গ্রামের অধিকাংশ মেয়ে তাঁকে বাবা বলে ডাকে । আর এখনও পর্যন্ত তাঁর মেয়ের সংখ্যা 470 । দিন দিন তা আরও বেড়ে চলেছে । না ! কোনও রক্তের সম্পর্ক নেই । পিতৃহারা এই মেয়েদের জন্মদাতা না হলেও বাকি সমস্ত কর্তব্য পালন করেছেন তিনি । যথাসময়ে বিয়েও দিয়েছেন । তিনি হলেন গুজরাতের ভাবনগরের মহেশ সাভানি ।
ভাবনগরের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী মহেশ । হিরের লেনদেন, রিয়েল এস্টেটের ব্যবসাও রয়েছে । আর এই গল্পটার শুরু এক দশক আগে । সেই সময় তাঁর ভাইকে হারান মহেশ । এরপর ভাইঝির বিয়ের সমস্ত দায়িত্ব একা হাতেই সামলান । কন্যা সম্প্রদানও করেন । এরপরই তাঁর মনে জাগে একাধিক প্রশ্ন । যাঁদের বাবা নেই তাঁরা কী করে নিজের বিয়ের ব্যবস্থা করেন ? কী করে বিয়ের এত খরচ সামলান ? এরপর আর একটি ঘটনা তাঁকে নাড়িয়ে দেয় । হঠাৎই তাঁর কম্পানির এক কর্মচারীর মৃত্যু হয় । মহেশ জানতে পারেন, 12 দিন পরই ওই কর্মীর মেয়ের বিয়ে ছিল । এরপর আর নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি তিনি । নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওই কর্মীর মেয়ের বিয়ে দেন । সেই শুরু ।
এরপর তাঁর গ্রামের একের পর এক পিতৃহারা মেয়েকে দত্তক নিতে শুরু করেন মহেশ । সবচেয়ে বড় বিষয়, এক্ষেত্রে কোনও জাত-ধর্ম বিচার করেননি তিনি । এরপর থেকে তাঁদের যাবতীয় খরচ নিজের কাঁধে তুলে নেন । একের পর এক মেয়ের বিয়ে দেন । প্রত্যেকের বিয়েতে প্রায় 4 লাখ টাকা করে খরচ করেন । পাশাপাশি বিয়েতে কনেদের সোনা-রূপোর অলঙ্কার, জামা-কাপড়, ইলেকট্রনিক্স ও বাড়ির সরঞ্জামও দেন । 2014 সালে সুরাত ও গুজরাতে গণবিবাহের আয়োজন করেন তিনি । সেবার 111 জন মেয়ের বিয়ে দেন । প্রত্যেককে 4 লাখ 50 হাজার টাকা করে দেন । অনেকক্ষেত্রে বিয়ের পরও মেয়েদের সংসারের নানা খরচ দিয়ে থাকেন । তাঁর মেয়েরা মা হলে সেই খরচও বহন করেন ।
তাই এই হিরের ব্যবসায়ীকে বোধহয় অর্থের মাপকাঠিতে মাপা মুশকিল । কারণ পিতৃহারা মেয়েগুলোর কাছে তিনি যে ভগবান ।