ETV Bharat / bharat

সংক্রমণের আশঙ্কায় 20 দিনের বেশি কোয়ারান্টাইনে থাকা কাশ্মীরের ছাত্ররা

author img

By

Published : Apr 4, 2020, 4:27 PM IST

Updated : Apr 4, 2020, 6:03 PM IST

14মার্চের পর ভারত সরকার ইরান থেকে প্রায় 300 ভারতীয় ছাত্রকে দেশে ফিরিয়ে আনে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁদের 14দিন জয়সলমেরের আর্মি ওয়েলনেস সেন্টারে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রাখে । বিশ্ব জুড়ে নোভেল কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর দেখা যায়, মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে ইরান অন্যতম । সে দেশে এই রোগে ইতিমধ্যেই তিন হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে । ইরানে ওই ভয়ঙ্কর অবস্থায় যথেষ্ট সাবধানতা নিয়ে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেলেও এখানে একসঙ্গে এত লোক থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন ওই ছাত্ররা ।

having fear of Corona infection, Kashmiri students returned from Iran for more than 20 days in quarantine
কোরোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় 20দিনের বেশি কোয়রানটাইনে থাকা ইরান ফেরত কাশ্মীরি ছাত্ররা

শ্রীনগর, 4 এপ্রিল : ইরান থেকে ফিরে রাজস্থানের জয়সলমেঢ় শহরে কোয়ারান্টাইনে থাকা কাশ্মীরি ছাত্ররা সরকারি উদাসীনতার জন্য COVID-১৯-এর শিকার হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন ।

ইরানের মেডিক্যাল ছাত্রী আনসাব নবি, যিনি 15মার্চ ভারতে এসে পৌঁছেছেন, দাবি করলেন, “সরকারি উদাসীনতায় জয়সলমেঢ়ের এই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে প্রতি দিনের সঙ্গে যেন আরও অস্থির হয়ে উঠছি । আমাদের এখানে প্রথমে 14দিনের জন্য কোয়ারান্টাইনে রাখা হবে বলে জানানো হয়েছিল । আর এখন 20দিন কেটে গিয়েছে । কেউ কিছুই ঠিক করে বলছে না । মনে হচ্ছে, আমাদের যেন স্রেফ আলাদা করে রেখে দেওয়া হয়েছে ।”

এই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে সবাইকে আলাদা করে রাখা হয়নি বলে অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি । জয়সলমেঢ় থেকে টেলিফোনে ETV ভারতকে নবি বলেছেন, “এখানে আমরা ছাত্ররাই শুধু নয়, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বহু তীর্থযাত্রীও রয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের মধ্যে সম্প্রতি পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে ।”

তাঁর আরও দাবি, সেখানে একটিই খাওয়ার জায়গা এবং 20 জনের জন্য মাত্র দু’টি শৌচাগার রয়েছে । তাঁদের একটা হলঘরের মধ্যে রাখা হয়েছে যা আরও একটি বড় হলঘরের অংশ ।

জয়সলমেঢ়ের কোয়ারান্টাইন সেন্টারে যে শুধুমাত্র কাশ্মীরি ছাত্ররাই নেই, সে কথাও জানিয়েছেন আনসাব । রাজস্থানের যোধপুর এবং জয়সলমেঢ়ের সেন্টারে ঘরে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন আড়াইশোরও বেশি কাশ্মীরি ছাত্র । রাজস্থান সরকারের তথ্য অনুযায়ী, সেন্টারে মোটামুটি 170জন কাশ্মীরি রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে 100জন ইরান থেকে আসা ছাত্র ।

14মার্চের পর ভারত সরকার ইরান থেকে প্রায় 300 ভারতীয় ছাত্রকে দেশে ফিরিয়ে আনে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁদের 14দিন জয়সলমেঢ়ের আর্মি ওয়েলনেস সেন্টারে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রাখে । বিশ্ব জুড়ে নোভেল কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর দেখা যায়, মারাত্মকভাবে আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে ইরান অন্যতম । সে দেশে এই রোগে ইতিমধ্যেই তিন হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে । ইরানে ওই ভয়ঙ্কর অবস্থায় যথেষ্ট সাবধানতা নিয়ে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেলেও এখানে একসঙ্গে এত লোক থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন ওই ছাত্ররা ।

ETV ভারতকে আর এক মেডিক্যাল ছাত্র আবদুল রউফ বলেন, “14মার্চ আমরা ইরান থেকে দিল্লি এসে পৌঁছাই । সেখান থেকে আমাদের জয়সলমেঢ় নিয়ে আসা হয় । সেখানে আমাদের সঙ্গে তীর্থযাত্রীদের একসঙ্গে রাখা হয় । আমরা সবাই জানতাম যে, যেহেতু এই সব তীর্থযাত্রীরা সরাসরি কওম থেকে এসেছেন, তাই তাঁদের মধ্যে কারও এই ভাইরাসের বাহক হওয়ার আশঙ্কা খুবই বেশি । তাই আমরা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করি, যেন আমাদের আলাদা ভাবে রাখার ব্যবস্থা করা হয় । কিন্তু আমাদের সেই অনুরোধ কেউ কানেই তোলেননি ।”

রউফ আরও বলেন, “আমাদের ভয় আরও বেড়ে গিয়েছিল কারণ ওখানকারই একটা ব্লকে মহারাষ্ট্রের ছয় জন ছিলেন যাঁরা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন । কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছিলেন যে, যেহেতু ব্লকগুলি আলাদা, সেই হেতু কোনও ব্লকের কেউ 14 তম দিনে কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুধুমাত্র সেই ব্লকটিকে কোয়ারান্টাইন করা হবে । কিন্তু এখন তাঁরা অন্য নিয়ম করছেন । তাঁরা বলছেন, আমাদের আরও কয়েক দিন এখানে থেকে যেতে হবে । আমরা শুধু এইটুকুই জানতে চাইছি যে, ঠিক কবে আমরা বাড়ি ফিরতে পারব ।”

ETV ভারতের পক্ষ থেকে যখন জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয়, রাজস্থানের কোয়ারান্টাইন সেন্টার থেকে কেন এই ছাত্রদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে না বা কবে তাঁদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে, তখন প্রশাসনের তরফে বলা হয়, দেশজোড়া লকডাউনের জন্য আন্তঃরাজ্য যাতায়াত বন্ধ রয়েছে । আর এই কারণেই বিলম্ব ।

সরকারি এক আধিকারিক বলেন, “আমরা সব সময়ই রাজস্থান সরকারের সঙ্গে কথা বলে চলেছি। কিন্তু পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে। কোয়ারান্টাইনের সময়সীমা পেরনো ছাত্র এবং বাকিদের আমরা ফিরিয়ে আনারা যাবতীয় চেষ্টা করছি।” তিনি আরও বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের আরও কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে এবং প্রশাসনকে আরও কিছুটা সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে । আমরা আমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করছি।”

আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করে সমস্যার সমাধানের জন্য প্রশাসন যে সচেষ্ট তা বলা হলেও জয়সলমেঢ়ে থাকা ছাত্ররা এবং কাশ্মীরে থাকা তাঁদের পরিবারের মধ্যে কোরোনা নিয়ে ভয় ক্রমেই বাড়ছে।

শ্রীনগর, 4 এপ্রিল : ইরান থেকে ফিরে রাজস্থানের জয়সলমেঢ় শহরে কোয়ারান্টাইনে থাকা কাশ্মীরি ছাত্ররা সরকারি উদাসীনতার জন্য COVID-১৯-এর শিকার হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন ।

ইরানের মেডিক্যাল ছাত্রী আনসাব নবি, যিনি 15মার্চ ভারতে এসে পৌঁছেছেন, দাবি করলেন, “সরকারি উদাসীনতায় জয়সলমেঢ়ের এই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে প্রতি দিনের সঙ্গে যেন আরও অস্থির হয়ে উঠছি । আমাদের এখানে প্রথমে 14দিনের জন্য কোয়ারান্টাইনে রাখা হবে বলে জানানো হয়েছিল । আর এখন 20দিন কেটে গিয়েছে । কেউ কিছুই ঠিক করে বলছে না । মনে হচ্ছে, আমাদের যেন স্রেফ আলাদা করে রেখে দেওয়া হয়েছে ।”

এই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে সবাইকে আলাদা করে রাখা হয়নি বলে অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি । জয়সলমেঢ় থেকে টেলিফোনে ETV ভারতকে নবি বলেছেন, “এখানে আমরা ছাত্ররাই শুধু নয়, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বহু তীর্থযাত্রীও রয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের মধ্যে সম্প্রতি পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে ।”

তাঁর আরও দাবি, সেখানে একটিই খাওয়ার জায়গা এবং 20 জনের জন্য মাত্র দু’টি শৌচাগার রয়েছে । তাঁদের একটা হলঘরের মধ্যে রাখা হয়েছে যা আরও একটি বড় হলঘরের অংশ ।

জয়সলমেঢ়ের কোয়ারান্টাইন সেন্টারে যে শুধুমাত্র কাশ্মীরি ছাত্ররাই নেই, সে কথাও জানিয়েছেন আনসাব । রাজস্থানের যোধপুর এবং জয়সলমেঢ়ের সেন্টারে ঘরে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন আড়াইশোরও বেশি কাশ্মীরি ছাত্র । রাজস্থান সরকারের তথ্য অনুযায়ী, সেন্টারে মোটামুটি 170জন কাশ্মীরি রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে 100জন ইরান থেকে আসা ছাত্র ।

14মার্চের পর ভারত সরকার ইরান থেকে প্রায় 300 ভারতীয় ছাত্রকে দেশে ফিরিয়ে আনে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁদের 14দিন জয়সলমেঢ়ের আর্মি ওয়েলনেস সেন্টারে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রাখে । বিশ্ব জুড়ে নোভেল কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর দেখা যায়, মারাত্মকভাবে আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে ইরান অন্যতম । সে দেশে এই রোগে ইতিমধ্যেই তিন হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে । ইরানে ওই ভয়ঙ্কর অবস্থায় যথেষ্ট সাবধানতা নিয়ে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেলেও এখানে একসঙ্গে এত লোক থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন ওই ছাত্ররা ।

ETV ভারতকে আর এক মেডিক্যাল ছাত্র আবদুল রউফ বলেন, “14মার্চ আমরা ইরান থেকে দিল্লি এসে পৌঁছাই । সেখান থেকে আমাদের জয়সলমেঢ় নিয়ে আসা হয় । সেখানে আমাদের সঙ্গে তীর্থযাত্রীদের একসঙ্গে রাখা হয় । আমরা সবাই জানতাম যে, যেহেতু এই সব তীর্থযাত্রীরা সরাসরি কওম থেকে এসেছেন, তাই তাঁদের মধ্যে কারও এই ভাইরাসের বাহক হওয়ার আশঙ্কা খুবই বেশি । তাই আমরা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করি, যেন আমাদের আলাদা ভাবে রাখার ব্যবস্থা করা হয় । কিন্তু আমাদের সেই অনুরোধ কেউ কানেই তোলেননি ।”

রউফ আরও বলেন, “আমাদের ভয় আরও বেড়ে গিয়েছিল কারণ ওখানকারই একটা ব্লকে মহারাষ্ট্রের ছয় জন ছিলেন যাঁরা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন । কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছিলেন যে, যেহেতু ব্লকগুলি আলাদা, সেই হেতু কোনও ব্লকের কেউ 14 তম দিনে কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুধুমাত্র সেই ব্লকটিকে কোয়ারান্টাইন করা হবে । কিন্তু এখন তাঁরা অন্য নিয়ম করছেন । তাঁরা বলছেন, আমাদের আরও কয়েক দিন এখানে থেকে যেতে হবে । আমরা শুধু এইটুকুই জানতে চাইছি যে, ঠিক কবে আমরা বাড়ি ফিরতে পারব ।”

ETV ভারতের পক্ষ থেকে যখন জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয়, রাজস্থানের কোয়ারান্টাইন সেন্টার থেকে কেন এই ছাত্রদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে না বা কবে তাঁদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে, তখন প্রশাসনের তরফে বলা হয়, দেশজোড়া লকডাউনের জন্য আন্তঃরাজ্য যাতায়াত বন্ধ রয়েছে । আর এই কারণেই বিলম্ব ।

সরকারি এক আধিকারিক বলেন, “আমরা সব সময়ই রাজস্থান সরকারের সঙ্গে কথা বলে চলেছি। কিন্তু পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে। কোয়ারান্টাইনের সময়সীমা পেরনো ছাত্র এবং বাকিদের আমরা ফিরিয়ে আনারা যাবতীয় চেষ্টা করছি।” তিনি আরও বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের আরও কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে এবং প্রশাসনকে আরও কিছুটা সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে । আমরা আমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করছি।”

আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করে সমস্যার সমাধানের জন্য প্রশাসন যে সচেষ্ট তা বলা হলেও জয়সলমেঢ়ে থাকা ছাত্ররা এবং কাশ্মীরে থাকা তাঁদের পরিবারের মধ্যে কোরোনা নিয়ে ভয় ক্রমেই বাড়ছে।

Last Updated : Apr 4, 2020, 6:03 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.