কোঝিকোড়, 3 এপ্রিল: এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রীদের উপর পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ব্য়াপক আতঙ্ক ছড়াল কেরলে ৷ আলাপ্পুঝা-কান্নুর এক্সিকিউটিভ এক্সপ্রেস ট্রেনে আচমকা যাত্রীদের উপর পেট্রোল নিয়ে হামলা চালায় এক ব্য়ক্তি ৷ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এক শিশু সহ তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন বেশ কয়েকজন ৷ আগুন লাগার ঘটনার পর রেললাইন থেকে এক শিশু ও দু'জন মধ্যবয়সী ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত তিনজনের মধ্য়ে দু'জনকে শনাক্ত করা গেলেও এখনও একজনকে চিহ্নিত করা যায়নি ৷ জানা গিয়েছে এদের মধ্য়ে, মাত্তান্নুর পলোট পল্লীর বাসিন্দা রহমত (43) এবং তার ছোট বোনের মেয়ে সাহারা (2) আছে। তৃতীয় জনের পরিচয় এখনও মেলেনি ৷ তিনটি দেহই ইলাথুর স্টেশন এবং কোরাপুজা ব্রিজের মধ্যে রেল লাইনের উপর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহগুলিকে কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ট্রেনে আগুন লেগেছে জেনে নিহতরা ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়ার কারণেই তাদের মৃত্য়ু হয়েছে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: বাংলার হিংসা নিয়ে লোকসভায় আলোচনার দাবি লকেটের
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি ট্রেনের ডি-ওয়ান কামরায় এসে আচমকা যাত্রীদের উপর হামলা চালায়। তার পরণে ছিল লাল জামা । মাথায় টুপিও ছিল ৷ পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্য়ক্তি ট্রেনে উঠেই যাত্রীদের উপর দুই বোতল পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। রবিবার রাত 9টা নাগাদ কান্নুরের দিকে যাচ্ছিল আলাপ্পুজা-কান্নুর এক্সিকিউটিভ এক্সপ্রেস ৷ প্রথমে ট্রেনের ডি-ওয়ান কামরার যাত্রীদের লক্ষ্য় করে আগুন লাগানো হলেও, পরে তা পাশের ডি-টু বগিতেও ছড়িয়ে পড়ে। অপরিচিত ওই ব্যক্তির আচমকা হামলায় ভীত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। যাত্রীরা চেন টানলে কোরাপুজা ব্রিজের কাছে ট্রেনটি থেমে যায়। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, সেই সময় কয়েকজন যাত্রী প্রাণ বাঁচাতে ট্রেন থেকে নামার চেষ্টা করে। তার জেরে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ৷ অন্য়দিকে, এই ঘটনায় 9 জন দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে খবর। তবে কেউ গুরুতর আহত হয়নি বলেই জানাচ্ছে পুলিশ। এর মধ্য়ে, পাঁচজন মেডিক্যাল কলেজে, তিনজন বেবি মেমোরিয়াল হাসপাতালে এবং একজন কৈলান্ডি তালুক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সন্দেহভাজন বছর 35-এর ওই ব্যক্তি ঘটনার পরই কোরাপুজা ব্রিজে ট্রেন থামলে সে পালিয়ে যায় ৷ হামলার পর বেশ কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। রেল পুলিশ ও কেরালা পুলিশ যৌথভাবে তার খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করেছে। পুলিশ এলাথুর থেকে কোরাপুজা হয়ে কাট্টিলা পিডিকা পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েছে। আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।