শ্রীনগর, 24 অক্টোবর : গ্রেট ব্রিটেনের জাতীয় পতাকা (Union Jack) 1947 সালের 15 অগস্ট অবনমিত হলেও তার পরের কয়েক মাস ধরে চলেছিল দেশ গঠনের প্রক্রিয়া, যা আজও চলছে ৷ ডি-ডে-র পরও চলতে থাকে স্বাধীনতার সংগ্রাম ৷ বীরত্ব ও আত্মত্যাগের জন্য কিছু নাম খোদাই করা হয়ে গিয়েছিল ভারতের ইতিহাসে ৷ সে রকমই একজন জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) 22 বছরের মকবুল শেরওয়ানি (Maqbool Sherwani)৷
শ্রীনগর বিমানবন্দরে ভারতীয় বাহিনীকে অবতরণ করানোর জন্য পাকিস্তানি উপজাতিদের থেকে মূল্যবান সময় কিনেছিলেন মকবুল শেরওয়ানি ৷ তাঁর একক প্রচেষ্টায় পাক উপজাতিদের অভিযানকে ব্যর্থ করে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ এই বীরত্বের জন্যই নায়কের আসনে বসেছেন মকবুল শেরওয়ানি ৷ 1947 সালের 22 অক্টোবর সীমান্ত পার করে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করেছিল পাকিস্তানি উপজাতিরা ৷ তার কিছু সময়ের মধ্যেই কাশ্মীরের মাহারাজা হরি সিং শ্রীনগর ছেড়ে পালিয়ে যান ৷ তিনি জম্মুতে ভারতীয় বাহিনীর কাছে গিয়ে সাহায্য চান ৷ 26 অক্টোবর ভারতের সঙ্গে অধিগ্রহণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন মহারাজা ৷ এরপর তড়িঘড়ি পাকিস্তানি উপজাতিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ দীর্ঘ যুদ্ধের পর পাক উপজাতিরা পিছু হঠতে বাধ্য হয় ৷
শ্রীনগর বিমানবন্দরে পৌঁছনোর রাস্তা খুঁজছিল উপজাতিরা ৷ সেই সময় শেরওয়ানি তাদের দিকভ্রষ্ট করেন ৷ তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর রুট বুঝতে পেরে তাঁকে ধরে ফেলে উপজাতিরা ৷ বারামুলায় তারা শেরওয়ানিকে ক্রুশবিদ্ধ করে তাঁর শরীর লক্ষ্য করে ছোড়ে 14টি বুলেট ৷ শহরের মানুষদের সতর্ক করার জন্য শেরওয়ানির দেহটি রাস্তার মাঝখানে ঝুলিয়েই রাখা হয় ৷ পরে ভারতীয় সেনা দেহটি নামায় ৷ 1947 সালের সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মকবুল শেরওয়ানি ৷
আরও পড়ুন: Independence Special : 1857-তে হিসারের স্বাধীন হওয়ার রক্তাক্ত কাহিনি
প্রয়াত মকবুল শেরওয়ানির নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে আর্জি জানিয়েছেন বারামুলা পৌর কমিটির চেয়ারম্যান তৌসিফ রীণা ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে মকবুল শেরওয়ানির আত্মত্যাগের কাহিনি, কীভাবে তিনি দেশকে সুরক্ষিত রেখেছিলেন সেই ঘটনা জানতে পারবেন দেশের নাগরিকরা ৷
আজ যখনই উপজাতিদের হামলার প্রসঙ্গ ওঠে, তখনই কাশ্মীরিদের স্মরণে আসে 22 বছরের মকবুল শেরওয়ানির নাম ৷ ভারতীয় বাহিনীকে সাহায্য করে হামলা প্রতিহত করার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছিলেন মকবুল শেরওয়ানি ৷
আরও পড়ুন : Independence Special : বয়স ছিল মাত্র 13, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন কাটিহারের ধ্রুব কুণ্ডু
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের উপজাতিরা যখন বারামুলায় হামলা চালিয়েছিল, তখন মকবুল শেরওয়ানি দেশের সুরক্ষার জন্য রাস্তা আটকে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সাহায্য করেছিলেন ৷ 22 অক্টোবর শেরওয়ানি দিবস হিসেবে পালন করা হয় এবং বারামুলার শেরওয়ানি হল তাঁর নামেই রাখা হয়েছে ৷ সেখানে প্রতি বছর তাঁর আত্মত্যাগের কাহিনি তুলে ধরা হয় ৷
আরও পড়ুন : Independence Special : কেরালার পাজহাসসি রাজা সংগঠিত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তির-ধনুক নিয়ে লড়াই করেছিলেন