ছাত্র, তরুণ ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে । তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর মধ্যে বিশেষ মজা পায় । কিন্তু এই ধরনের মজা কার্যত তাঁদের নেশায় পরিণত হয় এবং পরিণতিতে দুর্ঘটনা ঘটে । মত্ত অবস্থায় তাঁরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান এবং অন্য গাড়িতে ধাক্কা মারেন । মদ্যপান চোখ, কান ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে । মত্ত চালকরা নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঠিক সময় ব্রেক কষতে পারেন না । ট্রাফিক পুলিশ যারা বিভিন্ন দুর্ঘটনার তদন্ত করেছে তারা এই তথ্য জানিয়েছে । যদিও পুলিশের তরফে সর্বদা সতর্ক করা হয় যে, মদ্যপান করে গাড়ি চালানো উচিত নয়, কিন্তু সেই কথা প্রায় কেউই শোনেন না । তাই পুলিশের তরফে রাস্তায় প্রায় রাত আড়াইটে পর্যন্ত যানবাহনের উপর নজরদারি চালানো হয় যাতে মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমে ।
নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি মদ খেয়ে কারও গাড়ি চালানো উচিত নয় । কিন্তু অনেকেই মত্ত অবস্থায় গাড়ি বা বাইক চালিয়ে দ্রুতগতিতে রাতে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন । তাঁরা রাস্তায় মোড় ঘোরার সময় বা স্পিডব্রেকারের সামনে গিয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না এবং দুর্ঘটনায় পড়েন । কেউ কেউ কম ট্রাফিক দেখে উল্টো রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে সামনের দিক থেকে আসে গাড়িকে ধাক্কা মেরে দুর্ঘটনায় পড়েন । এই ধরনের দুর্ঘটনা মূলত বাইক চালকরা বেশি ঘটান । মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনা হায়দরাবাদের বানজ়ারা হিলস, জুবিলি হিলস, খৈরাতাবাদ, আমিরপেট, বেগমপেট, আবিডস, চিক্কারপল্লি, নারায়ণগুডা, অম্বরপেট, টারাঙ্কা, হাবিসগুড়া ও উপ্পল এলাকায় বেশি হয় । অনেক সময় শেষ রাতে রাস্তায় সেরকমভাবে পুলিশের নজরদারি থাকে না, তাই মত্ত চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান ।
মত্ত অবস্থায় চালকরা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আহত হলেও অনেক সময় ব্যথা অনুভব করেন না । অনেকক্ষেত্রে গুরুতর আহত হয়ে প্রচুর রক্তপাত হলেও মত্ত অবস্থায় থাকার জন্য তাঁরা বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারেন না । হেলমেট না পরে বাইক চালকরা মত্ত অবস্থায় দুর্ঘটনা ঘটালে অনেক সময় মাথায় গুরুতর আঘাত পান । কিন্তু নেশায় থাকার জন্য বিষয়টি তাঁরা বুঝতে পারেন না । চালকদের শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে গুরুতর চোট লাগে যখন তাঁদের গাড়ি বা বাইকের কোনও গাছের সঙ্গে বা রাস্তার ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে । সেই সময় অনেকের হৃদযন্ত্র কিছুক্ষণের জন্য কাজ করা বন্ধ করে দেয় । এই বিষয়গুলি নিয়ে গোশামহল পুলিশ চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে । চালকদের বিভিন্ন দুর্ঘটনার ভিডিয়ো ও ছবি দেখিয়ে পুলিশ প্রচার শুরু করেছে ।
মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময় চালকের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায় । অ্যালকোহলের প্রভাবে আমাদের চোখ উজ্জ্বলতা ও রঙের রকমফের ঠিক মতো বুঝতে পারে না । এর জেরে মত্ত চালক উলটো দিক থেকে আসা গাড়িকে ঠিক মতো জায়গা দিতে পারেন না । খুব বেশি মদ খেলে অনেকের কথা জড়িয়ে যায় । তার ফলে গাড়ি চালনোর সময় চালক অন্যের সঙ্গে ঠিক মতো কথাবার্তা বলতে পারেন না । মদ খাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে অ্যালকোহল শরীরে তার ক্রিয়া শুরু করে দেয় । চালকের হাত ও পা তখন পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না । মস্তিষ্কেরও কাজ করতে সমস্যা হয় । মস্তিষ্ক সংকেত পাঠালেও স্নায়ুতন্ত্র সেই অনুসারে কাজ করতে পারে না । তার জেরে চালক ঠিক সময়ে ব্রেক কষতে পারে না । সাধারণ পরিস্থিতিতে ব্রেক কষার পর ৫০ ইয়ার্ডের মধ্যে গাড়ি থেমে যায়, কিন্তু চালক যদি মদ খেয়ে গাড়ি চালান তাহলে ব্রেক কষার পর ১০০ ইয়ার্ড দূরত্বে গাড়ি থামে । এটা হয় কারণ মত্ত অবস্থায় চালক ঠিক মতো ব্রেক কষতে পারেন না । এর জেরে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ে । মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালালে এই সমস্ত সমস্যা হয় ।