হাথরস, 3 অক্টোবর : ড্যামেজ কন্ট্রোলে গতকাল থেকেই নেমেছিলেন । হাথরসের পুলিশ সুপার ও ডেপুটি পুলিশ সুপার সহ মোট পাঁচ পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছিলেন । এবার হাথরসে নির্যাতিতার মৃত্যুর তদন্তভার CBI -এর হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ।
অভিযোগ উঠেছে, হাথরসের ঘটনাকে শুরু থেকেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছিল । মাঝে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল সংবাদমাধ্যমকেও । নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এক কিলোমিটার দূর থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল ডেরেক ও'ব্রায়েন ও অন্য তৃণমূল সাংসদদের । গ্রামে ঢোকার পথে বাধা দেওয়া হয়েছিল রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকেও । আটক পর্যন্ত করা হয়েছিল ।
পুলিশের অবশ্য দাবি ছিল, ফরেনসিক রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও উল্লেখ নেই । তবে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছিল, অভিযুক্ত চারজন উঁচু জাতের হওয়ার কারণেই কি তাদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে?
এদিকে বাড়তে থাকা চাপের মুখে, আজ সকালে গ্রামে ঢোকার মুখ থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে দেয় পুলিশ । ঢুকতে দেওয়া হয় সংবাদমাধ্যমকে । যদিও প্রশাসনের দাবি, নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছিল ।
আজ সকালে সংবাদমাধ্যম গ্রামে ঢুকতেই বেরিয়ে আসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নির্যাতিতার পরিবার । নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল । এমনকী টাকা নিয়ে আপসের কথা বলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে পরিবার । মামলা তুলতে বারবার চাপ দেওয়া হয়েছে । গতকালও তারা বাইরে বের হতে পারেনি । বাড়িতে সবজি নেই । তা কিনতে যেতে পারেনি বলেও জানায় তারা ।
আরও পড়ুন : হাথরসে অবশেষে সংবাদমাধ্যম, প্রশাসনের বিরুদ্ধে টাকা দেওয়ার অভিযোগ পরিবারের
তখনও বিরোধী দলের কাউকে গ্রামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি । দুপুর তখন প্রায় আড়াইটা । হাথরসের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা । প্রিয়াঙ্কার হাতে স্টিয়ারিং । পাশেই সামনের সিটে বসে রাহুল । পিছনে একটি বাসে রয়েছেন জনা তিরিশ সাংসদ । কিন্তু মাঝপথেই আটকে দেওয়া হয় রাহুল-প্রিয়াঙ্কাকে । সৌজন্যে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ । মাঝরাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন রাহুল । এর প্রায় বেশ কয়েকঘণ্টা পরে গ্রামে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় রাহুল-প্রিয়াঙ্কাদের । তবে পাঁচজনের বেশি প্রবেশ নিষেধ ছিল ।
নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা । পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, "পরিবারের লোকেরা তাঁদের মেয়েকে শেষবারের জন্য দেখার সুযোগটুকু পায়নি । যোগী আদিত্যনাথকে তাঁর দায়িত্ব বুঝতে হবে । যতক্ষণ না বিচার পাচ্ছি, আমরা আমাদের লড়াই জারি রাখব ।" একই সুর রাহুলের গলাতেও । বলেন, " কোনও শক্তিই নির্যাতিতার পরিবারের কণ্ঠরোধ করতে পারবে না ।"
আরও পড়ুন : ভাঙল ব্যারিকেড, পুড়ল যোগীর কুশপুতল; বাম-কংগ্রেসের বিক্ষোভে উত্তাল ধর্মতলা
বিরোধীদের থেকে একের পর এক চাপ । রাহুল-প্রিয়াঙ্কা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরোনোর পরেই চাপের মুখে নতিস্বীকার করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ । নির্যাতিতার মৃত্যুর তদন্তভার এবার CBI -এর হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করলেন । তবে সংবাদমাধ্যমের একাংশে প্রকাশ, CBI তদন্তে খুশি নয় নির্যাতিতার পরিবার । সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাইছে তারা ।