দিল্লি , 1 সেপ্টেম্বর : প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি মনে করেন , পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিনা দখলদারির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করছে ভারত । তাঁর যুক্তি , দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির মনোভাব বুঝেই এশিয়ার ড্রাগন আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে ।
গতকাল প্যাংগং সো লেক অঞ্চলে চিনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘনের চেষ্টা প্রতিহত করে ভারতীয় সেনা । এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অ্যান্টনি ETV ভারতকে বলেন , “চিন বুঝতে পেরেছে যে ভারত কিছু করার ক্ষেত্রে দ্বিধা করছে । তাই তারা আগ্রাসী হয়ে উঠেছে । সবাই আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছে যে সরকার পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করছেই বা কেন ।”
প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী উল্লেখ করেন যে , পূর্ব লাদাখে চিনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন প্রায় চার মাস ধরে চলছে । এর মধ্যে 15 জুন গালওয়ান উপত্যকায় PLA-র সঙ্গে সংঘর্ষে ভারত 20 জন জওয়ানকেও হারিয়েছে । অসমর্থিত সূত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী , PLA-র তরফে 40 জনের মৃত্যু হয় । যদিও সংখ্যাটা নিয়ে চিন মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছে ।
অ্যান্টনি বলেন, “সীমান্ত লঙ্ঘন চার মাস ধরে চলছে । এখনও ভারত সরকার শুধু বিবৃতিই দিয়ে চলেছে , যেখানে চিন তার সেনা জড়ো করে চলেছে ।”
তিনি আরও বলেন , "চিনের সেনা মোতায়েন শুধু পূর্ব লাদাখেই হচ্ছে না, অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিম-সহ পুরো চিন-ভারত সীমান্ত বরাবরই হচ্ছে ।"
অ্যান্টনি বলেন , “PLA সেনারা ভারতীয় সেনাকে সেইসব এলাকায় টহলদারি দিতে দিচ্ছে না, যেখানে তারা আগে টহল দিত ।”
প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে , PLA সেনাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে ভারতের দ্বিধা এই বার্তাই দিচ্ছে যে “চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলার মনোবল আমরা দেখাচ্ছি না ।"তাঁর কথায়, ভারতীয় সেনা এই ধরনের আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ।
অ্যান্টনি মনে করিয়ে দেন , “2013 সালে দেপসাং উপত্যকায় একইধরনের ঘটনা ঘটে, যেখানে শেষপর্যন্ত চিনা বাহিনীকে পিছু হটতে হয়, এবং শান্তি ফিরে আসে ।”
অ্যান্টনি ছিলেন সবথেকে বেশিদিন দায়িত্বে থাকা প্রতিরক্ষামন্ত্রী । যিনি মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন UPA জমানায় সাত বছর এই পদে ছিলেন । সংসদে ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বিবৃতিতে অ্যান্টনি স্বীকার করেছিলেন যে , সেনা, বায়ুসেনা ও নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রতিরক্ষা বাজেট আরও বাড়ানো প্রয়োজন ।
অ্যান্টনির মন্তব্যে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধির বক্তব্যেরই সুর শোনা যাচ্ছে । যিনি ভারত-চিন লাদাখ সীমান্ত সংঘাত নিয়ে মোদি সরকারকে নিশানা করেছেন । এই সংঘাতের জেরে সীমান্তের দু'দিকেই সৈন্য সমাবেশ দেখা গেছে, এবং দু'দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে তলানিতে এসে ঠেকেছে ।