ETV Bharat / bharat

কোরোনা : বিপর্যয়ের নাম জনসমাগম - কোরোনাভাইরাস সুরক্ষা

এখনও পর্যন্ত এ দেশে ভাইরাসের প্রভাব ততটা মারাত্মক না হলেও নিজ়ামউদ্দিনের মতো ঘটনা কিন্তু এই বিপর্যয়ে ইন্ধন জোগাতে পারে । তবলিঘি জামাতের পর কেন্দ্র সারা দেশে মোট ২০টি এমন স্থান চিহ্নিত করেছে, যেখান থেকে ভাইরাস দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে । দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরল এবং রাজস্থান-সহ মোট ছ’টি রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। এর ফলে লকডাউন আরও কয়েক সপ্তাহ বেড়েযাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Corona : The name of the disaster is public meeting
কোরোনা : বিপর্যয়ের নাম জনসমাগম
author img

By

Published : Apr 5, 2020, 11:14 AM IST

Updated : Apr 5, 2020, 2:13 PM IST

ছয় সপ্তাহ আগে পর্যন্ত মাত্র কয়েকটি কোভিড-১৯ রোগীকে নিয়ে পরিস্থিতি খুব সুন্দর ভাবে মোকাবিলা করছিল দক্ষিণ কোরিয়া । কিন্তু সব হিসাব উল্টে দিল ‘পেশেন্ট ৩১’। কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক মহিলা, যাঁকে কেস ৩১ বা পেশেন্ট ৩১ বলা হয়, তিনি অসতর্ক ভাবে গির্জা, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন, যেখানে বহু মানুষের ভিড় ছিল । তাঁর এই ভুলের ফলে হাজার হাজার দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়েন । এর পরেই লক্ষণহীন কেরিয়ারদের সম্পর্কে সতর্ক হয় প্রশাসন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয় । একই রকম ভাবে, ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে নিজ়ামউদ্দিন মরকজের পর । ১৩ থেকে ১৫ মার্চ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ নয়াদিল্লির নিজ়ামউদ্দিনে এক বিশাল ধর্মীয় সমাবেশে অংশ নেন । সেখানে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক বিদেশিও । নিজ়ামউদ্দিন তবলিঘি জামাতে যোগ দেওয়া ছয় ইন্দোনেশীয় কোরোনা আক্রান্ত প্রমাণিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তেলাঙ্গানা সরকার কেন্দ্রকে সতর্ক করে । এরপরই সরকার তেলঙ্গানার ছয় কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক সংক্রমণের ঘটনায় নিজ়ামউদ্দিন যোগ খুঁজে পায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীরা জানান যে, মরকজে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত এই সব যোগদানকারী কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা জানা যাবে, মোট আক্রান্তের সংখ্যা বোঝা অসম্ভব হয়ে যাবে। আক্রান্ত এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাঁদের পরীক্ষা করা, আক্রান্ত এবং তাঁদের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের কোয়রান্টাইনে পাঠানো একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

কোভিড-১৯ এর জেরে ১২ মার্চ থেকে দিল্লিতে জন স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। নিষিদ্ধ হয় বড় জমায়েত ও সমাবেশ। প্রথমে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল, ২০০ জনের বেশি মানুষের জমায়েতে । কিন্তু এক দিনের মধ্যেই তা কমিয়ে ৫০ করে দেওয়া হয় । এর পরেও কার বা কাদের চক্রান্তে বা কীভাবে হাজার হাজার লোকের জমায়েত করতে সক্ষম হল তবলিঘি জামাত, সে প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই সমাবেশের আহ্বায়ক মৌলানা মহম্মদ সাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই তিনি নিরুদ্দেশ । দিল্লি সরকার নির্দেশিকা প্রকাশ নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও বহু বিদেশফেরত, বিশেষ করে কোরোনা আক্রান্ত মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা বিদেশিরা ক্রমাগত তাঁদের ভ্রমণ নথি গোপন করছেন । ৩ মার্চ থেকে দিল্লি সরকার আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ পর্যটক ভিসার ব্যবস্থা করে । দিল্লিতে যখন দু’জন বিদেশি পর্যটক কোরোনা পরীক্ষায় আক্রান্ত হিসাবে ধরা পড়লেন এবং এক জন কোয়মবতুরে মারা গেলেন, তখনও প্রশাসন যদি সতর্ক থাকত, তা হলে এত বড় বিপর্যয় ঠেকানো যেত । নিজ়ামউদ্দিনের ঘটনার পর প্রশাসনকে এখন যে কোনও রকম জমায়েতের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে । দেখতে হবে, দেশজোড়া লকডাউন চলা পর্যন্ত যেন কোনও রকম ভাবেই কোনও জন সমাবেশ না হয় । মনে রাখতে হবে, পরিযায়ী শ্রমিকদের এই যাত্রা শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের জন্যই ভয়ের নয়, তা সারা দেশের পক্ষেই এক অশনি সঙ্কেত ।

যে তীব্র গতিতে নোভেল কোরোনা ভাইরাস বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে তা অত্যন্ত চিন্তার । সারা বিশ্বে এই ভাইরাসের হানায় ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ১১ লক্ষ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ । মৃত্যু হয়েছে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষের । প্রথম দিকে এই সংক্রমণকে তেমন গুরুত্ব না দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বলছে, কোরোনায় সে দেশে মৃত্যু হবে আড়াই লক্ষ মানুষের । আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরনোর পর ইতালিতে পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে । এখনও পর্যন্ত এ দেশে ভাইরাসের প্রভাব ততটা মারাত্মক না হলেও নিজ়ামউদ্দিনের মতো ঘটনা কিন্তু এই বিপর্যয়ে ইন্ধন জোগাতে পারে । তবলিঘি জামাতের পর কেন্দ্র সারা দেশে মোট ২০টি এমন স্থান চিহ্নিত করেছে, যেখান থেকে ভাইরাস দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে । দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরল এবং রাজস্থান-সহ মোট ছ’টি রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। বিপর্যয় থেকে বাঁচতে কী করণীয়, তা রাজ্যগুলির কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । এর ফলে লকডাউন আরও কয়েক সপ্তাহ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কোরোনা পরীক্ষার নিশ্ছিদ্র ব্যবস্থা করে, আক্রান্তদের কোয়রান্টাইনে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে । দেখতে হবে, এই পরিকল্পনায় যেন কোনও ফাঁক না থাকে । সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে, কোভিড-১৯ এর চেয়ে বড় সমস্যা হল আতঙ্ক । এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে সরকারের তরফে একটা ভুল সারা দেশকে বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে ।

ছয় সপ্তাহ আগে পর্যন্ত মাত্র কয়েকটি কোভিড-১৯ রোগীকে নিয়ে পরিস্থিতি খুব সুন্দর ভাবে মোকাবিলা করছিল দক্ষিণ কোরিয়া । কিন্তু সব হিসাব উল্টে দিল ‘পেশেন্ট ৩১’। কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক মহিলা, যাঁকে কেস ৩১ বা পেশেন্ট ৩১ বলা হয়, তিনি অসতর্ক ভাবে গির্জা, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন, যেখানে বহু মানুষের ভিড় ছিল । তাঁর এই ভুলের ফলে হাজার হাজার দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়েন । এর পরেই লক্ষণহীন কেরিয়ারদের সম্পর্কে সতর্ক হয় প্রশাসন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয় । একই রকম ভাবে, ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে নিজ়ামউদ্দিন মরকজের পর । ১৩ থেকে ১৫ মার্চ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ নয়াদিল্লির নিজ়ামউদ্দিনে এক বিশাল ধর্মীয় সমাবেশে অংশ নেন । সেখানে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক বিদেশিও । নিজ়ামউদ্দিন তবলিঘি জামাতে যোগ দেওয়া ছয় ইন্দোনেশীয় কোরোনা আক্রান্ত প্রমাণিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তেলাঙ্গানা সরকার কেন্দ্রকে সতর্ক করে । এরপরই সরকার তেলঙ্গানার ছয় কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক সংক্রমণের ঘটনায় নিজ়ামউদ্দিন যোগ খুঁজে পায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীরা জানান যে, মরকজে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত এই সব যোগদানকারী কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা জানা যাবে, মোট আক্রান্তের সংখ্যা বোঝা অসম্ভব হয়ে যাবে। আক্রান্ত এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাঁদের পরীক্ষা করা, আক্রান্ত এবং তাঁদের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের কোয়রান্টাইনে পাঠানো একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

কোভিড-১৯ এর জেরে ১২ মার্চ থেকে দিল্লিতে জন স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। নিষিদ্ধ হয় বড় জমায়েত ও সমাবেশ। প্রথমে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল, ২০০ জনের বেশি মানুষের জমায়েতে । কিন্তু এক দিনের মধ্যেই তা কমিয়ে ৫০ করে দেওয়া হয় । এর পরেও কার বা কাদের চক্রান্তে বা কীভাবে হাজার হাজার লোকের জমায়েত করতে সক্ষম হল তবলিঘি জামাত, সে প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই সমাবেশের আহ্বায়ক মৌলানা মহম্মদ সাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই তিনি নিরুদ্দেশ । দিল্লি সরকার নির্দেশিকা প্রকাশ নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও বহু বিদেশফেরত, বিশেষ করে কোরোনা আক্রান্ত মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা বিদেশিরা ক্রমাগত তাঁদের ভ্রমণ নথি গোপন করছেন । ৩ মার্চ থেকে দিল্লি সরকার আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ পর্যটক ভিসার ব্যবস্থা করে । দিল্লিতে যখন দু’জন বিদেশি পর্যটক কোরোনা পরীক্ষায় আক্রান্ত হিসাবে ধরা পড়লেন এবং এক জন কোয়মবতুরে মারা গেলেন, তখনও প্রশাসন যদি সতর্ক থাকত, তা হলে এত বড় বিপর্যয় ঠেকানো যেত । নিজ়ামউদ্দিনের ঘটনার পর প্রশাসনকে এখন যে কোনও রকম জমায়েতের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে । দেখতে হবে, দেশজোড়া লকডাউন চলা পর্যন্ত যেন কোনও রকম ভাবেই কোনও জন সমাবেশ না হয় । মনে রাখতে হবে, পরিযায়ী শ্রমিকদের এই যাত্রা শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের জন্যই ভয়ের নয়, তা সারা দেশের পক্ষেই এক অশনি সঙ্কেত ।

যে তীব্র গতিতে নোভেল কোরোনা ভাইরাস বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে তা অত্যন্ত চিন্তার । সারা বিশ্বে এই ভাইরাসের হানায় ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ১১ লক্ষ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ । মৃত্যু হয়েছে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষের । প্রথম দিকে এই সংক্রমণকে তেমন গুরুত্ব না দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বলছে, কোরোনায় সে দেশে মৃত্যু হবে আড়াই লক্ষ মানুষের । আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরনোর পর ইতালিতে পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে । এখনও পর্যন্ত এ দেশে ভাইরাসের প্রভাব ততটা মারাত্মক না হলেও নিজ়ামউদ্দিনের মতো ঘটনা কিন্তু এই বিপর্যয়ে ইন্ধন জোগাতে পারে । তবলিঘি জামাতের পর কেন্দ্র সারা দেশে মোট ২০টি এমন স্থান চিহ্নিত করেছে, যেখান থেকে ভাইরাস দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে । দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরল এবং রাজস্থান-সহ মোট ছ’টি রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। বিপর্যয় থেকে বাঁচতে কী করণীয়, তা রাজ্যগুলির কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । এর ফলে লকডাউন আরও কয়েক সপ্তাহ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কোরোনা পরীক্ষার নিশ্ছিদ্র ব্যবস্থা করে, আক্রান্তদের কোয়রান্টাইনে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে । দেখতে হবে, এই পরিকল্পনায় যেন কোনও ফাঁক না থাকে । সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে, কোভিড-১৯ এর চেয়ে বড় সমস্যা হল আতঙ্ক । এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে সরকারের তরফে একটা ভুল সারা দেশকে বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে ।

Last Updated : Apr 5, 2020, 2:13 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.