গুয়াহাটি, 15 জুলাই : অসমে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই শোচনীয় হচ্ছে । ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্তর বিপদসীমা পেরিয়ে গেল আজ । বিপদসীমার চেয়েও 1.5 সেন্টিমিটার বেশি রয়েছে জলস্তর । প্রতি ঘণ্টায় 2-3 সেন্টিমিটার জলস্তর বাড়ছে, জানিয়েছে সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন । তবে অসম প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা সবরকমভাবে প্রস্তুত রয়েছে । 33টি জেলার মধ্যে 30টি জেলা জলের তলায়। প্রায় 43 লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই বন্যা পরিস্থিতির ফলে ।
এই নিয়ে অসমে বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল 11 । রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনির তরফে জানানো হয়েছে, জোড়হাট, বরপেটা ও ধুবড়িতে 4 জনের মৃত্যু হয়েছে । এখনও পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন 28 জেলার প্রায় সাড়ে 26 লাখ মানুষ । মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানও । সংকটে বন্যপ্রাণীরাও ।
মাজুলি থেকে 4টি হরিণকে উদ্ধার করা হয়েছে । জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছিল প্রাণীগুলি । পরে লখিমপুর এলাকার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের । প্রায় 150টি হাতি খাদ্য সংকটে ভুগছে ওই এলাকায়। বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে একথাই ।
কাজিরাঙ্গা (কাজিরাঙা) অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভেসে যাওয়ায় সঙ্কটে বন্যপ্রাণীরা । তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে । এদিকে মেঘালয়ে কোনও প্রাণহানি না হলেও ভেঙে পড়ছে বাড়ি । ধস নেমেছে বেশ কয়েকটি পাহাড়ে । ত্রিপুরাতে অতিবৃষ্টির জেরে খাস আগরতলাতেই জলবন্দি অনেক মানুষ ।
মিজোরামে খাওতলাং তুইপুই (কর্ণফুলি নদী) নদীর বন্যার জেরে লাবুং এলাকা থেকে 200 পরিবারকে সরানো হয়েছে । রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নামছে ধস । অনেক সড়ক বন্ধ । অরুণাচলের পূর্ব সিয়াং জেলায় সিয়াং নদী বিপদসীমার উপরে বইছে । সিকু নদীর বন্যায় সেতু ভেসেছে । কাদাং, গপোক, সিসার, তারো তামাক, সুবনসিরি, দিবাং, জোনা, ডিক্রং নদীগুলি ক্রমেই বিপদসীমা ছাড়াচ্ছে । পাঁচদিন আগে পশ্চিম কামেং জেলায় নাগমন্দিরের কাছে হড়পা বানে রাস্তা ও সেতু ভেসে অনেক গাড়ি আটকে ছিল ।
রাজ্যের পরিস্থিতি সামলাতে 84 জন ডুবুরি-সহ তিন কম্পানি NDRF মোতায়েন আছে । NDRF পাঠানো হয়েছে শিবসাগর, তিনসুকিয়া, শোনিতপুর, ধেমাজি, শিলচর, জোড়হাট, বঙ্গাইগাঁওতে । কাজিরাঙা, ওরাং, পবিতরার অরণ্যের সিংহভাগই জলের তলায় । এই সুযোগে যাতে চোরাশিকারিরা সক্রিয় না হতে পারে সেদিকেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে ।