ETV Bharat / bharat

COVID পরিস্থিতিতে বাড়ছে বর্জ্যের পরিমাণ?

author img

By

Published : Aug 11, 2020, 6:53 AM IST

হাসপাতাল ছাড়াও বহু রোগীর চিকিৎসা বর্তমানে বাড়িতেই, আইসোলেশনে হচ্ছে। তৃণমূল স্তরে যে খবর মিলেছে, তা অনুযায়ী মাস্ক, গ্লাভ, সিরিঞ্জ প্রভৃতি বাড়িতে যা ব্যবহার হচ্ছে, তা বাড়ির অন্যান্য সাধারণ বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে কারণ বেশিরভাগ বাড়িতেই আলাদা করে বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই ।

aa
বর্জ্য

কঠিন বর্জ্য পদার্থ, যা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর, প্লাস্টিক বর্জে্যর সঙ্গে মিলে বছরের পর বছর বিপদের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে । কেবলমাত্র ব্রিটেন, যেখানে জনসংখ্যা সাত বিলিয়নের কম, হিসাব মতো, যদি কেউ প্রতিদিন একটি করে মাস্ক পরেন এবং ব্যবহারের পর দিনের শেষে ফেলে দেন, তাহলে গোটা বছরে অন্তত 66,000টন বর্জ্য জমা হবে । এই ছবিই বুঝিয়ে দেয়, COVID প্যানডেমিক বিশ্বকে কী নিদারুণ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে । জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনাল সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, দেশে COVID-এর জন্য দৈনিক 700 মেট্রিক টনেরও বেশি বায়োমেডিকেল বর্জ্য জমা হচ্ছে এবং রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, এই বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনে যথাযথ পদক্ষেপ যত দ্রুত সম্ভব নিতে হবে । তেলাঙ্গানা দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড পুলিশ বিভাগের কাছে আবেদন জানিয়েছে, COVID বর্জ্য বহনকারী যানবাহনকে যেন বাধা না দেওয়া হয় । তারা আরও সতর্ক করেছে যে, যদি এই বর্জ্য আগামী 48 ঘণ্টার মধে্য সরানো না হয়, তাহলে এই ভাইরাস বাতাসে বাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিপদ ডেকে আনার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে । কিন্তু বর্জ্য নিষ্কাশন নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস সত্ত্বেও বাস্তব সত্যটা এখনও ভয়ঙ্কর । দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা 84,000—এরও বেশি হাসপাতালের মধে্য যে সব হাসপাতালের নিজস্ব বর্জ্য নিষ্কাশন কারখানা রয়েছে, তার সংখ্যা 200—রও কম ।

হাসপাতাল ছাড়াও বহু রোগীর চিকিৎসা বর্তমানে বাড়িতেই, আইসোলেশনে হচ্ছে । তৃণমূল স্তরে যে খবর মিলেছে, তা অনুযায়ী মাস্ক, গ্লাভ, সিরিঞ্জ প্রভৃতি বাড়িতে যা ব্যবহার হচ্ছে, তা বাড়ির অন্যান্য সাধারণ বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে কারণ বেশিরভাগ বাড়িতেই আলাদা করে বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই । যদি প্রতিষেধক এসে যায় এবং কোরোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে COVID সংক্রান্ত বর্জে্যর পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই কমে আসবে । কিন্তু তাতে আসল সমস্যার সমাধান হবে না । দেশে বর্তমানে বছরে 62 মিলিয়ন টন বর্জ্য সংগৃহীত হয়, যার মধে্য 45 মিলিয়টন টন বর্জ্য নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ফেলে দেওয়া যায় । কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে তাই যথোচিত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে এই ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের সমস্যা দূরীভূত করা যায়।

নদী, পুকুর, জলাশয়ে প্লাস্টিক বর্জে্যর জেরে অসংখ্য জলজ প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে । রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ব্যাগ খেয়ে বহু প্রাণী এবং গবাদি পশুর মৃত্যু হচ্ছে এবং স্থানে স্থানে পড়ে থাকা বর্জে্যর স্তুপের ফলে বন্যার প্রকোপ বাড়ছে । এই সব কিছুই হল দেশে অনিয়ন্ত্রিত হারে প্লাস্টিক বর্জ্য নিষ্কাশনের নানা কুপ্রভাব । প্লাস্টিক বর্জে্যর ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং ব্যবহারের বদলে তা ‘রিসাইকেল’ করে অস্ট্রেলিয়া, তাইল্যান্ড, সুইডেন এবং আয়ারল্যান্ড বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে ভাল উন্নতি করছে । প্লাস্টিক বর্জে্যর এক তৃতীয়াংশের পুনর্নবীকরণ এবং পুনর্ব্যবহার করে জাপানও এই ক্ষেত্রে নতুন দিশার সূচনা করেছে । তারা প্লাস্টিক বর্জ্যকে গলিয়ে, তাকে ফেস মাস্ক তৈরির কঁাচামালে পরিণত করেছে । উগান্ডায় এই COVID চ্যালেঞ্জকে উপার্জনের রাস্তা হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। স্কটল্যান্ডের মতো দেশে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্জ্য পদার্থ দিয়ে মজবুত রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। নির্মাণকাজের ফলে সংগৃহীত বর্জে্যর 98 শতাংশ রিসাইকেল করে সিঙ্গাপুর গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে।

আর আমাদের দেশ? দ্য পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (IIP) প্লাস্টিক থেকে পেট্রল এবং ডিজ়েল তৈরির প্রযুক্তি তৈরি করেছে । তেলাঙ্গানা সরকার সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে শহরাঞ্চল থেকে সংগৃহীত বর্জ্য দিয়ে গ্রামাঞ্চলের জন্য সার তৈরি করার কথা বলা হয়েছে । বর্জ্য থেকে শক্তি সম্পদ প্রস্তুত করার জন্য বিশেষ একটি দপ্তর এই মাসেই চালু হবে ভাগ্যনগরে । বর্জ্যকে কাজে লাগাতে পারে, এমন কারখানা দেশের সর্বত্র তৈরি করা উচিত । সরকারের উচিত নাগরিক সচেতনতা বাড়ায়, এমন প্রকল্প চালু করা, যার মাধ্যমে জল, বাতাস সংরক্ষণ করা যায় এবং বিশেষ করে গুরুত্ব দেওয়া যায় পুনর্নবীকরণযোগ্য সম্পদের উপর । শিক্ষা ব্যবস্থারও পরিশোধন দরকার, যেখানে গবেষণা ভিত্তিক সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মের মনে সামাজিক স্তরে সচেতনতা বাড়ে । এই ধরনের উদ্ভাবনীমূলক এবং বহুস্তরীয় উদে্যাগই দেশকে প্লাস্টিকসহ সব ধরনের বর্জ্যজনিত সংকট থেকে উদ্ধার করতে পারে এবং দেশ তথা জাতিকে স্বস্তি দিতে পারে।

কঠিন বর্জ্য পদার্থ, যা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর, প্লাস্টিক বর্জে্যর সঙ্গে মিলে বছরের পর বছর বিপদের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে । কেবলমাত্র ব্রিটেন, যেখানে জনসংখ্যা সাত বিলিয়নের কম, হিসাব মতো, যদি কেউ প্রতিদিন একটি করে মাস্ক পরেন এবং ব্যবহারের পর দিনের শেষে ফেলে দেন, তাহলে গোটা বছরে অন্তত 66,000টন বর্জ্য জমা হবে । এই ছবিই বুঝিয়ে দেয়, COVID প্যানডেমিক বিশ্বকে কী নিদারুণ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে । জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনাল সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, দেশে COVID-এর জন্য দৈনিক 700 মেট্রিক টনেরও বেশি বায়োমেডিকেল বর্জ্য জমা হচ্ছে এবং রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, এই বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনে যথাযথ পদক্ষেপ যত দ্রুত সম্ভব নিতে হবে । তেলাঙ্গানা দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড পুলিশ বিভাগের কাছে আবেদন জানিয়েছে, COVID বর্জ্য বহনকারী যানবাহনকে যেন বাধা না দেওয়া হয় । তারা আরও সতর্ক করেছে যে, যদি এই বর্জ্য আগামী 48 ঘণ্টার মধে্য সরানো না হয়, তাহলে এই ভাইরাস বাতাসে বাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিপদ ডেকে আনার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে । কিন্তু বর্জ্য নিষ্কাশন নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস সত্ত্বেও বাস্তব সত্যটা এখনও ভয়ঙ্কর । দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা 84,000—এরও বেশি হাসপাতালের মধে্য যে সব হাসপাতালের নিজস্ব বর্জ্য নিষ্কাশন কারখানা রয়েছে, তার সংখ্যা 200—রও কম ।

হাসপাতাল ছাড়াও বহু রোগীর চিকিৎসা বর্তমানে বাড়িতেই, আইসোলেশনে হচ্ছে । তৃণমূল স্তরে যে খবর মিলেছে, তা অনুযায়ী মাস্ক, গ্লাভ, সিরিঞ্জ প্রভৃতি বাড়িতে যা ব্যবহার হচ্ছে, তা বাড়ির অন্যান্য সাধারণ বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে কারণ বেশিরভাগ বাড়িতেই আলাদা করে বর্জ্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই । যদি প্রতিষেধক এসে যায় এবং কোরোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে COVID সংক্রান্ত বর্জে্যর পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই কমে আসবে । কিন্তু তাতে আসল সমস্যার সমাধান হবে না । দেশে বর্তমানে বছরে 62 মিলিয়ন টন বর্জ্য সংগৃহীত হয়, যার মধে্য 45 মিলিয়টন টন বর্জ্য নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ফেলে দেওয়া যায় । কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে তাই যথোচিত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে এই ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থের সমস্যা দূরীভূত করা যায়।

নদী, পুকুর, জলাশয়ে প্লাস্টিক বর্জে্যর জেরে অসংখ্য জলজ প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে । রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ব্যাগ খেয়ে বহু প্রাণী এবং গবাদি পশুর মৃত্যু হচ্ছে এবং স্থানে স্থানে পড়ে থাকা বর্জে্যর স্তুপের ফলে বন্যার প্রকোপ বাড়ছে । এই সব কিছুই হল দেশে অনিয়ন্ত্রিত হারে প্লাস্টিক বর্জ্য নিষ্কাশনের নানা কুপ্রভাব । প্লাস্টিক বর্জে্যর ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং ব্যবহারের বদলে তা ‘রিসাইকেল’ করে অস্ট্রেলিয়া, তাইল্যান্ড, সুইডেন এবং আয়ারল্যান্ড বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে ভাল উন্নতি করছে । প্লাস্টিক বর্জে্যর এক তৃতীয়াংশের পুনর্নবীকরণ এবং পুনর্ব্যবহার করে জাপানও এই ক্ষেত্রে নতুন দিশার সূচনা করেছে । তারা প্লাস্টিক বর্জ্যকে গলিয়ে, তাকে ফেস মাস্ক তৈরির কঁাচামালে পরিণত করেছে । উগান্ডায় এই COVID চ্যালেঞ্জকে উপার্জনের রাস্তা হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। স্কটল্যান্ডের মতো দেশে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্জ্য পদার্থ দিয়ে মজবুত রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। নির্মাণকাজের ফলে সংগৃহীত বর্জে্যর 98 শতাংশ রিসাইকেল করে সিঙ্গাপুর গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে।

আর আমাদের দেশ? দ্য পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (IIP) প্লাস্টিক থেকে পেট্রল এবং ডিজ়েল তৈরির প্রযুক্তি তৈরি করেছে । তেলাঙ্গানা সরকার সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে শহরাঞ্চল থেকে সংগৃহীত বর্জ্য দিয়ে গ্রামাঞ্চলের জন্য সার তৈরি করার কথা বলা হয়েছে । বর্জ্য থেকে শক্তি সম্পদ প্রস্তুত করার জন্য বিশেষ একটি দপ্তর এই মাসেই চালু হবে ভাগ্যনগরে । বর্জ্যকে কাজে লাগাতে পারে, এমন কারখানা দেশের সর্বত্র তৈরি করা উচিত । সরকারের উচিত নাগরিক সচেতনতা বাড়ায়, এমন প্রকল্প চালু করা, যার মাধ্যমে জল, বাতাস সংরক্ষণ করা যায় এবং বিশেষ করে গুরুত্ব দেওয়া যায় পুনর্নবীকরণযোগ্য সম্পদের উপর । শিক্ষা ব্যবস্থারও পরিশোধন দরকার, যেখানে গবেষণা ভিত্তিক সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মের মনে সামাজিক স্তরে সচেতনতা বাড়ে । এই ধরনের উদ্ভাবনীমূলক এবং বহুস্তরীয় উদে্যাগই দেশকে প্লাস্টিকসহ সব ধরনের বর্জ্যজনিত সংকট থেকে উদ্ধার করতে পারে এবং দেশ তথা জাতিকে স্বস্তি দিতে পারে।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.