কোরাপুট (ওড়িশা), 8 অগাস্ট : ওড়িশার কোরাপুট । পাহাড় ও জঙ্গল ঘেরা একটি জেলা । অধিকাংশই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ । আর্থিকভাবে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন তাঁরা । জীবনধারণের প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধাগুলিই তাঁরা অনেকক্ষেত্রে পান না ৷ এই অবস্থায় স্মার্টফোনের সাহায্যে পড়াশোনা যেন স্বপ্নের মতো ।
'নুন আনতে পান্তা ফুরোই' এই পরিবারগুলির পড়ুয়ারা পড়েছে বিপদে ৷ কারণ, অনলাইনে পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা ৷ ভবিষ্যতেও যদি এভাবেই অনলাইনে পড়াশোনা চলতে থাকে তাহলে কী হবে ? এই চিন্তাই স্থানীয়দের ।
সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সুবি কিরসানি । নতুন পাঠ্য বই পেয়েছে । কিন্তু সেই বই তাকে পড়ানোর কেউ নেই ৷ শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্য সে পাচ্ছে না, তাই নতুন পাঠ্য-বইগুলোও বুঝতে পারছে না । ওই গ্রামেরই বাসিন্দা আখিরানি একজন 'আশাকর্মী'। তাঁর একটা স্মার্ট ফোন আছে, কিন্তু সারাদিন ব্যস্ততার মধ্যে সন্তানদের জন্য সময় করে উঠতে পারেন না ।
আখিরানি জানান, প্রত্যেকে মোবাইল ফোনের ব্যবহার জানেন না । সবার মোবাইলও নেই । অনেকেই পড়াশোনা শেখেননি । তাঁদের স্মার্টফোন নেই, তাঁরা হোয়াটস অ্যাপের ব্যবহার শিখবে কীভাবে । নেটওয়ার্কেরও সমস্যা রয়েছে । বেশিরভাগ সময়েই বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে না ।
ডিজিটাল দুনিয়ায় পা রেখেছি আমরা । প্রযুক্তির সাহায্যে শিক্ষাব্যবস্থা নতুন পথে এগোচ্ছে ৷ লকডাউনে অনলাইন ক্লাস করছে পড়ুয়ারা । কিন্তু দেশের অনেক জায়গায় এখনও অনলাইনে পড়াশোনা অসম্ভব ৷ যেমন কোরাপুটের মতো পিছিয়ে পড়া জেলা । শিশুরা কীভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পড়াশোনা করবে ? জেলা শিক্ষা আধিকারিক রামচন্দ্র নাহকও বিষয়টি মেনে নিয়েছেন । তিনি জানাচ্ছেন, গ্রামীণ এবং শহরের পড়ুয়াদেরও আলাদাভাবে ভাগ করা হয়েছে । শহর এবং গ্রামের নিরিখে 30-70 এর অনুপাত পাওয়া গিয়েছে । আশা করছি, 60 থেকে 70 শতাংশ পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী অনলাইন পড়াশোনার সুবিধা পাচ্ছে ।
অনলাইন ক্লাস... শুনে আধুনিক মনে হলেও বাস্তবের ছবি অনেকটাই আলাদা । খুরদার মতো জেলায় সরকার তাদের পরিকল্পনায় সাফল্য পেয়েছে, কোরাপুটের মতো জেলাতেও অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা সচল করার পরিকল্পনা করছে তারা । তবে দুই জেলার মধ্যে পরিকাঠামোগত পার্থক্য অনেক বেশি । এই পরিস্থিতিতে সরকার কী পদক্ষেপ করবে, সেই আশায় রয়েছে কোরাপুট ৷