলি ইরানে কোনও কাজের জন্য ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দিল । আর তার জেরে ছাবরা বন্দরে ভারতের বিনিয়োগও আটকে গেল । বন্দরের পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও সেখানে রেলপথ নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে গেল । ভারতকে এখন প্রতিনিয়ত ভাবতে হয় যে, তেহরানের সঙ্গে তার সম্পর্ককে অ্যামেরিকা কী চোখে দেখছে । পরবর্তীতে ছাবার বন্দর অ্যামেরিকার বিধিনিষেধের তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল । কারণ আফগানিস্তানের পুনর্গঠনের জন্য এই বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে । কিন্তু তাতেও ভারতের সমস্যা মিটল না । সপ্তাহখানেক আগে ওয়াশিংটনে অ্যামেরিকা ও ভারতের মধ্যে টু প্লাস টু বৈঠকে এই বিষয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর কিছু লিখিত প্রতিশ্রুতি অ্যামেরিকার কাছ থেকে আদায় করতে পেরেছেন । যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভারত প্রায় 85 মিলিয়ন ডলারের সরঞ্জাম কিনতে পারবে । ভারতও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আরও কিছু বন্দরকে ছাবারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য ।

শুক্রবার সকালে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই হামলা হয় । নিহত হন সুলেমানি । তার ফলে প্রতিটি চুক্তি ও সমঝোতা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়ে । ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খামেইনি জানিয়েছেন, সুলেমানির মৃত্যুর উপযুক্ত বদলা নেওয়া হবে । তারপর সুলেমানির মৃত্যুর ঘটনায় ভারত কী প্রতিক্রিয়া দেবে তা কেউ জানে না । সুলেমানি ইরানে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন । তাঁর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ফলোয়ারের সংখ্যাও যথেষ্ট । ইরাক ও সিরিয়া সহ একাধিক এলাকায় ISIS জঙ্গিদের দমন করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল । ওয়াকিবহাল মহল এটাও বলছে যে, ইরাকে ISIS জঙ্গিদের দমনে ও আফগানিস্তানে তালিবানদের দমনে সুলেইমানি অ্যামেরিকাকে নানাভাবে সাহায্য করেছিলেন । ভারতের গুপ্তচর সংস্থার একাধিক প্রাক্তন কর্মী জানিয়েছেন, তাঁরা অনেকেই সুলেমানির সঙ্গে একসময় কাজ করেছেন । তাঁরা এটাও জানিয়েছেন যে, আফগানিস্তানে সুলেমানি যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন একসময় । স্মৃতিচারণে তাঁরা বলছেন, সুলেইমানি বেশি কথা বলতেন না, তার বদলে তিনি অপরপক্ষের কথা বেশি শুনতেন । তিনি ভারত সফরেও কয়েকবার এসেছিলেন । কিন্তু এখন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন যে, সুলেইমানি না কি দিল্লিতে নাশকতামূলক কাজে জড়িত ছিলেন । দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত যতগুলি নাশকতামূলক ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে একটি ক্ষেত্রেই ইরানের বিরুদ্ধে আঙুল উঠেছিল । সেটা হল দিল্লিতে ইজ়রায়েল দূতাবাসের এক কূটনীতিকের উপর হামলা । সেই ঘটনায় এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । ট্রাম্প চান ভারত ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করুক । তিনি চান ভারত এই ইশুতে কোন দিকে রয়েছে তা স্পষ্ট করুক । আর সুলেমানির মৃত্যুর পর ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে যা বলেছেন, তা যদি সত্যি হিসেবে ধরে নেওয়া হয় তবে ছাবার বন্দর এলাকায় ভারতের পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হবে ।

Bhubaneswar (Odisha), Jan 05 (ANI): Former Indian cricketer, Anil Kumble attended "22nd Odisha Knowledge Hub Series Lecture" in Odisha's Bhubaneswar on January 04. While speaking to media persons after the event, he said, "To become a sporting nation, we need to invest at the grassroots level. This will lead to competition as well as raise the benchmark and help us win medals in the Olympic."

Last Updated : Jan 5, 2020, 10:10 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.