নয়াদিল্লি, 16 জুলাই: দিল্লির কিছু রাস্তা থেকে নামতে শুরু করেছিল জল ৷ শনিবার কমতে শুরু করেছিল যমুনার জলস্তরও ৷ তবে স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি ৷ কারণ সন্ধ্যায় ফের বৃষ্টি হয় দিল্লিতে। আর তার জেরে বেশ কয়েকটি রাস্তা নতুন করে জলমগ্ন হয়ে পড়ে । এর আগে বন্যার জল কমে যাওয়ায় প্রশাসন কিছু রাস্তা খুলে দিয়েছিল । কিন্তু আবারও জটিল হল রাজধানীর পরিস্থিতি । এমতাবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতির জন্য একে অপরকে দুষল বিজেপি ও আপ।
দিল্লির জলসম্পদ মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজের অভিযোগ, হরিয়ানা এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ষড়যন্ত্রের কারণেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "দিল্লিতে গত তিন-চার দিনে বৃষ্টি হয়নি ৷ তবুও যমুনায় জলের স্তর 208.66 মিটারে পৌঁছেছে । হাথনিকুন্ড ব্যারাজের জল তিনটি খাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি ষড়যন্ত্রের অংশ ৷ 9 থেকে 13 জুলাইয়ের মধ্যে যমুনা খাল থেকে শুধুমাত্র দিল্লির দিকে জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল । পশ্চিম ও পূর্ব খাল থেকে কোনও জল ছাড়া হয়নি ।"
যদিও আপ সরকারের এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি ৷ উলটে দিল্লির বন্যার জন্য আপ সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং দুর্নীতির অভিযোগকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে 'ব্যর্থ' হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া এবং সাংসদ পারভেশ সাহেব সিং ভার্মার অভিযোগ, কেজরিওয়ালের সরকার গত 8 বছর ধরে যমুনার জলকে ময়লা এবং আবর্জনা মুক্ত করতে কোনও পদক্ষেপ করেনি ৷ এই কারণেই দিল্লিতে বন্যা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে যমুনা, বন্ধ দিল্লির পুরনো রেলব্রিজ
দিল্লির বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে তরজা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ দিল্লির আপ সরকার এবং বিজেপির মধ্যে চলছে আক্রমণ ও পালটা আক্রমণের পালা ৷ রাজধানীতে বন্যার জন্য একে অপরকেই দায়ী করেছে এই দুই দল ৷ এমনই আবহে জলমন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনাকে চিঠি লিখে সাম্প্রতিক বন্যার মোকাবিলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷
শনিবার দিল্লির পূর্তমন্ত্রী অতীশি টুইট করেন, "আজ সন্ধ্যায় দিল্লিতে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে । ফের রাস্তাগুলি জলমগ্ন । নিকাশি এবং যমুনার জলের স্তর এখনও খুব বেশি হওয়ায় জল নিষ্কাশন হতে কিছুটা সময় লাগবে ৷ এই মুহূর্তে শহরের জল নিকাশি করে যমুনায় পাম্পের সাহায্যে ফেলা সহজ নয় ৷ কারণ দিল্লি ইতিমধ্যেই প্লাবিত।" দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, যমুনার জলের স্তর ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে এবং আরও ভারী বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক হয়ে যাবে ৷ তবে বন্যা পরিস্থিতি এখনও রয়েছে ।
আরও পড়ুন: দিল্লির বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ নিতে ফ্রান্স থেকে শাহকে ফোন মোদির
উল্লেখ্য, আবহাওয়া বিভাগ আগামী দু'দিনের মধ্যে দিল্লিতে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলেছে ৷ অন্যদিকে, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে হাওয়া অফিসের তরফে । সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের বন্যা-মনিটরিং পোর্টাল অনুসারে, শনিবার সন্ধ্যা 7টার মধ্যে যমুনার জলস্তর 206.87 মিটারে নেমে আসে ৷ তার আগে বৃহস্পতিবার রাত 8টায় সর্বোচ্চ সীমা 208.66 মিটারে পৌঁছেছিল জলস্তর ।