বিকানের (রাজস্থান), 20 সেপ্টেম্বর: বয়স 75 বছর ৷ কিন্তু তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই তাঁর ৷ শুধুমাত্র ভক্তি ও বিশ্বাসের উপর ভর করে কলকাতা থেকে 2 হাজার কিমি দূরে রাজস্থানের বিকানের জেলার দেশনোকে অবস্থিত করণী মাতাকে দর্শনের জন্য যাচ্ছেন ৷
নাম গোপাল দাসরথী ৷ 13 অগস্ট কলকাতা থেকে হেঁটে দেশনোকের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি ৷ আজ পর্যন্ত 37 দিন অতিক্রান্ত হয়েছে ৷ যেখানে তিনি 1 হাজার 100 কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন ৷ এই বয়সে এসে কিসের টানে তিনি করণী মাতার দর্শনে যাচ্ছেন ? প্রশ্ন করতেই তাঁর উত্তর, "মায়ের প্রতি ভক্তিই আমাকে নিয়ে যাচ্ছে ৷" 13 অগস্ট কলকাতা থেকে রওনা হওয়ার দিন থেকে পরিচিতরা তাঁর সঙ্গে থাকলেও তিনি একাই হেঁটে যাচ্ছেন ৷ সঙ্গে থাকা লোকজন কেবল তাঁর যত্ন নিচ্ছেন ৷ রাতে ও দিনে বিশ্রামের ব্যবস্থা করছেন ৷
তবে দেশনোকের বাসিন্দা এক যুবকও তাঁর সঙ্গে হাঁটছেন ৷ গোপাল দাসের সাহস দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই ক্রমাগত তাঁর সঙ্গে হেঁটে চলেছেন যুবক ৷ এই বয়সে এতটা হাঁটা যাত্রাপথে পাড়ি দেওয়া নিয়ে পরিবার সম্মতি দিয়েছিল ? এই প্রশ্নে গোপাল দাস বলেন, "সবাই নিজ নিজ উপায়ে আমায় থামানোর চেষ্টা করলেও আমার সংকল্প অটল ছিল ৷ তা দেখেই পরে সবাই রাজি হয় ৷"
এই পদযাত্রায় গোপাল দাসের সঙ্গে একটি গাড়ি যাচ্ছে ৷ যেখানে মা করণীর ছবি রাখা আছে ৷ সেখানে প্রদীপ জ্বলছে এবং অবিরাম পণ্ডিতরা দেবীর বইপাঠ করে চলেছেন ৷ দেশনোকে গোপাল দাসের একটি সম্পূর্ণ পরিবার রয়েছে ৷ কলকাতার পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের কোলাপুর জেলার ইচলকরঞ্জিতেও তাঁদের একটি বড় কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে ৷ তাঁর পূর্বপুরুষরা দেশনোক থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়ে একই ব্যবসা শুরু করেছিলেন ৷ প্রায় 30 বছর আগে ব্যবসা সম্প্রসারণের পরে গোপাল ইচলকরঞ্জিতে একটি কাপড়ের কারখানা তৈরি করেছিলেন ৷
মা করণীর প্রতি তাঁর অটুট আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে ৷ তিনবার দণ্ডবৎ ও পরিক্রমা করেছেন তিনবার ৷ মা করণীর নামে তাঁর সংস্থার নামকরণ করেছেন ৷ এমনকী তাঁর কারখানায় মা করণীর মন্দিরও তৈরি করেছেন ৷ গোপাল দাস তিন মাসে চার দিন কোনওকিছু না-খেয়ে, না-পান করে উপোস করেন ৷ সম্পূর্ণ নীরবতা পালন করেন ৷ এই পদযাত্রার সময়ও তিনি এটি অনুসরণ করছেন ৷ তিনি নিজে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ-ছ'বার দেশনোকে করণী মাকে দর্শন করতে আসেন ৷
আরও পড়ুন : প্রতিদিন 10,000 পা হাঁটা ডিমেনশিয়া, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, বলছে গবেষণা