বেঙ্গালুরু, 9 ডিসেম্বর: পদ্মিনী যোগ সেবাস্প্রিতি (Padmini Jog Sevaspirathi), লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় (London University) থেকে পড়াশোনা করা 78 বছরের এই বৃদ্ধা শারীরিক সক্ষমতার এক নতুন বেঞ্চমার্ক নির্ধারণ করেছেন ৷ পদ্মিনীর স্বামী সেনাবাহিনীতে (Indian Army) ছিলেন ৷ তিনি এখন প্রয়াত হয়েছেন ৷ তবে পদ্মিনী এখন সেনা জওয়ানদের যোগ প্রশিক্ষণ দেন ৷ সমুদ্রস্পৃষ্ঠ থেকে কয়েক হাজার ফুট উপরে কঠিন আবহাওয়ার মধ্যে তিনি যোগাসন (Yoga) শেখাচ্ছেন ৷ পাশাপাশি সারা দেশেও চলছে তাঁর প্রশিক্ষণ শিবির ৷
পদ্মিনী গার্হস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতক ৷ তাঁর বিয়ে হয় কর্নেল প্রতাপ যোগের সঙ্গে ৷ তাঁদের দুই সন্তান রয়েছেন । বিয়ের পর পদ্মিনী অলস ভাবে দিন কাটাতে পছন্দ করতেন না ৷ তাই একটি মন্টেসরি কোর্স করেন ৷ তার পর বিনামূল্যে শিশুদের পড়াতেন । স্বামীর অবসরের পর তাঁরা তাঁদের নিজের শহর নাগপুরে ফিরে যান ৷ সেখানে তিনি একটি যোগাসন শিবিরে যোগ দেন ৷ তখন থেকে ক্রমশ যোগাসনের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে পদ্মিনীর ৷
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, "আমরা দু’জনেই যোগের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম । আমরা দু’জনেই বাড়িতে অনুশীলন শুরু করি । কয়েক বছর পর আমরা হরিদ্বারে রামদেব বাবার প্রশিক্ষণের অধীনে যোগ শিক্ষক হওয়ার প্রশিক্ষণ নিই ৷ পরে আমরা আরও যোগব্যায়াম কোর্স করি ৷ ভোপালের কাছে সিহোরে একটি দাতব্য শিবির করেছিলাম ৷ সেখানে 600 জন অংশগ্রহণ করেন । আমরা সারা দেশে ঘুরেছি ৷''
তিনি স্কুল, কলেজ, বৃদ্ধাশ্রম, রোটারি ক্লাব এবং সিনিয়র সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশনগুলিতে যোগ শিবির পরিচালনা করেছেন । 2014 সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মিনীকে একটি মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় ৷ সেই সময় তাঁর স্বামী প্রতাপ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান । এর পর সেনা জওয়ানদের যোগাসনের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন পদ্মিনী ৷ স্বামীর মৃত্যুর এক মাস পর, পদ্মিনী বেঙ্গালুরু আর্মি পাবলিক স্কুলে একটি ক্যাম্প করেন ৷ সেই প্রথম তিনি একা যোগাসন প্রশিক্ষণ করান ।
তিনি এখনও পর্যন্ত সৈন্যদের জন্য 940টি ক্যাম্প পরিচালনা করেছেন । উল্লেখযোগ্য ভাবে, তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 12,300 ফুট উপরে যোগ শিবিরও পরিচালনা করেছেন । তিনি জানান, যাঁরা উদ্বেগ ও চাপকে সঙ্গী করে দায়িত্ব পালন করেন, সেই জওয়ানদের জন্য যোগব্যায়াম অপরিহার্য ৷
তিনি আরও বলেন,“শুধু তাঁরাই নন, প্রত্যেকেরই প্রতিদিন প্রাণায়াম এবং যোগাসন করা উচিত । এটি আমাদের দৈনন্দিন রুটিনের একটি অপরিহার্য অংশ হিসাবে বিবেচনা করা উচিত ৷’’
আরও পড়ুন: ইমিউনিটি বাড়বে যোগাসন-প্রাণায়াম, যোগ দিবসে লক্ষ্য হোক করোনা মুক্ত ভারত