কোয়েম্বাটোর, 22 ফেব্রুয়ারি: স্ত্রীর মূর্তি গড়ে তাঁকে পুজো করেন স্বামী ৷ শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই করে থাকেন পালানিস্বামী ৷ ঘটনাটি তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরে ৷ এখানে শিরামুগাইয়ের কাছে গণেশাপূরম গ্রামে থাকেন পালানিস্বামী ৷ পেশায় কৃষক ৷ তাঁর দু'টি সন্তান ৷ 2019 সালে তাঁর স্ত্রী সরস্বতী মারা যান ৷ 45 বছরের বিবাহিত জীবনের শেষে এই বিচ্ছেদের আঘাত সহ্য করতে পারেননি স্বামী ৷
সরস্বতীর থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাননি পালানিস্বামী ৷ নিজের হাতে স্ত্রীর মৃতদেহ বাড়ির বাগানে কবর দিয়েছেন ৷ তারপর সরস্বতীর সমাধিস্থলের উপরে একটি স্মৃতি ভবনও তৈরি করেছেন ৷ এতেই ক্ষান্ত হননি ৷ স্ত্রীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে কবরস্থানের ঠিক উপরে স্ত্রী সরস্বতীর একটি মূর্তি গড়েন পালানিস্বামী ৷
তারপর থেকে 3 বছর ধরে স্ত্রীর মূর্তিটি পুজো করছেন পালানিস্বামী ৷ প্রতিদিন সরস্বতীর মূর্তির কাছে দু'বার প্রদীপ জ্বালান ৷ স্ত্রীকে ছেড়ে তিনি কোথাও যান না ৷ বাগানেই থাকেন ৷ বাইরে গেলে যদি কোনও ভাবে পুজো করতে না পারেন এই ভয়ে ! সরস্বতীর মৃত্যুর আগে পালানিস্বামী একটি নতুন বাড়ি তৈরি করেন ৷ তাঁর নাম দেন পালানিস্বামী-সরস্বতী হাউজ ৷
আরও পড়ুন: স্বামী-স্ত্রী'র ঝগড়া ! 42 বছর ধরে সীতার দেওয়া অন্ন স্পর্শ করেন না রামচন্দ্র
এ প্রসঙ্গে পালানিস্বামী বলেন, "বিয়ের দিন থেকে আমরা সবসময় সুখে, আনন্দে থেকেছি ৷ 45 বছরের বিবাহিত জীবনে আমাদের মধ্যে একবারও ঝগড়া হয়নি ৷ হঠাৎ আমার স্ত্রী মারা যান ৷ এই ঘটনায় সাংঘাতিক আঘাত পেয়েছিলাম ৷ তিনি সবসময় আমার সঙ্গে থাকতে চাইতেন ৷ আমি তাঁর জন্য একটি মেমোরিয়াল হল তৈরি করলাম ৷ তারপর তাঁর মূর্তি গড়ে পুজো করতে থাকি ৷" স্ত্রীর মূর্তি গড়তে তিনি তিরুপুরের কাছে থিরুমুরুগানে একটি ভাস্কর্য গ্যালারিতে তাঁর ফোটো দেন ৷ তারাই সরস্বতীর মূর্তি তৈরি করে দেয় ৷ তিনি বলেন, "তাঁর সঙ্গে কাটানো সময়গুলো কখনও ভুলতে পারব না ৷ তবে ও যে আমায় ফেলে চলে যাবে, এটা মেনে নিতে পারিনি ৷ যে কিনা, কখনও কোনও অবস্থায় আমায় ছেড়ে থাকেনি ৷ প্রতিটা দিন আমি তাঁর স্মৃতিতে কাটাই ৷"
বর্তমানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হলে অনেক সময় তার জল আদালত পর্যন্ত গড়ায় ৷ ছোটখাটো সমস্যায় দম্পতিরা বিবাহ বিচ্ছেদ চান ৷ এ প্রসঙ্গে পালানিস্বামী বলেন, "স্বামী ও স্ত্রী- দু'জনের দু'জনকে বোঝা উচিত ৷ স্বামীর স্ত্রীর কথা মেনে চলা উচিত ৷ অন্যদিকে স্ত্রীরও স্বামীর কথা শোনা উচিত ৷ এতে দু'জনের মধ্যে ঝগড়া হবে না ৷ ভালোবাসা অটুট থাকবে ৷"