দিল্লি, 5 অগাস্ট : জম্মু ও কাশ্মীর থেকে 370 ধারা প্রত্যাহার করা হল । আজ 370 ধারার 1 নম্বর উপধারার প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি 1954 সালে জম্মু ও কাশ্মীরকে দেওয়া 370 ধারা প্রত্যাহারের নির্দেশিকায় সই করেন । সেই নির্দেশিকা রাজ্যসভায় পড়ে শোনান স্বরাস্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । পাশাপাশি পেশ করেন জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল ও জম্মু ও কাশ্মীর সংরক্ষণ (সংশোধনী) বিল । পুনর্গঠন বিলে জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখকে আলাদা দু'টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার প্রস্তাব দেওয়া হয় ।
আজ রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীরা মুলতবি প্রস্তাব আনেন ৷ বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে গতকাল থেকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে ৷ রাজ্যজুড়ে 144 ধারা জারি করা হয়েছে এবং উপত্যকাজুড়ে চলছে কারফিউ ৷ এবিষয়ে সরকারের বিবৃতি দাবি করে বিরোধীরা ৷ তিনি বলেন, "আজ সংসদের সবথেকে কালো দিন ৷ BJP সংবিধানকে খুন করল ৷"
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন পয়েন্ট অফ অর্ডার তুলে বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর সমেত অন্য বিল পড়ার সময় সরকার দিচ্ছে না ৷ সরকার এভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে ৷ এর উত্তরে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, "সরকার বিল পেশ করার পর আপনাদের পড়ার সুযোগ দেবে ৷ আপনারা আলোচনার সুযোগও পাবেন ৷ আপনারা সহযোগিতা করুন ৷"
এরপরই জম্মু ও কাশ্মীর থেকে 370 ধারা প্রত্যাহার নিয়ে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনামা রাজ্যসভায় পড়ে শোনান শাহ ৷ তখন বিরোধীরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ৷ রাজ্যসভাজুড়ে শুরু হয় তুমুল হই-হট্টগোল ৷ এরই মাঝে জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৷ এতে লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীরকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার কথা বলা হয় ৷
বিলে আরও বলা হয়, লাদাখ অঞ্চলের জনগণের দীর্ঘদিনের দাবিকে স্বীকৃতি দিতে এবং প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ার দরুণ সেটিকে কোনও পৃথক আইনসভা ছাড়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে গণ্য করা হবে ৷ অপর দিকে, জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে সীমান্তপারে সন্ত্রাস রুখতে এবং উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি মাথায় রেখে লাদাখ বাদে শুধুমাত্র জম্মু-কাশ্মীর এলাকাকে আরেকটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে গণ্য করা হবে, তবে এক্ষেত্রে আইনসভা সমেত ৷
বিলটি পেশের পর PDP-র রাজ্যসভা সাংসদ মির ফৈয়াজ় এবং নাজ়ির আহমেদ লাওয়ে ছিঁড়ে ফেলতে চেয়েছিলেন সংবিধান ৷ এর প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু রাজ্যসভা কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন তাঁদের ৷ তুমুল হট্টগোল থামাতে একসময় চেয়ারম্যান রাজ্যসভা কক্ষে মার্শাল ডাকতে বাধ্য হন ৷