ওয়াশিংটন, 1 মে : আগামী সপ্তাহেই আমেরিকায় ভারতীয় নাগরিকের প্রবেশে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করতে চলেছে বাইডেন সরকার ৷ শুক্রবার এই ঘোষণা করেছিল হোয়াইট হাউজ ৷ প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, "সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন-এর পরামর্শ অনুযায়ী ভারত থেকে যাত্রী আসার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করছে প্রশাসন ৷" আগামী মঙ্গলবার, 4 মে থেকে চালু হবে এই নিয়ম ৷ সমগ্র ভারতে নিত্য নতুন ভ্যারিয়্যান্টস আর ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণের কারণেই এই সিদ্ধান্ত, জানিয়েছেন সাকি ৷
আরও পড়ুন: 2 দিন মৃত মায়ের পাশে অভুক্ত শিশু, করোনার থাবা মানবিকতায় ?
এবার সে বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন খোদ জো বাইডেন ৷ তবে ছাড়পত্র থাকছে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ৷ প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভারতের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির কারণে 4 মে থেকে ভারত-আমেরিকা যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ৷ এর ঘণ্টাখানেক পরেই সেক্রেটারি অফ স্টেট টনি ব্লিনকেন জানান পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে না, ছাড় দেওয়া হচ্ছে বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে ৷ ব্রাজিল, চিন, ইরান আর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রেও এই একই নীতি প্রয়োগ করেছে বাইডেন সররকার ৷
কখন শুরু হচ্ছে ভারত-আমেরিকা যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা?
আগামী মঙ্গলবার, 4 মে থেকে ভারত থেকে আমেরিকায় যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল বাইডেন সরকার ৷ তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন ৷
কাদের জন্য মিলছে ছাড়পত্র ?
ছাড় পাবেন আমেরিকার নাগরিকরা বা স্থায়ী বাসিন্দারা, আর তাদের স্বামী অথবা স্ত্রী ৷ বেশকিছু মানবাধিকার কর্মী, নির্দিষ্ট কয়েকজন সাংবাদিক, অ্যাকাডেমিকস আর আমেরিকায় পড়তে যাওয়া কিছু পড়ুয়ারা এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবেন ৷ তবে ভারতে চোদ্দো দিন বাস করে, তার পর আমেরিকা যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে ৷
ছাড় মিললেও আমেরিকা যেতে গেলে "সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন"-এর নিয়মানুযায়ী যাত্রীদের কোভিড-নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে রাখতে হবে ৷ আর এই কোভিড পরীক্ষা করতে হবে যাত্রার তিন দিন অর্থাৎ 72 ঘণ্টা আগে ৷ ভ্যাকসিন নিলেও কোভিড পরীক্ষা আবশ্যিক ৷ আমেরিকা পৌঁছে তিন থেকে পাঁচ দিনের মাথায় ফের এই পরীক্ষা করতে হবে আর থাকতে হবে সেল্ফ-কোয়ারান্টিনে ৷
ভারত-আমেরিকা বিমান পরিষেবা
বর্তমানে ইউনাইটেড এয়ারলায়েন্স হোল্ডিংস আইএনসি. ভারত-আমেরিকার মধ্যে সরাসরি মাত্র দু'টি বিমান চালাচ্ছে ৷ প্রতিদিন দু'দেশের মধ্যে চার বার চলাচল করছে এই বিমান ৷ এপ্রিলে এয়ার ইন্ডিয়ার তিন থেকে ছ'টি বিমান প্রতিদিন যাতয়াত করত দু'দেশের মধ্যে ৷
বিধিনিষেধের কারণ
আমেরিকায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, তাই এখন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ৷ একই সময়ে ভারতে ঠিক উল্টো ছবি ৷ বুধবার আর বৃহস্পতিবার প্রত্যেক দিন প্রায় 3,050 জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণে, যা বিশ্বে রেকর্ড গড়েছে ৷ বিগত সাত দিন ধরে গড়ে 3,57,000 নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, জন হপকিন্সের হিসেব অনুযায়ী গত সপ্তাহের তুলনায় সংক্রমণের হার 26 শতাংশ বেড়ে গিয়েছে ৷ আর ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহ অবস্থার জন্য দায়ী নতুন ভ্যারিয়ান্ট বি.1.617 ৷ এই ভ্যারিয়ান্টের দেখা মিলেছে আমেরিকাতেও ৷
ন্যাশনাল ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিজম অফিসের 2019-এর হিসেব অনুযায়ী প্রতি বছর পনেরো লক্ষ ভারতীয় আমেরিকা যাতায়াত করেন ৷
এর আগে একটি টুইটে বারে বারে ভারতে থাকা আমেরিকার নাগরিকদের দেশে ফিরে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেয় হোয়াইট হাউজ ৷ সেখানে জানানো হয়, ভারত-আমেরিকার সরাসরি বিমান পরিষেবা ছাড়াও, ইউরোপের অন্যান্য দেশের মাধ্যমেও আমেরিকা ফিরতে পারবে তারা ৷