দিল্লি, 24 সেপ্টেম্বর : কৃষি বিলের পর এবার শ্রম সংস্কার বিল । ফের কংগ্রেসের নিশানায় কেন্দ্র । একদিকে যখন কৃষি বিলগুলি নিয়ে প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা, তখনই গতকাল বিরোধীহীন রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যায় শ্রম সংস্কার সংক্রান্ত বিলগুলি । আর এই নিয়েই এবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ।
বর্তমানে য়ে শ্রম আইন চালু আছে, তাতে যে কম্পানিগুলিতে 100 জনের কম কর্মী কাজ করেন, সেই কম্পানিগুলির কর্মী-ছাঁটাই বা ক্লোজ়ারের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন ছিল না । সেই নিয়মেই পরিবর্তন আনা হয়েছে নতুন বিলে । ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস কোড বিল, 2020 অনুযায়ী, 100 জন নয়, 300 জনের কম কর্মী থাকলেই, সেই সব সংস্থাকে কর্মী-ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে আর সরকারের অনুমতি নিতে হবে না ।
এই নিয়েই রাহুল-প্রিয়ঙ্কা দু'জনেই সরকারের তুমুল সমালোচনা করেছেন টুইটারে । রাহুল গান্ধি লিখেছেন, “কৃষকদের পর এবার শ্রমিকদের নিশানায় নেওয়া হয়েছে । দরিদ্রদের শোষণ করা হচ্ছে । স্বজনপোষণ করা হচ্ছে । এটাই নরেন্দ্র মোদির শাসন ।”
কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধিও হিন্দিতে টুইট করেছেন শ্রম বিলের বিরোধিতা করে । এই সময়ে প্রত্য়েক নাগরিকের জীবন জীবিকা যাতে সুরক্ষিত থাকে তার ব্যবস্থা করাটা আগে জরুরি, কিন্তু সরকারের কাছে অন্য কিছু বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রিয়ঙ্কা ।
টুইটারে তিনি লেখেন, “দেখুন BJP সরকার কী চাইছে । সরকার এমন একটা আইন নিয়ে এসেছে, যা কর্মীছাঁটাইয়ের পথকে আরও মসৃণ করে দেবে ।” তাঁর কথায়, সরকার "নির্মমতা"-র পথকে আরও সুগম করছে ।
আরও পড়ুন : বিরোধীহীন রাজ্যসভায় পাশ 3 শ্রম বিল
প্রসঙ্গত, গতকালই রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটের মাধ্যমে পাশ হয় শ্রম সংস্কার সংক্রান্ত তিনটি বিল । ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস কোড 2020, অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশনস কোড 2020 ও কোড অন সোশাল সিকিউরিটি 2020 বিল । কেন্দ্রের দাবি, নতুন আইন কার্যকরী হলে শ্রম নীতিতে সংস্কার আসবে । বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে । পরিযায়ী শ্রমিকরাও সুবিধা পাবেন । বিলগুলি রাজ্যসভায় পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার দাবি করেন, এই বিল পাশ হলে 'সুরক্ষিত পরিবেশে' কাজ করতে পারবেন শ্রমিকরা । সামাজিক সুরক্ষাও পাবেন ।
তবে কেন্দ্রের এই দাবি সহজেই মেনে নিচ্ছে না বিরোধীদল এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি । তাদের অভিযোগ, এই বিল প্রয়োগের ফলে খুব সহজেই কর্মী ছাঁটাই করতে পারবে সংস্থাগুলি । প্রতিবাদের অধিকারেও বিধি নিষেধ আরোপ করা হবে । কারণ, নতুন বিল অনুযায়ী, কোনও শিল্প-কর্মী 60 দিনের নোটিস ছাড়া ধর্মঘট করতে পারবেন না । ধর্মঘট করলে তাঁদের উপর জরিমানা, প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে ।