মুম্বই,13 মে : COVID-19 প্রতিরোধে নবি মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (NMMC) প্রতিরক্ষামূলক গিয়ার কর্পোরেশন কর্মীদের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমানে বণ্টন করেছে বলে দাবি করেছিল। এই প্রতিরক্ষামূলক গিয়ারের সংখ্যা ঠিক কত তা সঠিকভাবে জানাবার জন্য বম্বে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে।
আজ হাইকোর্ট নবি মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনকে এই নির্দেশ দেয় ।মঙ্গলবার NMMC-র স্বাস্থ্য ও সাফাই কর্মীদের দায়ের করা আবেদনে বিচারপতি এস জে কাঠাওয়ালা এই নির্দেশ দেন ।স্বাস্থ্যকর্মী ও সাফাই কর্মীরা হাইকোর্টে অভিযোগ করেন, যে তাঁদের প্রায় হাজার জন কর্মী কোনও প্রতিরক্ষামূলক গিয়ার ছাড়াই কীভাবে প্রতিদিন এই লকডাউনের সময় কাজ করছেন।
এই সংস্থাকে লকডাউন হওয়ার আগে কর্পোরেশনে থাকা মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সংখ্যা এবং লকডাউনের পরে এমন সরঞ্জাম যা কেনা হয়েছিল তার তালিকার একটি হলফনামা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি কাঠাওয়ালা NMMC-কে লকডাউন হওয়ার পর থেকে কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা এই জাতীয় প্রতিরক্ষামূলক গিয়ারের বিবরণও আদালতকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি ট্রেড ইউনিয়ন সমাজ সমতা কামগড় সংঘ বম্বে হাইকোর্টে এই মাসের শুরুর দিকে আবেদন করে।এই ট্রেড ইউনিয়ন প্রায় 4 হাজার চুক্তি ভিত্তিক কর্মীর প্রতিনিধিত্ব করে । সাফাইকাজ, সলিড বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য বিভাগে কাজে এই চুক্তি ভিত্তিক কর্মীরা যুক্ত আছেন । এই কর্মীরা প্রতিরক্ষামূলক গিয়ার ছাড়াই কাজ করে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে এই ট্রেড ইউনিয়ন আদালতে অভিযোগ দায়ের করে । তাই নবি মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনকে এই নির্দেশ দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট ।এই ট্রেড ইউনিয়নের আদালতে আবেদনে এই চুক্তি ভিত্তিক কর্মীদের স্বাস্থ্য নিয়ে গভীর চিন্তা ব্যক্ত করা হয়েছে । আবেদনে বলা হয়েছে, যেহেতু শ্রমিকরা সবাই অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা সরবরাহকারী, তাই তাঁরা লকডাউনের সময় নিজেদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, এই কর্মীরা রাস্তাঘাট ও এলাকা পরিষ্কার করছেন । ঘরে ঘরে গিয়ে প্রতিদিনের আবর্জনা সংগ্রহ করছেন, এবং রাস্তাঘাটের আবর্জনা ও মেডিকেল বর্জ্য পরিস্কার করছেন । তাছাড়া, প্রতিদিন নর্দমা পরিষ্কার করছেন।এবং এই সমস্ত কাজ করছেন পর্যাপ্ত প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম ছাড়াই ।
এই আবেদনে আরও বলা হয়েছে, কর্পোরেশন তার স্থায়ী সাফাই কর্মীদের পরিবহন, খাদ্য, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং অন্যান্য সুবিধার জন্য দৈনিক 300 টাকা করে ভাতা দিচ্ছে, অথচ চুক্তি ভিত্তিক কর্মীরা এই জাতীয় কোনও ভাতা পাচ্ছেন না।এই আবেদনে বলা হয়েছে যে, ক্লিনিং স্টেশনগুলিতে, যেখানে প্রতিটি কর্মচারী কাজ শুরু করার আগে ভাল করে হাত ধুয়ে ফেলার কথা , সেখানে প্রতিটি চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের জন্য কয়েক ফোঁটা স্যানিটাইজার দেওয়া হয়। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়, যে সমস্ত কর্মী হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করছেন তাঁদেরও কোনও মাস্ক ছাড়াই কাজ করতে হচ্ছে ৷ এইসব জায়গায় কর্মরত সাফাই কর্মীরা গ্লাভস ছাড়াই আবর্জনা এবং মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আবেদনকারী সংস্থা আদালতে জানায়, যে তারা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে কর্মীদের এই অবস্থার কথা তুলে ধরে একাধিকবার চিঠি লেখেন । কিন্তু এখনও তাদের আবেদনে কোনও সাড়া দেয়নি কর্পোরেশন ।
আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি কাঠাওয়ালা বলেন," ডেপুটি কমিশনারকে কয়েকটি হ্যান্ড ওয়াশ সেন্টার পরিদর্শন করে শ্রমিকদের প্রকৃত সমস্যাগুলি দেখে তা শীঘ্রই সমাধান করতে বলেন । তবে এরপরেও কর্পোরেশন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।" বিচারপতি কাঠাওয়ালা বলেন,এই পরিস্থিতিতে, লকডাউন ঘোষণার আগে মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের হাতে থাকা ফেস মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সংখ্যা এবং লকডাউন ঘোষণার পর এই সমস্ত সরঞ্জামের সংখ্যা হলফনামা দাখিল করে জানাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এছাড়া সময়ে সময়ে সময়ে এই সমস্ত সরঞ্জাম বিতরণের হিসেব জানাতে বলা হয়েছে ।
কর্পোরেশন সংস্থা যে সমস্ত ফার্ম থেকে প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম ক্রয় করেছে, তাদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করার সঙ্গে যে কর্মীদের এই সরঞ্জাম অর্থাৎ মাস্ক, গ্লাভস দেওয়া হয়েছে তা বম্বে হাইকোর্টকে 14 মে-র মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে ।