ETV Bharat / bharat

কোরোনা নিয়ে বিশ্বে উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধ; মোকাবিলায় চিন, দক্ষিণ কোরিয়া বড় উদাহরণ - COVID 19

কোরোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যুদ্ধটা লড়ছে চিন । সিঙ্গাপুর সর্বোচ্চ নিরাপদ পদ্ধতিতে মৃত্যু আটকানোর কাজ করছে ৷ দক্ষিণ কোরিয়া দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে নয়া নজির তৈরি করেছে ৷

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী
author img

By

Published : Mar 19, 2020, 9:08 PM IST

'প্রস্তুতি'ই সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় অস্ত্র !

কোরোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যুদ্ধটা লড়ছে চিন । বড় আকারে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য তারা তাদের সমস্ত শক্তি, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যদলকে একত্রিত করে ফেলেছে । একইভাবে সিঙ্গাপুর সর্বোচ্চ নিরাপদ পদ্ধতিতে মৃত্যু আটকানোর কাজ করছে ৷ দক্ষিণ কোরিয়া দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে নয়া নজির তৈরি করেছে ৷ এই দেশগুলি যেভাবে কোরোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, বিশ্বের অন্য দেশগুলির উচিত সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করা ৷

চিনের প্রযুক্তিগত শক্তি

চিনে বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা সারাদিন ধরে কাজ করছেন ৷ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়েকদিনের বদলে অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দ্রুততার সঙ্গে কোরোনার উপস্থিতি নির্ধারণ করে চলেছেন ৷ আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (AI), রোবোট, অ্যাপ, ড্রোন, নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি এবং মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার মতো প্রযুক্তির ব্যবহার করে তারা এই কাজ করছে ৷

ইউনিক অ্যাপ

চিনের যে 200টি শহরে সাধারণত মানুষ যাতায়াত করেন, সেখানে কোরোনা ভাইরাসের উপস্থিতি রঙিন ম্যাপের সাহায্যে একটি অ্যাপের মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছে বিখ্যাত ই-কর্মাস সংস্থা হাংঝাউ-এর তৈরি একটি অ্যাপ ৷ এই অ্যাপ 20 কোটি মানুষ ব্যবহার করছেন ৷ ওই অ্যাপে সবুজ রংয়ের মাধ্যমে সুরক্ষিত এবং সংক্রমণহীন এলাকাকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ তাতে বোঝানো হচ্ছে, কোথায় কোরোনা সংক্রমণের ভয় নেই ৷ কোথায় মানুষ নিশ্চিন্তে যেতে পারে এবং সুরক্ষিতভাবে থাকতে পারে ৷ যদি ম্যাপের হলুদ অংশে কেউ গিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে সাতদিন কোথাও না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ৷ যদিও সংক্রমিত এলাকায় কেউ চলে গেলে, তাঁদের অন্তত 14 দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ৷

COVID-19 অ্যাপ চিন সরকারের তরফে আনা হয়েছে ৷ সমীক্ষা করার সময় যদি দেখা যায়, কেউ COVID-19 আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যাতায়াত করেছেন, তাহলে তাঁর যাতায়াতের পথ, শহর এবং পরিবহণ যানের সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করা হচ্ছে, যাতে এই তথ্য সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য ব্যবহার করা যায় ৷ যদিও স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ আর পড়ুয়ারা লাইন স্ট্রিমিং অ্যাপের মাধ্যমে লেখাপড়া করছে ৷

ই-কমার্স সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা

বড় খাবার সরবরাহ অ্যাপ, আলিবাবার মতো ই-কমার্স সংস্থা হাসপাতাল এবং কোয়ারেন্টাইন করে রাখা এলাকায় চালকহীন গাড়ির সাহায্যে খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছে ৷

বামপন্থী কর্মীদের পরিষেবা

চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা কয়েক বিলিয়ন ৷ উহানের এক কোটি 20 লাখ মানুষ তাঁদের বাড়িতেই থাকছেন ৷ সেখানে খাবার পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করছেন পার্টির সদস্যরা ৷

আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স, রোবট এবং ড্রোন

বেজিংয়ের একটি সংস্থা Artificial Intelligent প্রযুক্তির ব্যবহার করে যেখানে অনেক মানুষের জমায়েত হচ্ছে, সেখানকার তাপমাত্রা মেপে নিচ্ছে ৷ দু’টো AI সংস্থা পুলিশকে জানাচ্ছে যে, অফিসে এবং উন্মুক্ত জায়গায় কারা মাস্কের ব্যবহার করছে না ৷ আধিকারিকরা লাউডস্পিকার রয়েছে এমন ড্রোন ব্যবহার করে মানুষকে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে ৷

রোবট, স্মার্ট হেলমেট, ড্রোনে লাগানো থার্মাল ক্যামেরা, মুখ চিহ্নিত করার ক্যামেরা বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ স্মার্ট হেলমেট ব্যবহার করলেই জানা যাচ্ছে পাঁচ মিটারের মধ্যে কেউ জ্বর নিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন কি না !

রোবটের মাধ্যমে চিকিৎসা সামগ্রী পরিবহণ করা হচ্ছে, ভাইরাস মারার স্প্রে দেওয়া হচ্ছে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হচ্ছে ৷ রোগ নির্ণয় এবং টীকাকরণের কাজ করতেও ব্যবহার করা হচ্ছে AI-এর ৷

টেলিকম পরিষেবা

চিনের প্রযুক্তি সংস্থা এবং মোবাইল অপারেটরগুলি সবসময় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে গ্রাহকের তথ্য জানায় ৷ এর ফলে সরকারের পক্ষে বিভিন্ন বিষয় জানা অনেক সহজ হয় ৷ উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে যে, যদি ওয়েন ঝাউয়ের কোনও নুডলস বিক্রেতা আক্রান্ত হন ৷ তাহলে সেই দোকানে যাওয়া ৩ হাজার মানুষের ফোনের তথ্য থেকে তা জানতে পারে টেলিফোন সংস্থা ৷ তখন তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়ে দেয় ৷

মোকাবিলার জন্য সিঙ্গাপুরের কৌশলই সেরা

যেহেতু বিশ্বের 100টি দেশ থেকে পর্যটকরা আসেন, তাই সিঙ্গাপুরই সেই দেশ যাদের আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক ৷ এটা অবশ্যই আকর্ষণীয় তথ্য যে কীভাবে সেখানে কোরোনা নিয়ন্ত্রণ করা হল ৷ জানুয়ারি মাসের 23 তারিখ সিঙ্গাপুরের উহানে একজন বয়স্ক ব্যক্তি (66) কোরোনায় আক্রান্ত হতেই সরকার সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করে ৷

সরকার সঙ্গে সঙ্গে কমলা সতর্কতা জারি করে ৷ এটা লাল সতর্কতা থেকে একধাপ নিচে ৷ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া আটকাতে স্কুল, বড় আকারে ডিনারের অনুষ্ঠান, বড় জমায়েত এবং চিনের নতুন বছর উদযাপনের অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয় ৷ সরকারি তরফে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয় ৷ সেখানেই সাবধানতা অবলম্বনের বার্তা দেওয়া হয়, যাতে গুজবের জেরে মানুষ সমস্যায় না পড়ে ৷

সরকারি কর্মচারীদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, তাঁরা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা ৷ চিনের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ চিনে যাওয়া এবং চিন থেকে আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ৷ আকাশ, সড়ক এবং জলপথে নিয়মিত নজরদারি শুরু হয় ৷ যাঁরা কোরোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ফিরছেন, তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে থাকা একেবারে বাধ্যতামূলক করা হয় ৷

দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ

পাঁচ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন করে চার হাজার আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে, যাঁদের মধ্যে 67 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর হার 3.4 শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া এই হার এক শতাংশেরও কম ৷ ছয় ঘণ্টার মধ্যে রোগ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করাই ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার কৌশল ৷

প্রতিদিন 20 হাজার লোকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে ৷ দেশজুড়ে সরকারি এবং বেসরকারি গবেষণাগারে 24x7 জুড়ে কাজ করার জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে ৷ এই নেটওয়ার্কই জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবলম্বন করছে ৷ প্রতি সপ্তাহে 1 লাখ 40 হাজার নমুনা পরীক্ষা করার জন্য কিট প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ৷ এগুলি 98 শতাংশ নিশ্চয়তার সঙ্গে কোরোনা সংক্রমণ নির্ণয় করতে পারছে ৷ বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এভাবেই গোটা বিশ্বজুড়ে মারাত্মক কোরোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হচ্ছে ৷

'প্রস্তুতি'ই সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় অস্ত্র !

কোরোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যুদ্ধটা লড়ছে চিন । বড় আকারে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য তারা তাদের সমস্ত শক্তি, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যদলকে একত্রিত করে ফেলেছে । একইভাবে সিঙ্গাপুর সর্বোচ্চ নিরাপদ পদ্ধতিতে মৃত্যু আটকানোর কাজ করছে ৷ দক্ষিণ কোরিয়া দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে নয়া নজির তৈরি করেছে ৷ এই দেশগুলি যেভাবে কোরোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, বিশ্বের অন্য দেশগুলির উচিত সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করা ৷

চিনের প্রযুক্তিগত শক্তি

চিনে বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা সারাদিন ধরে কাজ করছেন ৷ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়েকদিনের বদলে অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দ্রুততার সঙ্গে কোরোনার উপস্থিতি নির্ধারণ করে চলেছেন ৷ আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (AI), রোবোট, অ্যাপ, ড্রোন, নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি এবং মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার মতো প্রযুক্তির ব্যবহার করে তারা এই কাজ করছে ৷

ইউনিক অ্যাপ

চিনের যে 200টি শহরে সাধারণত মানুষ যাতায়াত করেন, সেখানে কোরোনা ভাইরাসের উপস্থিতি রঙিন ম্যাপের সাহায্যে একটি অ্যাপের মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছে বিখ্যাত ই-কর্মাস সংস্থা হাংঝাউ-এর তৈরি একটি অ্যাপ ৷ এই অ্যাপ 20 কোটি মানুষ ব্যবহার করছেন ৷ ওই অ্যাপে সবুজ রংয়ের মাধ্যমে সুরক্ষিত এবং সংক্রমণহীন এলাকাকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ তাতে বোঝানো হচ্ছে, কোথায় কোরোনা সংক্রমণের ভয় নেই ৷ কোথায় মানুষ নিশ্চিন্তে যেতে পারে এবং সুরক্ষিতভাবে থাকতে পারে ৷ যদি ম্যাপের হলুদ অংশে কেউ গিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে সাতদিন কোথাও না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ৷ যদিও সংক্রমিত এলাকায় কেউ চলে গেলে, তাঁদের অন্তত 14 দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ৷

COVID-19 অ্যাপ চিন সরকারের তরফে আনা হয়েছে ৷ সমীক্ষা করার সময় যদি দেখা যায়, কেউ COVID-19 আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যাতায়াত করেছেন, তাহলে তাঁর যাতায়াতের পথ, শহর এবং পরিবহণ যানের সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করা হচ্ছে, যাতে এই তথ্য সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য ব্যবহার করা যায় ৷ যদিও স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ আর পড়ুয়ারা লাইন স্ট্রিমিং অ্যাপের মাধ্যমে লেখাপড়া করছে ৷

ই-কমার্স সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা

বড় খাবার সরবরাহ অ্যাপ, আলিবাবার মতো ই-কমার্স সংস্থা হাসপাতাল এবং কোয়ারেন্টাইন করে রাখা এলাকায় চালকহীন গাড়ির সাহায্যে খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছে ৷

বামপন্থী কর্মীদের পরিষেবা

চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা কয়েক বিলিয়ন ৷ উহানের এক কোটি 20 লাখ মানুষ তাঁদের বাড়িতেই থাকছেন ৷ সেখানে খাবার পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করছেন পার্টির সদস্যরা ৷

আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স, রোবট এবং ড্রোন

বেজিংয়ের একটি সংস্থা Artificial Intelligent প্রযুক্তির ব্যবহার করে যেখানে অনেক মানুষের জমায়েত হচ্ছে, সেখানকার তাপমাত্রা মেপে নিচ্ছে ৷ দু’টো AI সংস্থা পুলিশকে জানাচ্ছে যে, অফিসে এবং উন্মুক্ত জায়গায় কারা মাস্কের ব্যবহার করছে না ৷ আধিকারিকরা লাউডস্পিকার রয়েছে এমন ড্রোন ব্যবহার করে মানুষকে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে ৷

রোবট, স্মার্ট হেলমেট, ড্রোনে লাগানো থার্মাল ক্যামেরা, মুখ চিহ্নিত করার ক্যামেরা বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ স্মার্ট হেলমেট ব্যবহার করলেই জানা যাচ্ছে পাঁচ মিটারের মধ্যে কেউ জ্বর নিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন কি না !

রোবটের মাধ্যমে চিকিৎসা সামগ্রী পরিবহণ করা হচ্ছে, ভাইরাস মারার স্প্রে দেওয়া হচ্ছে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হচ্ছে ৷ রোগ নির্ণয় এবং টীকাকরণের কাজ করতেও ব্যবহার করা হচ্ছে AI-এর ৷

টেলিকম পরিষেবা

চিনের প্রযুক্তি সংস্থা এবং মোবাইল অপারেটরগুলি সবসময় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে গ্রাহকের তথ্য জানায় ৷ এর ফলে সরকারের পক্ষে বিভিন্ন বিষয় জানা অনেক সহজ হয় ৷ উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে যে, যদি ওয়েন ঝাউয়ের কোনও নুডলস বিক্রেতা আক্রান্ত হন ৷ তাহলে সেই দোকানে যাওয়া ৩ হাজার মানুষের ফোনের তথ্য থেকে তা জানতে পারে টেলিফোন সংস্থা ৷ তখন তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়ে দেয় ৷

মোকাবিলার জন্য সিঙ্গাপুরের কৌশলই সেরা

যেহেতু বিশ্বের 100টি দেশ থেকে পর্যটকরা আসেন, তাই সিঙ্গাপুরই সেই দেশ যাদের আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক ৷ এটা অবশ্যই আকর্ষণীয় তথ্য যে কীভাবে সেখানে কোরোনা নিয়ন্ত্রণ করা হল ৷ জানুয়ারি মাসের 23 তারিখ সিঙ্গাপুরের উহানে একজন বয়স্ক ব্যক্তি (66) কোরোনায় আক্রান্ত হতেই সরকার সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করে ৷

সরকার সঙ্গে সঙ্গে কমলা সতর্কতা জারি করে ৷ এটা লাল সতর্কতা থেকে একধাপ নিচে ৷ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া আটকাতে স্কুল, বড় আকারে ডিনারের অনুষ্ঠান, বড় জমায়েত এবং চিনের নতুন বছর উদযাপনের অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয় ৷ সরকারি তরফে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয় ৷ সেখানেই সাবধানতা অবলম্বনের বার্তা দেওয়া হয়, যাতে গুজবের জেরে মানুষ সমস্যায় না পড়ে ৷

সরকারি কর্মচারীদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, তাঁরা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা ৷ চিনের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ চিনে যাওয়া এবং চিন থেকে আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ৷ আকাশ, সড়ক এবং জলপথে নিয়মিত নজরদারি শুরু হয় ৷ যাঁরা কোরোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ফিরছেন, তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে থাকা একেবারে বাধ্যতামূলক করা হয় ৷

দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ

পাঁচ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন করে চার হাজার আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে, যাঁদের মধ্যে 67 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর হার 3.4 শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া এই হার এক শতাংশেরও কম ৷ ছয় ঘণ্টার মধ্যে রোগ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করাই ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার কৌশল ৷

প্রতিদিন 20 হাজার লোকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে ৷ দেশজুড়ে সরকারি এবং বেসরকারি গবেষণাগারে 24x7 জুড়ে কাজ করার জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে ৷ এই নেটওয়ার্কই জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবলম্বন করছে ৷ প্রতি সপ্তাহে 1 লাখ 40 হাজার নমুনা পরীক্ষা করার জন্য কিট প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ৷ এগুলি 98 শতাংশ নিশ্চয়তার সঙ্গে কোরোনা সংক্রমণ নির্ণয় করতে পারছে ৷ বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এভাবেই গোটা বিশ্বজুড়ে মারাত্মক কোরোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হচ্ছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.