ETV Bharat / bharat

কার্গিল যুদ্ধে কূটনৈতিক অস্ত্রে পাকিস্তানকে পরাস্ত করেছিল ভারত - কার্গিল

গোটা বিশ্বকে পাকিস্তান বোঝাতে চেয়েছিল, তারা ভারতে অনুপ্রবেশ করেনি ৷ কিন্তু, ভারত কুটনৈতিক অস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তানের মুখোশ বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিল ৷

Kargil war
Kargil war
author img

By

Published : Jul 24, 2020, 8:20 PM IST

হায়দরাবাদ, 24 জুলাই : নিজের কার্যকরী কূটনীতির মাধ্যমে কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের আগ্রাসন নিয়ে গোটা বিশ্বের সামনে সত্যিটা তুলে ধরার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে ভারত । সামরিক ও কূটনৈতিক সূত্র জানায়, কার্গিলে পাকিস্তানের অনুপ্রবেশ সম্পর্কে জানত ভারত । অনুপ্রবেশ করেনি বলে আন্তর্জাতিক স্তরে মিথ্যা বলেছিল পাকিস্তান । কাশ্মীর ইশুতে অনুপ্রবেশকে যুক্ত করার দাবি জানায় তারা । কাশ্মীর ইশুকে আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য পাকিস্তানের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় । সিয়াচেনে ভারতের উপস্থিতি এবং নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষ স্বাভাবিক ছিল বলে গোটা বিশ্বকে জানায় তারা । যার বিরুদ্ধে ভারতীয় কূটনীতিকরা আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ন্ত্রণরেখায় জটিলতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে লড়াই করেন এবং জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের এই পদক্ষেপই ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা ।

একইসঙ্গে এও জোর দিয়ে জানানো হয়, কোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এরূপ উস্কানিমূলক এবং বিপজ্জনক পদক্ষেপ নেয়নি ভারত । পাকিস্তান আশা করেছিল, বড় দেশগুলি তার পক্ষে থাকবে এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে জোর দেবে । কিন্তু, তা না করে এই গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলি বিশেষত অ্যামেরিকা, পাকিস্তানকে কারগিল থেকে সরে আসার জন্য চাপ দিতে থাকে । ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম না করার সিদ্ধান্ত বিশ্বের কাছে ভারতের সংযম তুলে ধরে ।

জেনেরাল ভি.পি. মালিক তাঁর ‘ভারতের সামরিক দ্বন্দ্ব ও কূটনীতি’ বইটিতে উল্লেখ করেছেন, এ'ক্ষেত্রে ভারতের লক্ষ্য ছিল :

বিশ্বকে বোঝানো যে, ভারত পাকিস্তানের আগ্রাসনের শিকার এবং সিমলা চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল পাকিস্তান ।

অনুপ্রবেশকারীরা জঙ্গি নয়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিয়ামক ছিল ।

পারমাণবিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে 'দায়বদ্ধতা ও সংযম' প্রদর্শন করা ।

জুনের শেষের দিকে, অ্যামেরিকা সরকার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জি-8 সকলেই নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য পাকিস্তানকে হুমকি দিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ায় । এমনকী অর্গানাইজ়েশন অফ ইসলামিক কনফারেন্সে (OIC)-এর পাকিস্তানের বরাবরের মিত্ররাও ভারতের বিরুদ্ধে সে'দেশের এই আগ্রাসনকে নমনীয় করতে উদ্যত হয় । প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ যখন 1999 সালের 4 জুলাই, প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটন ডিসি গিয়েছিলেন, পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক মিত্র ছিল না ।

পরবর্তীকালে জেনেরাল পারভেজ মুশারফ তাঁর বই ‘ইন দ্য লাইন অফ ফায়ার’-এ স্বীকার করেন, কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভারত প্রচেষ্টা চালিয়েছিল এবং "প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ওপর তার প্রভাব পড়ে ।" শরিফ অবশেষে ক্লিনটনের চাপের মুখে নতিস্বীকার করেন এবং যুদ্ধের অবসান ঘটে ।

ভারতের এই কূটনৈতিক জয়ের মূল খেলোয়াড়রা হলেন -

  • অটলবিহারি বাজপেয়ী । শান্ত ও দৃঢ়ভাবে কার্গিল থেকে পাকিস্তানকে বিতাড়িত করার লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেছিলেন তিনি ।
  • জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্র নিশ্চিত করেন, কার্গিলের যুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে সমস্ত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে ।
  • বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী জসওয়ান্ত সিং সামনে থেকে সমস্ত কূটনৈতিক কার্যকলাপের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
  • বিদেশ সচিব কে রঘুনাথ, পাকিস্তানের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেওয়ার জন্য ভারতের কূটনৈতিক যুক্তিগুলি শক্তিশালী করেছিলেন।

হায়দরাবাদ, 24 জুলাই : নিজের কার্যকরী কূটনীতির মাধ্যমে কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের আগ্রাসন নিয়ে গোটা বিশ্বের সামনে সত্যিটা তুলে ধরার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে ভারত । সামরিক ও কূটনৈতিক সূত্র জানায়, কার্গিলে পাকিস্তানের অনুপ্রবেশ সম্পর্কে জানত ভারত । অনুপ্রবেশ করেনি বলে আন্তর্জাতিক স্তরে মিথ্যা বলেছিল পাকিস্তান । কাশ্মীর ইশুতে অনুপ্রবেশকে যুক্ত করার দাবি জানায় তারা । কাশ্মীর ইশুকে আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য পাকিস্তানের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় । সিয়াচেনে ভারতের উপস্থিতি এবং নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষ স্বাভাবিক ছিল বলে গোটা বিশ্বকে জানায় তারা । যার বিরুদ্ধে ভারতীয় কূটনীতিকরা আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ন্ত্রণরেখায় জটিলতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে লড়াই করেন এবং জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের এই পদক্ষেপই ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা ।

একইসঙ্গে এও জোর দিয়ে জানানো হয়, কোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এরূপ উস্কানিমূলক এবং বিপজ্জনক পদক্ষেপ নেয়নি ভারত । পাকিস্তান আশা করেছিল, বড় দেশগুলি তার পক্ষে থাকবে এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে জোর দেবে । কিন্তু, তা না করে এই গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলি বিশেষত অ্যামেরিকা, পাকিস্তানকে কারগিল থেকে সরে আসার জন্য চাপ দিতে থাকে । ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম না করার সিদ্ধান্ত বিশ্বের কাছে ভারতের সংযম তুলে ধরে ।

জেনেরাল ভি.পি. মালিক তাঁর ‘ভারতের সামরিক দ্বন্দ্ব ও কূটনীতি’ বইটিতে উল্লেখ করেছেন, এ'ক্ষেত্রে ভারতের লক্ষ্য ছিল :

বিশ্বকে বোঝানো যে, ভারত পাকিস্তানের আগ্রাসনের শিকার এবং সিমলা চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল পাকিস্তান ।

অনুপ্রবেশকারীরা জঙ্গি নয়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিয়ামক ছিল ।

পারমাণবিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে 'দায়বদ্ধতা ও সংযম' প্রদর্শন করা ।

জুনের শেষের দিকে, অ্যামেরিকা সরকার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জি-8 সকলেই নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য পাকিস্তানকে হুমকি দিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ায় । এমনকী অর্গানাইজ়েশন অফ ইসলামিক কনফারেন্সে (OIC)-এর পাকিস্তানের বরাবরের মিত্ররাও ভারতের বিরুদ্ধে সে'দেশের এই আগ্রাসনকে নমনীয় করতে উদ্যত হয় । প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ যখন 1999 সালের 4 জুলাই, প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটন ডিসি গিয়েছিলেন, পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক মিত্র ছিল না ।

পরবর্তীকালে জেনেরাল পারভেজ মুশারফ তাঁর বই ‘ইন দ্য লাইন অফ ফায়ার’-এ স্বীকার করেন, কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভারত প্রচেষ্টা চালিয়েছিল এবং "প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ওপর তার প্রভাব পড়ে ।" শরিফ অবশেষে ক্লিনটনের চাপের মুখে নতিস্বীকার করেন এবং যুদ্ধের অবসান ঘটে ।

ভারতের এই কূটনৈতিক জয়ের মূল খেলোয়াড়রা হলেন -

  • অটলবিহারি বাজপেয়ী । শান্ত ও দৃঢ়ভাবে কার্গিল থেকে পাকিস্তানকে বিতাড়িত করার লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেছিলেন তিনি ।
  • জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্র নিশ্চিত করেন, কার্গিলের যুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে সমস্ত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে ।
  • বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী জসওয়ান্ত সিং সামনে থেকে সমস্ত কূটনৈতিক কার্যকলাপের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
  • বিদেশ সচিব কে রঘুনাথ, পাকিস্তানের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেওয়ার জন্য ভারতের কূটনৈতিক যুক্তিগুলি শক্তিশালী করেছিলেন।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.