হায়দরাবাদ, 22 মে : আমফানের দাপটে কার্যত বিধ্বস্ত দক্ষিণবঙ্গ ৷ উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা, কলকাতা ও পূর্ব মেদিনীপুরে সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড় ৷ যার দাপটে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে 72 জনের ৷ ভেঙে পড়েছে কয়েক হাজার কাঁচা বাড়ি । আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশও । এই পরিস্থিতিতে দুই বাংলার অন্ততপক্ষে 1 কোটি 90 লাখ শিশুর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানাল UNICEF (ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স ইমারজেন্সি ফান্ড) ।
পশ্চিমবঙ্গে কোরোনায় আক্রান্ত ইতিমধ্যেই তিন হাজার ছাড়িয়েছে । মৃত্যুও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে । বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যাটা কম নয় । এই পরিস্থিতিতে আমফান গোদের উপর বিশ ফোঁড়া । আমফানের আতঙ্ক কোথাও যেন ভুলিয়ে দিয়েছে কোরোনা সংক্রমণ ও এর ভয়াবহতাকে । আর এর জেরেই সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে UNICEF ।
আমফানের আগে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকার লক্ষাধিক মানুষকে । রাখা হয়েছে ত্রাণ শিবিরে । সেখানে মানুষ সামাজিক দূরত্ব কতোটা মেনেছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । বাড়ি ফিরলে দু'দিন বাদে যেখানে ন্যূনতম মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও পাওয়া যাবে না, যেখানে ভেসে যাচ্ছে থাকা-খাওয়ার জিনিসপত্র । পরিজন হারানোর আতঙ্ক, সেখানে সেই মুহূর্তে সামাজিক দূরত্ব বা কোরোনার ভয় কতোটা কাজ করতে পারে সেই নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে । ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আমাফানে বাঁচতে গিয়েই বাড়তে পারে কোরোনা সংক্রমণ ।
এবিষয়ে গতকাল UNICEF- এর দক্ষিণ এশিয়ার রিজিওনাল ডিরেক্টর জিন গাফ জানান, "আমরা খুব কাছ থেকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি । যেসব অঞ্চল আমফানের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত, সেখানকার শিশু, তাদের পরিবারের নিরাপত্তাকে সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া হবে ।"
অন্যদিকে, বাংলাদেশের যে এলাকায় আমফান তাণ্ডব চালিয়েছে সেখানে রয়েছে একাধিক রোহিঙ্গা শিবির । এই জনগোষ্ঠীতে ইতিমধ্যেই কোরোনার সংক্রমণ মিলেছে । এবার আমফানের ফলে তাঁদের পরিস্থিতি কেমন, কতটা ক্ষতিগ্রস্ত শিবিরগুলি তার উপর নির্ভর করছে, শিবিরগুলিতে কোরোনা সংক্রমণ কতোটা বাড়বে ।
সব মিলিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিলিত হয়ে UNICEF এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার শিশু ও তাদের পরিবারের উপর নজর রাখছে ।