লেহ, 6 জুলাই : যে কোনওরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে তৈরি ভারতীয় সেনা ৷ ভারত-চিন সীমান্তে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনার সামনে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে দেশকে সুরক্ষা দিচ্ছে প্রায় 30 হাজার জওয়ান ৷ গত জুন মাসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় গালওয়ান ভ্যালিতে চিনের PLA-র সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হন এক কর্নেলসহ 20 জন জওয়ান ৷ জখম হন 70 জনেরও বেশি ৷ এরপর থেকেই সীমান্তে সুরক্ষা বাড়িয়েছে সেনা ৷ সীমান্তে পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত 3 টি ব্রিগেড ৷
সূত্রের খবর, সাধারণ সময় ওই সীমান্তে থাকে 6 টি ব্রিগেড ৷ তার মধ্যে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনার 2 টি বিভাগ ভাগ করা থাকে ৷ তাদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টহলদারিতে পাঠানো হয় ৷ কিন্তু, 15 জুন সীমান্তে সংঘর্ষের পর সেখানে আরও 3 ব্রিগেড সেনা পাঠানো হয়েছে ৷ প্রতিটি ব্রিগেডে আছে 3 হাজারটি দল ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী ৷ ওই তিনটি অতিরিক্ত ব্রিগেডে রয়েছে প্রায় 10 টি সেনাদল ৷ তাদের বেশিরভাগই এসেছে পঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশ থেকে ৷ 14 কর্পস কমান্ডার ভারতীয় সেনার সবথেকে বড় কর্পস ৷ তারই আওতায় সেখানে আরও 3 অতিরিক্ত ব্রিগেড পাঠানো হয়েছে ৷ 1962 সালে চিনের সঙ্গে যুদ্ধের পর এই প্রথম এত পরিমাণ সেনা পাঠানো হয়েছে সীমান্তে ৷
জানা গেছে, 2017 সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সার্জিকাল স্ট্রাইকে যে সেনারা গেছিলেন তাদেরই লাদাখে পাঠানো হয়েছে ৷ ভারতীয় প্যারা সেনাদের এক ডজনেরও বেশি স্পেশাল ফোর্স রেজিমেন্ট থেকে এসেছে যাদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি, পার্বত্য এলাকায় যুদ্ধের জন্য লাদাখ স্কাউটসের 5টি ব্যাটালিয়নের রেজিমেন্ট আনা হয়েছে ৷ শুধুমাত্র তাই নয়, গালওয়ান ভ্যালিতে সংঘর্ষের পর অ্যামেরিকা থেকে আনা হয়েছে M-777 আলট্রা লাইট হাওইৎজ়ার ৷ এই প্রকার যু্দ্ধবিমান এতটাই মারাত্মক যা পাহাড়ি এলাকাতেও 28 থেকে 30 কিমি অবধি দূরত্ব থেকে গুলি ছুঁড়তে পারে ৷ এছাড়াও C-17 গ্লোবমাস্টার III এয়ারক্র্যাফ্ট আনা হয়েছে ৷ যা সেনা , কমব্যাট যান ও T-72 বা T-90 - র মতো ভারি ট্যাঙ্কগুলি তুলতে পারবে ৷
সেনা সূত্রে খবর, সীমান্তে আনা হয়েছে রাশিয়ান সুখোই 30 যুদ্ধবিমান, MIG 29 জেটস , ভারি জিনিস তোলার ইলিউসিন 76 বিমান, AN 32 পরিবহন বিমান , MI 17 ইউটিলিটি বিমান ও BMP-2/2K ইনফ্যানট্রি কমব্যাট যান ৷ দৌলত বেগ ওলডি সেক্টরে সেনার ক্ষমতা বাড়াতে C-130J সুপার হারকিউলিস এয়ারক্র্যাফ্ট আনা হয়েছে ৷
সাধারণত নৌসেনায় মেরিটাইম পেট্রলের জন্য ব্যবহৃত P-8I এয়ারক্র্যাফ্ট লাদাখের উচ্চ এলাকায় নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হয় ৷ সেই P-8I এয়ারক্র্যাফ্ট 2017 সালে সিকিমের ডোকলামে ভারত-চিন সংঘর্ষের সময় নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল ৷ এছাড়াও মূলত রাশিয়া ও পশ্চিমের দেশগুলির প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত মিজ়াইলের মতো ভারতীয় সেনাও ব্যবহার করছে DRDO - র তৈরি ' আকাশ ' মিজ়াইল ৷ সেনা সূত্রে খবর, লাদাখে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট ও আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় সেনা । একটি আধুনিক সেনাবাহিনীর যা যা প্রয়োজন আমাদের কাছে সবই আছে । যা চিনের কোনওরকম আগ্রাসনের যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ৷ "