ETV Bharat / bharat

প্যানডেমিকের মধ্যেই দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে আধিপত্যবাদী নীতি চিনের

বেজিং দক্ষিণ চিন সাগরে নিজেদের আধিপত্যবাদী অবস্থান জারি রেখে আন্তর্জাতিক মহলের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়ে চলেছে । প্যারাসেল দ্বীপের কাছে চিনের এই সাম্প্রতিক কার্যকলাপকে প্রতিরোধ করার জন্য অ্যামেরিকা দক্ষিণ চিন সাগরে তিনটি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ারক্রাফ্ট নিয়োজিত করেছে ।

author img

By

Published : Jul 12, 2020, 2:34 PM IST

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

দিল্লি, 12 জুলাই : গোটা বিশ্ব বর্তমানে কোরোনার সঙ্গে মোকাবিলা করছে । এর সংক্রমণ গতবছর চিনের ইউহানে হয়েছিল ৷ এরই মধ্যে বেজিং দক্ষিণ চিন সাগরে নিজেদের আধিপত্যবাদী অবস্থান জারি রেখে আন্তর্জাতিক মহলের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়ে চলেছে । এই দক্ষিণ চিন সাগরই হল সেই এলাকা, যেখানকার একাধিক দেশের সঙ্গে বেজিং আঞ্চলিক ক্ষমতা দখলের বিবাদে জড়িত । আর এ সব তখন হচ্ছে, যখন ইতিমধ্যেই ভারত এবং চিন পূর্ব লাদাখের কাছে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে ৷ গত 45 বছরের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) এলাকায় এই প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে বিশ্বে উদ্বেগও ছড়িয়েছে ।

গত সপ্তাহে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) দক্ষিণ চিন সাগরে নৌবাহিনীর মহড়া শুরু করে দিয়েছে, জলে-স্থলে সমান কার্যক্ষম হামলার মাধ্যমে । প্যারাসেল দ্বীপের কাছে চিনের এই সাম্প্রতিক কার্যকলাপকে প্রতিরোধ করার জন্য অ্যামেরিকা দক্ষিণ চিন সাগরে তিনটি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ারক্রাফ্ট নিয়োজিত করেছে ।

ভারত থেকে শুরু করে দক্ষিণ চিন সাগর এবং অন্যত্র, চিনের এই সাম্প্রতিক আধিপত্য বিস্তারকারী পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে অ্যামেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও 8 জুলাই এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, "হিমালয়ের পর্বতচূড়া থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের এক্সক্লুসিভ জ়োন, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ (জাপান সীমান্তলাগোয়া পূর্ব চিন সাগর) এবং তারও বাইরে বেজিং আঞ্চলিক বিবাদ তৈরি করার চেষ্টা করছে । পৃথিবীর কোনও দেশের চিনের এই দাদাগিরি মেনে নেওয়া উচিত নয় । দিনের পর দিন এমন চলতে দেওয়াও উচিত নয় ।"

এরপর বুধবার, প্রভাবশালী ইংরেজি সংবাদপত্র 'গ্লোবাল টাইমস', যা চিনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র হিসাবে পরিচিত, এই নিয়ে বেজিংয়ের বক্তব্য তুলে ধরে জানায়, "তিন দিন ধরে দক্ষিণ চিনের গুয়াংডং প্রদেশের কাছে পাঁচটি অ্যামেরিকান সেনা রিকনেস্যান্স বিমান উড়ে বেড়াচ্ছে ।" রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, "অ্যামেরিকান সেনার এই প্ররোচনার জবাবে PLA একাধিক প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে সক্ষম, যার মধ্যে অন্যতম অ্যামেরিকান বিমানের বিপরীতে ফাইটার জেট পাঠানো এবং তাদের চিনের আকাশসীমা থেকে বাইরে বের করে দেওয়া । নিজের ভাষাতেই অ্যামেরিকার রণকৌশলের যোগ্য জবাব দেবে চিন ।"

অবজ়ার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামক থিঙ্কট্যাঙ্কের মেরিটাইম পুলিশ ইনিশিয়েটিভের প্রধান অভিজিৎ সিংয়ের মতে, দক্ষিণ চিন সাগরে অ্যামেরিকার রণবহর পাঠানোর অর্থ আদপে বেজিংকে এই বার্তা দেওয়া যে ওই এলাকায় সে এভাবে একাধিপত্য চালিয়ে যেতে পারে না । ETV ভারতকে তিনি বলেছেন, "সাম্প্রতিক সময়ে ওই এলাকায় চিনের উপকূলবর্তী সেনার (অ-নৌ সেনাকর্মী) গতিবিধি বেড়েছে । তাদের আগের থেকে অনেক বেশি সেখানে দেখা যাচ্ছে ।"

আর এই কারণেই, তাঁর মতে, ASEAN দেশগুলি অ্যামেরিকা এবং জাপানের মতো দেশের সাহায্য চেয়েছে । জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অফ চাইনিজ় অ্যান্ড সাউথইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ়-এ চাইনিজ় অ্যান্ড চায়না স্টাডিজ়ের অধ্যাপক বি আর দীপক মনে করেন, চিনের এই আধিপত্যবাদী আচরণ কিন্তু হঠাৎ করে ঘটেনি । বরং অনেক আগে থেকেই তা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল । তিনি বলেছেন, "1979 সাল থেকে চিনের মূল লক্ষ্য ছিল সংস্কার সাধন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন । 2012 সালের পর যখন শি চিনপিং প্রেসিডেন্ট হলেন, তখন থেকেই চিনের আত্মবিশ্বাস বাড়তে লাগল এবং এটি ক্রমশ নিজের একাধিপত্য বিস্তারের নীতি রূপায়িত করতে উদ্যোগী হল ।"

নিজের যুক্তির সপক্ষে বলতে গিয়ে দীপক ভারতের সঙ্গে চিনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এবং দক্ষিণ চিন সাগর দ্বীপ এলাকায় চিনের আঞ্চলিক অধিকারের মধ্যে একটি সমান্তরাল তুলনাও দিয়েছেন । তাঁর মতে, "প্রথমে চিন এলাকা নিজের বলে দাবি করল । পরে ফের সেই একই দাবি জানাল । তারপর সেনা মোতায়েন করে দাবি জোরালো করল আর তারপর এলাকার স্থিতিশীলতায় বদল আনল । আবার তারও পরে আন্তর্জাতিক মহলকে জোর গলায় এটা বোঝানোর চেষ্টা করল যে তাদের দাবি কতটা সঠিক ।"

কিন্তু বেজিংয়ের ক্ষেত্রে যা সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে, তা হল লাদাখের সীমান্ত সংঘর্ষের ঘটনার পর দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায়, পরিকল্পনামাফিকভাবে ভারত নৌ-কার্যকলাপ বাড়ানোর চেষ্টা করবে । গত সপ্তাহে একটি অনলাইন ফোরামে ফিলিপিন্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেলফিন লোরেঞ্জানা এই নিয়ে বলেছেন, "দক্ষিণ চিন সাগরে অন্য কোনও দেশের রণতরী চলাচল বা অন্য কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে আমরা হস্তক্ষেপ করি না । দক্ষিণ চিন সাগর এলাকা ধরে ব্রিটেনও যায়, ফ্রান্সও যায়, অন্য অনেক দেশই যায় । আমরা কাউকে সেখানে আসতে আমন্ত্রণ জানাই না ।" দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায় ভারতও স্বাগত বলে জানিয়েছেন লোরেঞ্জানা । তবে পাশাপাশি তিনি সেখানে PLA-র সাম্প্রতিক নৌ-কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন ।

এর আগেই অবশ্য গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তের মধ্যে টেলিফোনে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল । সেখানে মোদি দুতার্তেকে বলেছিলেন, জাপানের পূর্ব উপকুল থেকে আফ্রিকার পূর্ব উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় ফিলিপিন্সকে ভারত তাদের একজন গুরুত্বপূর্ণ জোটসঙ্গী হিসাবেই দেখে ।

অ্যামেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতও একটি চতুর্ভূজীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত, যারা চিনের এই আগ্রাসী অবস্থানের বিরুদ্ধে ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় শান্তি এবং স্থিতাবস্থা রক্ষার জন্য সচেষ্ট । সিং মনে করেন, যদিও দক্ষিণ চিন সাগর এলাকা ঘিরে ভারতের প্রত্যক্ষভাবে কিছু পাওয়ার নেই, তবু দিল্লি ওই এলাকা ঘিরে চিনের 'অতি আগ্রাসীট আচরণে উদ্বিগ্ন । তিনি বলেছেন, "ভারত (দক্ষিণ চিন সাগরে) কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবে যদি চিন হিমালয়ের পার্বত্য এলাকায় নিজের স্বৈরাচারী চরিত্র অব্যাহত রাখে ।"

গত মাসে ASEAN দেশের নেতাদের একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নগুয়েন শুয়ান ফুক দক্ষিণ চিন সাগরে নৌ-আইনের বারংবার লঙ্ঘনের জন্য চিনের দিকে আঙুল তোলেন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন । ফুক বলেন, "একদিকে যখন গোটা দুনিয়া কোরোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে একজোট হয়েছে, সেখানেই দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটে চলেছে, যা আমাদের এলাকা-সহ আরও কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকার নিরাপত্তা এবং স্থিতাবস্থায় প্রভাব ফেলছে ।"

ASEAN দেশগুলির সম্মেলনের জারি হওয়া একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "উপকূলীয় এলাকাগুলির বৈধ স্বার্থরক্ষা, পরিসর নির্ধারণ, সার্বভৌম অধিকারক্ষা এবং নৌ-এলাকা নির্ধারণের ভিত্তি হল 1982 সালের UNCLOS (ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল’অফ দ্য সি) ৷ আর এ কথা আমরা আবারও জোর দিয়ে বলছি ।"

UNCLOS-এ বলা হয়েছে, বিশ্বের সমুদ্রগুলির প্রতি প্রতিটি দেশের দায়িত্ব ও অধিকার রক্ষার কথা, রয়েছে বাণিজ্য সম্প্রসারণের নির্দেশিকা, পরিবেশ এবং নৌ-সম্পদ নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্বের কথাও । এতে, দেশগুলির জাতীয় সীমানার বাইরে থাকা সমস্ত জলভাগকে আন্তর্জাতিক বলে গণ্য করা হয়েছে, যা যে কোনও দেশই ব্যবহার করতে পারবে অথচ তা কোনও একটি দেশের নিজস্ব সম্পদ বলে গণ্য হবে না । UNCLOS অনুযায়ী, আঞ্চলিক সমুদ্র হিসাবে সেই এলাকাকে গণ্য করা যাবে, যা কোনও একটি দেশের উপকূলীয় রাজ্যের প্রান্তঃভাগ থেকে 12 নটিক্যাল মাইল এলাকার মধ্যে অবস্থিত ।

দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায় স্প্রাটলি অ্যান্ড প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ নিয়েও চিন বিবাদে জড়িয়েছে । এই দ্বীপপুঞ্জের উপর অধিকার ঘোষণা করেছে ওই এলাকার আরও কিছু দেশও । স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে অধিকার জানিয়েছে ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনাম । আর প্যারাসেল নিয়ে দাবি জানিয়েছে ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ান ।

স্মৃতি রোমন্থন করে দীপক জানিয়েছেন, 1974 সালে প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ ভিয়েতনামের আওতাধীন ছিল কিন্তু চিনা সেনার জোরে সেই পরিচয় মিটিয়ে দেয় । "এখন স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের বেশিরভাগ অংশ, প্রায় 28টি দ্বীপ ভিয়েতনামের দখলে রয়েছে । কিন্তু, চিন ইতিমধ্যেই তা দখলের জন্য দাবি জানাতে শুরু করে দিয়েছে ।" আবার ফিলিপিন্সের দিক থেকে বিচার করলে, 2016 সালে হগের 'দ্য পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আর্বিটারেশন' এই রায় দিয়েছিল যে চিন বিশ্বের মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম বাণিজ্যিক জাহাজরুট হিসাবে অভিহিত, দক্ষিণ চিন সাগরে ম্যানিলার অধিকার লঙ্ঘন করেছে ।

আদালত অভিযোগ তুলেছিল, চিন ফিলিপিন্সের মৎস্য এবং খনিজ তেল আহরণের কাজে হস্তক্ষেপ করছে, সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করছে এবং আইন না মেনে ওই এলাকায় চিনা মৎস্যজীবীরা যে মাছ ধরছে, তা আটকাতেও ব্যর্থ হচ্ছে । ট্রাইবুনাল জানিয়েছিল, ফিলিপিন্সের মৎস্যজীবীদের দক্ষিণ চিন সাগরের স্কারবোরোহ শোয়ালে প্রাচীন রীতিতে মাছ ধরার অধিকার রয়েছে কিন্তু চিন তাতে বিধিনিষেধ আরোপ করে সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে । ভিয়েতনাম এবং ফিলিপিন্স যেভাবে বলেছে, সেই নিরিখে ASEAN দেশগুলি বর্তমানে উদ্বিগ্ন, নিজেদের সমুদ্র এলাকা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক সমুদ্র এলাকায় চিনের নৌ-কার্যকলাপ চালানো নিয়ে ।

এই পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবেই 2002 সালের 'কোড অফ কনডাক্ট' থেকে অনেকটাই দূরে সরে আসাকে দর্শায় । বেজিং এবং ASEAN দেশগুলি এই 'কোড অফ কনডাক্ট' মানার ব্যপারে একমত হয়েছিল যাতে দক্ষিণ চিন সাগরে কোনও বিবাদ হলে তা শান্তিপূর্ণভাবে মেটানো হয় ।

দীপক যদিও জানিয়েছেন, চিন যেখানে চায় ওই এলাকার প্রতিটি দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্তরে কথা বলে বিবাদ মেটাতে, ASEAN দেশগুলি চাইছে, এই বিষয়ে সমষ্টিগত উদ্যোগ নিতে এবং সেইভাবেই চিনের কাছ থেকে এর সমাধান চাইতে । তাঁর কথায়, "দু'পক্ষই চাইছে, এই নিয়ে একটি সাম্যের অবস্থায় পৌঁছাতে ।" তাঁর মতে, নিজের দেশের অর্থনীতিকে উজ্জ্বল করতে গিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার এত বড় ঝুঁকি চিন নিতে পারবে না ।

দীপক বলেছেন, "ASEAN দেশগুলির সঙ্গে চিনের বাণিজ্যের অর্থমূল্য 2019 সালে ছিল 600 বিলিয়ন অ্যামেরিকান ডলারেরও বেশি । কাজেই তারা চায়, যেভাবেই হোক, এই এলাকায় অন্য জায়গা থেকে উড়ে আসা কোনও শক্তি (অ্যামেরিকা) যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে ।" পাশাপাশি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও-র বলা 'মালাক্কা ডাইলেমা' নিয়েও চিন যথেষ্ট ফাঁপড়ে । মালাক্কা প্রণালী হল মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ-এলাকা সুমাত্রার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ একটি জলভাগ যা দক্ষিণ চিন সাগরে সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ।

চিন উদ্বিগ্ন এটা ভেবে যে, ওই প্রণালী, যা প্রবলভাবে অ্যামেরিকার ক্ষমতাধীন, বিপদ এলে যে কোনও সময় আটকে দেওয়া হতে পারে । এতে মধ্য এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে শক্তিসম্পদ সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে যাবে । এখন, দক্ষিণ চিন সাগরে যখন অ্যামেরিকা আবার যুদ্ধতরী পাঠাতে শুরু করেছে, আগামী দিনে এই এলাকায় আর কী কী হয়, তা নিয়ে সকলেরই উৎসাহ তুঙ্গে থাকবে ।

প্রতিবেদনটি লিখেছেন- অরুণিম ভুইয়াঁ

দিল্লি, 12 জুলাই : গোটা বিশ্ব বর্তমানে কোরোনার সঙ্গে মোকাবিলা করছে । এর সংক্রমণ গতবছর চিনের ইউহানে হয়েছিল ৷ এরই মধ্যে বেজিং দক্ষিণ চিন সাগরে নিজেদের আধিপত্যবাদী অবস্থান জারি রেখে আন্তর্জাতিক মহলের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়ে চলেছে । এই দক্ষিণ চিন সাগরই হল সেই এলাকা, যেখানকার একাধিক দেশের সঙ্গে বেজিং আঞ্চলিক ক্ষমতা দখলের বিবাদে জড়িত । আর এ সব তখন হচ্ছে, যখন ইতিমধ্যেই ভারত এবং চিন পূর্ব লাদাখের কাছে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে ৷ গত 45 বছরের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) এলাকায় এই প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে বিশ্বে উদ্বেগও ছড়িয়েছে ।

গত সপ্তাহে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) দক্ষিণ চিন সাগরে নৌবাহিনীর মহড়া শুরু করে দিয়েছে, জলে-স্থলে সমান কার্যক্ষম হামলার মাধ্যমে । প্যারাসেল দ্বীপের কাছে চিনের এই সাম্প্রতিক কার্যকলাপকে প্রতিরোধ করার জন্য অ্যামেরিকা দক্ষিণ চিন সাগরে তিনটি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ারক্রাফ্ট নিয়োজিত করেছে ।

ভারত থেকে শুরু করে দক্ষিণ চিন সাগর এবং অন্যত্র, চিনের এই সাম্প্রতিক আধিপত্য বিস্তারকারী পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে অ্যামেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও 8 জুলাই এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, "হিমালয়ের পর্বতচূড়া থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের এক্সক্লুসিভ জ়োন, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ (জাপান সীমান্তলাগোয়া পূর্ব চিন সাগর) এবং তারও বাইরে বেজিং আঞ্চলিক বিবাদ তৈরি করার চেষ্টা করছে । পৃথিবীর কোনও দেশের চিনের এই দাদাগিরি মেনে নেওয়া উচিত নয় । দিনের পর দিন এমন চলতে দেওয়াও উচিত নয় ।"

এরপর বুধবার, প্রভাবশালী ইংরেজি সংবাদপত্র 'গ্লোবাল টাইমস', যা চিনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র হিসাবে পরিচিত, এই নিয়ে বেজিংয়ের বক্তব্য তুলে ধরে জানায়, "তিন দিন ধরে দক্ষিণ চিনের গুয়াংডং প্রদেশের কাছে পাঁচটি অ্যামেরিকান সেনা রিকনেস্যান্স বিমান উড়ে বেড়াচ্ছে ।" রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, "অ্যামেরিকান সেনার এই প্ররোচনার জবাবে PLA একাধিক প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে সক্ষম, যার মধ্যে অন্যতম অ্যামেরিকান বিমানের বিপরীতে ফাইটার জেট পাঠানো এবং তাদের চিনের আকাশসীমা থেকে বাইরে বের করে দেওয়া । নিজের ভাষাতেই অ্যামেরিকার রণকৌশলের যোগ্য জবাব দেবে চিন ।"

অবজ়ার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামক থিঙ্কট্যাঙ্কের মেরিটাইম পুলিশ ইনিশিয়েটিভের প্রধান অভিজিৎ সিংয়ের মতে, দক্ষিণ চিন সাগরে অ্যামেরিকার রণবহর পাঠানোর অর্থ আদপে বেজিংকে এই বার্তা দেওয়া যে ওই এলাকায় সে এভাবে একাধিপত্য চালিয়ে যেতে পারে না । ETV ভারতকে তিনি বলেছেন, "সাম্প্রতিক সময়ে ওই এলাকায় চিনের উপকূলবর্তী সেনার (অ-নৌ সেনাকর্মী) গতিবিধি বেড়েছে । তাদের আগের থেকে অনেক বেশি সেখানে দেখা যাচ্ছে ।"

আর এই কারণেই, তাঁর মতে, ASEAN দেশগুলি অ্যামেরিকা এবং জাপানের মতো দেশের সাহায্য চেয়েছে । জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অফ চাইনিজ় অ্যান্ড সাউথইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ়-এ চাইনিজ় অ্যান্ড চায়না স্টাডিজ়ের অধ্যাপক বি আর দীপক মনে করেন, চিনের এই আধিপত্যবাদী আচরণ কিন্তু হঠাৎ করে ঘটেনি । বরং অনেক আগে থেকেই তা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল । তিনি বলেছেন, "1979 সাল থেকে চিনের মূল লক্ষ্য ছিল সংস্কার সাধন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন । 2012 সালের পর যখন শি চিনপিং প্রেসিডেন্ট হলেন, তখন থেকেই চিনের আত্মবিশ্বাস বাড়তে লাগল এবং এটি ক্রমশ নিজের একাধিপত্য বিস্তারের নীতি রূপায়িত করতে উদ্যোগী হল ।"

নিজের যুক্তির সপক্ষে বলতে গিয়ে দীপক ভারতের সঙ্গে চিনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এবং দক্ষিণ চিন সাগর দ্বীপ এলাকায় চিনের আঞ্চলিক অধিকারের মধ্যে একটি সমান্তরাল তুলনাও দিয়েছেন । তাঁর মতে, "প্রথমে চিন এলাকা নিজের বলে দাবি করল । পরে ফের সেই একই দাবি জানাল । তারপর সেনা মোতায়েন করে দাবি জোরালো করল আর তারপর এলাকার স্থিতিশীলতায় বদল আনল । আবার তারও পরে আন্তর্জাতিক মহলকে জোর গলায় এটা বোঝানোর চেষ্টা করল যে তাদের দাবি কতটা সঠিক ।"

কিন্তু বেজিংয়ের ক্ষেত্রে যা সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে, তা হল লাদাখের সীমান্ত সংঘর্ষের ঘটনার পর দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায়, পরিকল্পনামাফিকভাবে ভারত নৌ-কার্যকলাপ বাড়ানোর চেষ্টা করবে । গত সপ্তাহে একটি অনলাইন ফোরামে ফিলিপিন্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেলফিন লোরেঞ্জানা এই নিয়ে বলেছেন, "দক্ষিণ চিন সাগরে অন্য কোনও দেশের রণতরী চলাচল বা অন্য কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে আমরা হস্তক্ষেপ করি না । দক্ষিণ চিন সাগর এলাকা ধরে ব্রিটেনও যায়, ফ্রান্সও যায়, অন্য অনেক দেশই যায় । আমরা কাউকে সেখানে আসতে আমন্ত্রণ জানাই না ।" দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায় ভারতও স্বাগত বলে জানিয়েছেন লোরেঞ্জানা । তবে পাশাপাশি তিনি সেখানে PLA-র সাম্প্রতিক নৌ-কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন ।

এর আগেই অবশ্য গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তের মধ্যে টেলিফোনে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল । সেখানে মোদি দুতার্তেকে বলেছিলেন, জাপানের পূর্ব উপকুল থেকে আফ্রিকার পূর্ব উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় ফিলিপিন্সকে ভারত তাদের একজন গুরুত্বপূর্ণ জোটসঙ্গী হিসাবেই দেখে ।

অ্যামেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতও একটি চতুর্ভূজীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত, যারা চিনের এই আগ্রাসী অবস্থানের বিরুদ্ধে ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় শান্তি এবং স্থিতাবস্থা রক্ষার জন্য সচেষ্ট । সিং মনে করেন, যদিও দক্ষিণ চিন সাগর এলাকা ঘিরে ভারতের প্রত্যক্ষভাবে কিছু পাওয়ার নেই, তবু দিল্লি ওই এলাকা ঘিরে চিনের 'অতি আগ্রাসীট আচরণে উদ্বিগ্ন । তিনি বলেছেন, "ভারত (দক্ষিণ চিন সাগরে) কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবে যদি চিন হিমালয়ের পার্বত্য এলাকায় নিজের স্বৈরাচারী চরিত্র অব্যাহত রাখে ।"

গত মাসে ASEAN দেশের নেতাদের একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নগুয়েন শুয়ান ফুক দক্ষিণ চিন সাগরে নৌ-আইনের বারংবার লঙ্ঘনের জন্য চিনের দিকে আঙুল তোলেন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন । ফুক বলেন, "একদিকে যখন গোটা দুনিয়া কোরোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে একজোট হয়েছে, সেখানেই দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটে চলেছে, যা আমাদের এলাকা-সহ আরও কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকার নিরাপত্তা এবং স্থিতাবস্থায় প্রভাব ফেলছে ।"

ASEAN দেশগুলির সম্মেলনের জারি হওয়া একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "উপকূলীয় এলাকাগুলির বৈধ স্বার্থরক্ষা, পরিসর নির্ধারণ, সার্বভৌম অধিকারক্ষা এবং নৌ-এলাকা নির্ধারণের ভিত্তি হল 1982 সালের UNCLOS (ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল’অফ দ্য সি) ৷ আর এ কথা আমরা আবারও জোর দিয়ে বলছি ।"

UNCLOS-এ বলা হয়েছে, বিশ্বের সমুদ্রগুলির প্রতি প্রতিটি দেশের দায়িত্ব ও অধিকার রক্ষার কথা, রয়েছে বাণিজ্য সম্প্রসারণের নির্দেশিকা, পরিবেশ এবং নৌ-সম্পদ নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্বের কথাও । এতে, দেশগুলির জাতীয় সীমানার বাইরে থাকা সমস্ত জলভাগকে আন্তর্জাতিক বলে গণ্য করা হয়েছে, যা যে কোনও দেশই ব্যবহার করতে পারবে অথচ তা কোনও একটি দেশের নিজস্ব সম্পদ বলে গণ্য হবে না । UNCLOS অনুযায়ী, আঞ্চলিক সমুদ্র হিসাবে সেই এলাকাকে গণ্য করা যাবে, যা কোনও একটি দেশের উপকূলীয় রাজ্যের প্রান্তঃভাগ থেকে 12 নটিক্যাল মাইল এলাকার মধ্যে অবস্থিত ।

দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায় স্প্রাটলি অ্যান্ড প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ নিয়েও চিন বিবাদে জড়িয়েছে । এই দ্বীপপুঞ্জের উপর অধিকার ঘোষণা করেছে ওই এলাকার আরও কিছু দেশও । স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে অধিকার জানিয়েছে ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনাম । আর প্যারাসেল নিয়ে দাবি জানিয়েছে ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ান ।

স্মৃতি রোমন্থন করে দীপক জানিয়েছেন, 1974 সালে প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ ভিয়েতনামের আওতাধীন ছিল কিন্তু চিনা সেনার জোরে সেই পরিচয় মিটিয়ে দেয় । "এখন স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের বেশিরভাগ অংশ, প্রায় 28টি দ্বীপ ভিয়েতনামের দখলে রয়েছে । কিন্তু, চিন ইতিমধ্যেই তা দখলের জন্য দাবি জানাতে শুরু করে দিয়েছে ।" আবার ফিলিপিন্সের দিক থেকে বিচার করলে, 2016 সালে হগের 'দ্য পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আর্বিটারেশন' এই রায় দিয়েছিল যে চিন বিশ্বের মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম বাণিজ্যিক জাহাজরুট হিসাবে অভিহিত, দক্ষিণ চিন সাগরে ম্যানিলার অধিকার লঙ্ঘন করেছে ।

আদালত অভিযোগ তুলেছিল, চিন ফিলিপিন্সের মৎস্য এবং খনিজ তেল আহরণের কাজে হস্তক্ষেপ করছে, সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করছে এবং আইন না মেনে ওই এলাকায় চিনা মৎস্যজীবীরা যে মাছ ধরছে, তা আটকাতেও ব্যর্থ হচ্ছে । ট্রাইবুনাল জানিয়েছিল, ফিলিপিন্সের মৎস্যজীবীদের দক্ষিণ চিন সাগরের স্কারবোরোহ শোয়ালে প্রাচীন রীতিতে মাছ ধরার অধিকার রয়েছে কিন্তু চিন তাতে বিধিনিষেধ আরোপ করে সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে । ভিয়েতনাম এবং ফিলিপিন্স যেভাবে বলেছে, সেই নিরিখে ASEAN দেশগুলি বর্তমানে উদ্বিগ্ন, নিজেদের সমুদ্র এলাকা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক সমুদ্র এলাকায় চিনের নৌ-কার্যকলাপ চালানো নিয়ে ।

এই পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবেই 2002 সালের 'কোড অফ কনডাক্ট' থেকে অনেকটাই দূরে সরে আসাকে দর্শায় । বেজিং এবং ASEAN দেশগুলি এই 'কোড অফ কনডাক্ট' মানার ব্যপারে একমত হয়েছিল যাতে দক্ষিণ চিন সাগরে কোনও বিবাদ হলে তা শান্তিপূর্ণভাবে মেটানো হয় ।

দীপক যদিও জানিয়েছেন, চিন যেখানে চায় ওই এলাকার প্রতিটি দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্তরে কথা বলে বিবাদ মেটাতে, ASEAN দেশগুলি চাইছে, এই বিষয়ে সমষ্টিগত উদ্যোগ নিতে এবং সেইভাবেই চিনের কাছ থেকে এর সমাধান চাইতে । তাঁর কথায়, "দু'পক্ষই চাইছে, এই নিয়ে একটি সাম্যের অবস্থায় পৌঁছাতে ।" তাঁর মতে, নিজের দেশের অর্থনীতিকে উজ্জ্বল করতে গিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার এত বড় ঝুঁকি চিন নিতে পারবে না ।

দীপক বলেছেন, "ASEAN দেশগুলির সঙ্গে চিনের বাণিজ্যের অর্থমূল্য 2019 সালে ছিল 600 বিলিয়ন অ্যামেরিকান ডলারেরও বেশি । কাজেই তারা চায়, যেভাবেই হোক, এই এলাকায় অন্য জায়গা থেকে উড়ে আসা কোনও শক্তি (অ্যামেরিকা) যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে ।" পাশাপাশি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও-র বলা 'মালাক্কা ডাইলেমা' নিয়েও চিন যথেষ্ট ফাঁপড়ে । মালাক্কা প্রণালী হল মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ-এলাকা সুমাত্রার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ একটি জলভাগ যা দক্ষিণ চিন সাগরে সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ।

চিন উদ্বিগ্ন এটা ভেবে যে, ওই প্রণালী, যা প্রবলভাবে অ্যামেরিকার ক্ষমতাধীন, বিপদ এলে যে কোনও সময় আটকে দেওয়া হতে পারে । এতে মধ্য এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে শক্তিসম্পদ সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে যাবে । এখন, দক্ষিণ চিন সাগরে যখন অ্যামেরিকা আবার যুদ্ধতরী পাঠাতে শুরু করেছে, আগামী দিনে এই এলাকায় আর কী কী হয়, তা নিয়ে সকলেরই উৎসাহ তুঙ্গে থাকবে ।

প্রতিবেদনটি লিখেছেন- অরুণিম ভুইয়াঁ

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.