দিল্লি, 23 সেপ্টেম্বর : ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর প্রায় 500 জঙ্গি অপেক্ষায় রয়েছে । আজ সেনা সূত্রে এমন তথ্য জানানো হল । পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের 4 থেকে 5টি লঞ্চপ্যাডে এই জঙ্গিরা রয়েছে বলে খবর । সেনা গোয়েন্দাদের আশঙ্কা লঞ্চপ্যাডগুলিতে থাকা জঙ্গিরা যে কোনও সময় ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাতে পারে । পাশাপাশি আসন্ন উৎসবের মরশুমে ভারতে বিভিন্ন জায়গার উপর জঙ্গিদের নজর রয়েছে বলেও জানা গেছে ।
আজ সকালে সেনা প্রধান জেনেরাল বিপিন রাওয়াত জানান, মার্চে ধ্বংস হওয়া বালাকোটের জঙ্গি লঞ্চপ্যাড আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে । তিনি বলেন, "পাকিস্তান ফের বালাকোটকে সক্রিয় করে তুলেছে । এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে, ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বালাকোট । কিন্তু এখন সেখানে জঙ্গিরা আবার ফিরে এসেছে ।"
কাশ্মীর ইশু নিয়ে কূটনৈতিকস্তরে ধাক্কা খেয়েছে পাকিস্তান । তাই ফের সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে ভারতকে সমস্যায় ফেলতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ISI । প্রায় 60 জন জঙ্গি গত দু'মাসে আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং নিয়ন্ত্রণরেখা পার করেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দারা । চলতি মাসেই দেশের একাধিক স্টেশন ও ধর্মস্থানে বিস্ফোরণের হুমকি দিয়েছিল সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ । রোহতকের স্টেশন মাস্টারকে এই মর্মে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছিল । সেখানে লেখা ছিল, 8 অক্টোবর দশেরার দিন একাধিক রেলস্টেশন ও ধর্মস্থানে বিস্ফোরণ ঘটানো হবে । রাজস্থান, গুজরাত, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানার একাধিক ধর্মস্থানে বিস্ফোরণের হুমকি রয়েছে চিঠিতে ৷ রয়েছে রোহতক, হিসার, রেওয়ারি, কুরুক্ষেত্র, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, জয়পুর, ভোপাল, কোটা ও ইটারসি স্টেশনের নামও ৷ জঙ্গি অনুপ্রবেশ ছাড়াও নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর রয়েছে পাকিস্তানের সেনার উপস্থিতি । চলতি মাসের প্রথম দিকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বাঘ ও কোটলি সেক্টরে প্রায় 2000 সেনা মোতায়েন করে পাকিস্তান । নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র 30 কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ওই সেনারা ।
এই বিষয়ে সেনার প্রতিক্রিয়া, "আমাদের প্রত্যুত্তর হবে, যে কোনও স্তরে, যে কোনও দূরত্বে, যে কোনও জায়গায় । উপযুক্ত পরিকল্পনা প্রস্তুত রয়েছে । সূত্রের খবর, শ্রীনগরের 15 কম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ।"
জম্মু ও কাশ্মীর থেকে 370 ধারা প্রত্যাহারের পর থেকেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই নিয়ে সরব হয়েছে পাকিস্তান । তবে চিন ছাড়া কোনও দেশকেই পাশে পায়নি পাকিস্তান । একটা সময় অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেও পরবর্তীতে ভারতের সুরে সুর মেলান তিনিও । ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত G-৭ বৈঠকে এই মর্মে বৈঠকও করেন নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প । সেই বৈঠকের পরেই ইমরান খান বলেন, "তাঁরা (আন্তর্জাতিক মহল) সমর্থন করুক বা না করুক, পাকিস্তান (কাশ্মীর প্রসঙ্গে) যে কোনও পর্যায়ে যেতে পারে ৷" হোয়াইট হাউজ়ের সমর্থন ছাড়াই পাকিস্তান যে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে বলে হাবেভাবে বুঝিয়েও দেন তিনি ৷
শুধু ইমরান নয়, তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরাও যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারতকে । পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ দাবি করেন, অক্টোবর বা নভেম্বরের মধ্যে যুদ্ধ বাধতে চলেছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ।