ETV Bharat / bharat

সংকট COVID-19 ; মন ভালো থাকার উপায়

কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরে হয়তো মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ তৈরি করছে ৷ এই রোগকে কেন্দ্র করে ভয় এবং উদ্বেগ লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে ৷ প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে শক্তিশালী আবেগ তৈরি করছে ৷ মানসিক চাপ মোকাবিলা করতে পারলে আপনি, আপনি যাঁদের খেয়াল রাখেন তাঁরা এবং গোটা সম্প্রদায় শক্তিশালী হবে ৷

mental health
mental health
author img

By

Published : Apr 5, 2020, 2:07 PM IST

Updated : Apr 5, 2020, 4:39 PM IST

হায়দরাবাদ, 5 এপ্রিল : আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতে কোরোনা ভাইরাস প্যানডেমিকের সংক্রমণের প্রভাব মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ভাবে পড়ছে ৷ এই ধরনের পরিস্থিতিতে যখন প্রতি মুহূর্তে সতর্কবার্তা পরিবর্তন হচ্ছে এবং সংবাদমাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়ার নানা কথা শুনে মানুষের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ বাড়ছে ৷ একটি রোগকে কেন্দ্র করে ভয় এবং উদ্বেগ লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে এবং প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে মারাত্মক আবেগ তৈরি করছে৷ এই মানসিক চাপের পরিস্থিতিতে প্রত্যেকে বিভিন্ন ভাবে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে ৷ আপনি এই সংক্রমণের পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তা নির্ভর করছে আপনার জীবনযাত্রার উপর ৷ যে বিষয়টি আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে এবং যে সম্প্রদায়ের মধ্যে আপনি বসবাস করেন, তার উপর ৷

যে সমস্ত সামাজিক বিশেষজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য ও তার উপকার নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা এই সময় মানসিক চাপ ও উদ্বেগ নিয়ে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন ৷ যাঁরা বাড়ি থেকে কাজ করছেন, তাঁদের জন্য গ্লোবাল মেন্টাল হেলথের বিশেষজ্ঞ, ক্রিস আন্ডারহিল ‘রোজকার কাজের পরিকল্পনা’ তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন ৷ কীভাবে মানসিক সুস্থ থাকবেন...

তাঁর ব্যাখ্যা, "সেই কাজগুলিই করুন, যেগুলি আগে করতেন (সংকট তৈরি হওয়ার আগে) ৷ ঘুম থেকে উঠে বিছানা পরিচ্ছন্ন করুন, স্নান করুন, দাড়ি কামান, ব্রেকফাস্ট করুন ইত্যাদি ৷" তাঁর আরও পরামর্শ যে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে কাজ করুন ৷ কাজের মাঝে বিরতি নিন ৷ আন্ডারহিলের প্রস্তাব, কাজ থেকে বিরতি নিয়ে রান্না করুন, বাড়ির কাজ করুন অথবা গান শুনুন ৷ পাশাপাশি তিনি বলেন, "সংবাদ দেখা বা পড়ার সীমা বেঁধে নিন, তাতে উদ্বেগ অনেকটাই কমানো যাবে ৷"

বন্ধু ও পরিবারের যে সমস্ত সদস্য উদ্বিগ্ন, তাঁদের কীভাবে সাহায্য করবেন...

বব, ফিলবিন, Crisis Text Line-এর প্রধান ডেটা বিজ্ঞানী জানিয়েছেন যে এটা এখন একটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা, যেখানে চারিদিকে শুধু অনিশ্চিয়তা ৷ সেখানে বিহ্বলতা আসাটাই স্বাভাবিক ৷ তিনি বলেন, "কারও সঙ্গে কথা বলার সময় দিন, সপ্তাহ এবং বছর এই শব্দগুলি ব্যবহার করলে উদ্বেগ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক ৷ তাই কথা বলার সময় অন্যকে সময়ের মূল্য বোঝান এবং এই পরিস্থিতি চিরকাল থাকবে না এই বিষয়ে আশ্বাস দিন ৷ প্রত্যেকের মধ্যে এই বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে যে আমরা যেমনটা ভাবছি, তেমনটা নয় ৷ আমরা কেউ একা নই ৷ কারও উদ্বেগ কমিয়ে এবং তাঁকে স্বাভাবিক করে তুলতে গেলে তাঁকে বোঝাতে হবে যে তিনি একাই এই পরিস্থিতির শিকার নন ৷ তাহলেই তাঁকে একটি স্বস্তি বোধ করানো যাবে ৷ যদিও আমাদের সকলের জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা কার্যত অসম্ভব ৷ কারণ, এমন অনেকে আছেন যাঁদের উপর এই পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ৷ এর মধ্যে তাঁরাও রয়েছেন, যাঁরা শিশু নির্যাতন বা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হচ্ছেন ৷"

ফিলবিন বলেন, "আমাদের তথ্য বলছে, আর্থিক বিষয় এই পরিস্থিতিতে খুব চাপ তৈরি করতে পারে ৷ ফলে এই পরিস্থিতিতে তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে, যাঁরা কাজ এবং জীবনযাত্রা হারানোর মুখোমুখি হয়েছেন ৷"

কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কী করবেন...

এই প্যানডেমিকের জেরে কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটেছে ৷ তাই কর্মীদের ভালো থাকার বিষয়ে নিয়োগকারীদের খেয়াল রাখতেই হবে ৷ উদাহরণ স্বরূপ, Work it Health এটা নিশ্চিত করে যে কর্মীদের কাছে "নিরাপদ আশ্রয়, পরিবহন এবং নিরাপদে থাকার অন্য সব সুবিধা" আছে কি না ৷ এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ ধরে রাখার উপর জোর দিয়েছেন গবেষকরা ৷ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ধরে রাখতে পারলে মানসিক স্বাস্থ্য থেকে নেতিবাচক প্রভাব কমে যেতে পারে ৷ যেহেতু যোগাযোগ রক্ষা করে চলা এই সময় সবচেয়ে জরুরি ৷

অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলার জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হল :

1. যদি কেউ এই সময় সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন থাকার সময় কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েন, তাহলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং তাঁকে বোঝাতে হবে যে আপনি তাঁর জন্য ভাবছেন ৷

2. তাঁদের কুশল সংবাদ জানার জন্য ফোন করুন ৷

3. বার্তা পাঠান ৷

4. তাঁদের দরজার নিচে কোনও বার্তা লিখে রেখে আসতে পারেন ৷

5. অন্যের মনে আশা জাগানোর জন্য নিজের শক্তিকে কখনও খাটো করে দেখবেন না ৷

শিশুদের পাশে থাকার জন্য এই কাজগুলি করতে পারেন :

1. এই সময় আপনার সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটান ৷ আপনার সন্তান যেভাবে বুঝতে পারবে, সেই ভাবে তাঁদের COVID-19 সম্বন্ধে বুঝিয়ে বলুন এবং প্রশ্নের উত্তর দিন ৷

2.আপনার সন্তান যে সুরক্ষিত আছে, সেই বিষয়ে তাকে আশ্বস্ত করুন ৷ যদি তাদের মন খারাপ হয়, তা বোঝান যে সব ঠিক আছে ৷ কীভাবে আপনি মানসিক চাপ কাটাচ্ছেন, তা তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিন ৷ তাহলে তারা আপনার থেকে শিখতে পারবে ৷

3.পরিবারের সঙ্গে সংবাদ এবং সোশাল মিডিয়ার যোগাযোগ একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বেঁধে দিন ৷ শিশুরা যা শুনছে, তারা ভুল ব্যাখ্যা করতে পারে এবং তারা যেটা বুঝতে পারছে না, সেটা নিয়ে ভয়ও পেতে পারে ৷

হায়দরাবাদ, 5 এপ্রিল : আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতে কোরোনা ভাইরাস প্যানডেমিকের সংক্রমণের প্রভাব মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ভাবে পড়ছে ৷ এই ধরনের পরিস্থিতিতে যখন প্রতি মুহূর্তে সতর্কবার্তা পরিবর্তন হচ্ছে এবং সংবাদমাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়ার নানা কথা শুনে মানুষের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ বাড়ছে ৷ একটি রোগকে কেন্দ্র করে ভয় এবং উদ্বেগ লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে এবং প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে মারাত্মক আবেগ তৈরি করছে৷ এই মানসিক চাপের পরিস্থিতিতে প্রত্যেকে বিভিন্ন ভাবে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে ৷ আপনি এই সংক্রমণের পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তা নির্ভর করছে আপনার জীবনযাত্রার উপর ৷ যে বিষয়টি আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে এবং যে সম্প্রদায়ের মধ্যে আপনি বসবাস করেন, তার উপর ৷

যে সমস্ত সামাজিক বিশেষজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য ও তার উপকার নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা এই সময় মানসিক চাপ ও উদ্বেগ নিয়ে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন ৷ যাঁরা বাড়ি থেকে কাজ করছেন, তাঁদের জন্য গ্লোবাল মেন্টাল হেলথের বিশেষজ্ঞ, ক্রিস আন্ডারহিল ‘রোজকার কাজের পরিকল্পনা’ তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন ৷ কীভাবে মানসিক সুস্থ থাকবেন...

তাঁর ব্যাখ্যা, "সেই কাজগুলিই করুন, যেগুলি আগে করতেন (সংকট তৈরি হওয়ার আগে) ৷ ঘুম থেকে উঠে বিছানা পরিচ্ছন্ন করুন, স্নান করুন, দাড়ি কামান, ব্রেকফাস্ট করুন ইত্যাদি ৷" তাঁর আরও পরামর্শ যে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে কাজ করুন ৷ কাজের মাঝে বিরতি নিন ৷ আন্ডারহিলের প্রস্তাব, কাজ থেকে বিরতি নিয়ে রান্না করুন, বাড়ির কাজ করুন অথবা গান শুনুন ৷ পাশাপাশি তিনি বলেন, "সংবাদ দেখা বা পড়ার সীমা বেঁধে নিন, তাতে উদ্বেগ অনেকটাই কমানো যাবে ৷"

বন্ধু ও পরিবারের যে সমস্ত সদস্য উদ্বিগ্ন, তাঁদের কীভাবে সাহায্য করবেন...

বব, ফিলবিন, Crisis Text Line-এর প্রধান ডেটা বিজ্ঞানী জানিয়েছেন যে এটা এখন একটা বিশ্বব্যাপী সমস্যা, যেখানে চারিদিকে শুধু অনিশ্চিয়তা ৷ সেখানে বিহ্বলতা আসাটাই স্বাভাবিক ৷ তিনি বলেন, "কারও সঙ্গে কথা বলার সময় দিন, সপ্তাহ এবং বছর এই শব্দগুলি ব্যবহার করলে উদ্বেগ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক ৷ তাই কথা বলার সময় অন্যকে সময়ের মূল্য বোঝান এবং এই পরিস্থিতি চিরকাল থাকবে না এই বিষয়ে আশ্বাস দিন ৷ প্রত্যেকের মধ্যে এই বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে যে আমরা যেমনটা ভাবছি, তেমনটা নয় ৷ আমরা কেউ একা নই ৷ কারও উদ্বেগ কমিয়ে এবং তাঁকে স্বাভাবিক করে তুলতে গেলে তাঁকে বোঝাতে হবে যে তিনি একাই এই পরিস্থিতির শিকার নন ৷ তাহলেই তাঁকে একটি স্বস্তি বোধ করানো যাবে ৷ যদিও আমাদের সকলের জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা কার্যত অসম্ভব ৷ কারণ, এমন অনেকে আছেন যাঁদের উপর এই পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ৷ এর মধ্যে তাঁরাও রয়েছেন, যাঁরা শিশু নির্যাতন বা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হচ্ছেন ৷"

ফিলবিন বলেন, "আমাদের তথ্য বলছে, আর্থিক বিষয় এই পরিস্থিতিতে খুব চাপ তৈরি করতে পারে ৷ ফলে এই পরিস্থিতিতে তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে, যাঁরা কাজ এবং জীবনযাত্রা হারানোর মুখোমুখি হয়েছেন ৷"

কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কী করবেন...

এই প্যানডেমিকের জেরে কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটেছে ৷ তাই কর্মীদের ভালো থাকার বিষয়ে নিয়োগকারীদের খেয়াল রাখতেই হবে ৷ উদাহরণ স্বরূপ, Work it Health এটা নিশ্চিত করে যে কর্মীদের কাছে "নিরাপদ আশ্রয়, পরিবহন এবং নিরাপদে থাকার অন্য সব সুবিধা" আছে কি না ৷ এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ ধরে রাখার উপর জোর দিয়েছেন গবেষকরা ৷ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ধরে রাখতে পারলে মানসিক স্বাস্থ্য থেকে নেতিবাচক প্রভাব কমে যেতে পারে ৷ যেহেতু যোগাযোগ রক্ষা করে চলা এই সময় সবচেয়ে জরুরি ৷

অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলার জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হল :

1. যদি কেউ এই সময় সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন থাকার সময় কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েন, তাহলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং তাঁকে বোঝাতে হবে যে আপনি তাঁর জন্য ভাবছেন ৷

2. তাঁদের কুশল সংবাদ জানার জন্য ফোন করুন ৷

3. বার্তা পাঠান ৷

4. তাঁদের দরজার নিচে কোনও বার্তা লিখে রেখে আসতে পারেন ৷

5. অন্যের মনে আশা জাগানোর জন্য নিজের শক্তিকে কখনও খাটো করে দেখবেন না ৷

শিশুদের পাশে থাকার জন্য এই কাজগুলি করতে পারেন :

1. এই সময় আপনার সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটান ৷ আপনার সন্তান যেভাবে বুঝতে পারবে, সেই ভাবে তাঁদের COVID-19 সম্বন্ধে বুঝিয়ে বলুন এবং প্রশ্নের উত্তর দিন ৷

2.আপনার সন্তান যে সুরক্ষিত আছে, সেই বিষয়ে তাকে আশ্বস্ত করুন ৷ যদি তাদের মন খারাপ হয়, তা বোঝান যে সব ঠিক আছে ৷ কীভাবে আপনি মানসিক চাপ কাটাচ্ছেন, তা তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিন ৷ তাহলে তারা আপনার থেকে শিখতে পারবে ৷

3.পরিবারের সঙ্গে সংবাদ এবং সোশাল মিডিয়ার যোগাযোগ একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বেঁধে দিন ৷ শিশুরা যা শুনছে, তারা ভুল ব্যাখ্যা করতে পারে এবং তারা যেটা বুঝতে পারছে না, সেটা নিয়ে ভয়ও পেতে পারে ৷

Last Updated : Apr 5, 2020, 4:39 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.