কলকাতা, 11 ডিসেম্বর : পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে হঠাৎই ভেসে উঠেছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন বা সংক্ষেপে মিম। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সংখ্য়ালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে পারে মিম ৷ তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছবিটা কিছুটা হলেও বদলাতে শুরু করেছে ৷ কারণ, রাজ্য়ে মিমের শীর্ষ নেতৃত্বেই এবার ভাঙন ধরাতে শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ যার সূচনা হয়েছিল গত নভেম্বর মাস থেকে ৷
বিধানসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই মিম এরাজ্য়ে নিজেদের প্রার্থী দেবে বলে ঘোষণা করেছে ৷ সেইমতো মিমের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসির পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক সভা করার কথা রয়েছে ৷ এমনকী রাজ্য়ের সংখ্য়ালঘু মুসলমান ভোট টানতে বিভিন্ন সংখ্য়ালঘু সংগঠনের সঙ্গেও তারা যোগাযোগ শুরু করেছে ৷ যারপর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে, বিহার নির্বাচনের মতো এরাজ্য়েও মিম সংখ্য়ালঘু ভোটে ভাগ বসিয়ে বিজেপির সুবিধা করে দিতে পারে । তবে, সেই আশঙ্কায় খুব একটা কান দিতে চাননি এরাজ্য়ের শাসক দলের সংখ্য়ালঘু নেতা তথা পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । তিনি বিষয়টিকে কার্যত ফুৎকারেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন । একই রকমভাবে রাজ্য়ে মিমের উত্থানকে গুরুত্ব দিতে চায়নি রাজ্য়ের বিরোধী বাম ও কংগ্রেস ।
আর তারপরেই রাজ্য়ে মিমের শীর্ষ স্তরে ভাঙন ধরতে শুরু করেছে । যার শুরুটা হয়েছিল 23 নভেম্বর । সেদিন রাজ্য়ে মিমের শীর্ষনেতা আনোয়ার শাহসহ একাধিক সদস্য় তৃণমূলে যোগদান করেন । তৃণমূলে যোগ দিয়ে আনোয়ার শাহ জানিয়েছিলেন, সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপ্য়ায়ের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি । তবে, শুধুই আনয়োর শাহ নন । বৃহস্পতিবার মিমের যুব সংগঠনেও বড়সড় ভাঙন ধরায় তৃণমূল। রাজ্য়ে মিমের যুব সংগঠনের সভাপতিসহ মোট 30 জন তৃণমূলে যোগ দেন । মিমের যুব সভাপতি মহম্মদ শফিউল্লাহ খানের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম ।
আরও পড়ুন : মিমের রাজ্য যুব সংগঠনে ভাঙন ধরাল তৃণমূল
তৃণমূলে যোগ দিয়ে মহম্মদ শফিউল্লাহ খান জানিয়েছিলেন, যে কোনওভাবে রাজ্য়ে বিজেপিকে আটকানোই তাঁদের লক্ষ্য় । আর সেই লক্ষে পৌঁছাতে লংখ্য়ালঘু মুসলিম ভোট তাঁরা ভাগ হতে দিতে চান না । আর এখানেই কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে রাজ্য়ের শাসক দল। ভবিষ্য়তে আরও অনেকে মিম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাদের মতে, রাজ্য়ের সংখ্য়ালঘু বিভিন্ন সংগঠন চায় না বিজেপি এরাজ্য়ে ক্ষমতায় আসুক । আর সেক্ষেত্রে বিজেপিকে আটকাতে পারে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস । তবে, মিম যদি এরাজ্য়ে নিজেদের সামান্য় প্রভাব ফেলতে পারে, তবে আসন্ন বিধানসভায় বেশ কিছুটা সংখ্য়ালঘু ভোট তারা ভাঙিয়ে নেবে । যা আদতে বিজেপির সুবিধা করে দেবে । আর বিহার নির্বাচনের ফল দেখার পর, সেটাই চাইছে না রাজ্য়ের বিভিন্ন সংখ্য়ালঘু সংগঠনগুলি । আর সেই সুযোগটাকেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কাজে লাগাতে শুরু করেছে । যার শুরুতেই রাজ্য়ে মিমের শীর্ষস্তরে ভাঙন ধরাচ্ছে শাসক দল ।