ভোপাল, 20 জুন: মাত্র 5 বছর বয়সে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছে চমকে দিয়েছে প্রিশা লোকেশ নিকাজু ৷ এটি করার জন্য কনিষ্ঠ পর্বতারোহী হয়েছে সে ৷ এর আগে 6 বছরের এক বালিকা ছিল কনিষ্ঠ পর্বতারোহীর তালিকায় ৷ তবে 5 বছরের প্রিশা ওঠার পর রেকর্ডটি তার নামেই নথিভুক্ত হয়েছে ৷
5 হাজার 364 মিটার উচ্চতায় অর্থাৎ 17 হাজার 598 ফুট এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে পৌঁছতে প্রিশার মোট 9দিন সময় লেগেছিল ৷ এর আগে মহারাষ্ট্রের অনেক চূড়া ও দুর্গে ওঠার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার ৷ 24 মে বাবার সঙ্গে নেপালের লুকলা পৌঁছে ট্রেক শুরু করে প্রিশা ৷ ট্র্যাকটি 1 জুন শেষ হয় ৷ সেদিনই প্রিশা এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ৷
এরপর 4 জুন ফের নেপালের লুকলাতে ফিরে আসে ৷ এত উঁচুতে উঠতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল প্রিশাকে ৷ কীভাবে সেই সমস্যা কাটিয়ে বেস ক্যাম্পে পৌঁছল ক্লাস ওয়ানের এই খুদে ? এই প্রশ্নে প্রিশার বাবা বলেন,"এটা সত্যি যে এই অভিযান কঠিন ৷ অনেক উচ্চতর ট্রেকগুলিতে ট্রেকারদের শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় ৷ মাথাব্যথা ও তীব্র মাউন্টেন সিকনেস থাকে ৷ তবে আমরা প্রিশাকে এর জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম ৷ ওরও দৃঢ় ইচ্ছে ছিল ৷ আমি ও ওর মা সীমা দুই বছর ধরে প্রিশাকে কঠিন এই উচ্চতর ট্রেকের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম ৷"
আরও পড়ুন: কনিষ্ঠ হিসেবে এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছনো গৃহীতা এবার শাড়ি পরে চড়ল জীবধন দুর্গে
এই ট্র্যাকে যাওয়ার আগে প্রতিদিন 5 থেকে 6 মাইল হাঁটত প্রিশা ৷ অ্যারোবিক্স করতেও অভ্যস্ত ছিল ৷ অ্যাপার্টমেন্টের সিঁড়ি বেয়ে ও বাগানের দেওয়ালে ওঠাও ছিল তার নিত্যদিনের কাজ ৷ তাই এই অভিযানে সে ততটা আতঙ্কিত ছিল না ৷ তার বাবা টিআর নিকাজু ও মা প্রমিলা নিকাজু অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ৷ দাদু ও ঠাকুমা দু'বছর বয়সেই তাদের নাতনির প্রতিভা চিনতে পেরেছিলেন ৷ বেতুলের বনে শুরু হয়েছিল প্রিশার প্রশিক্ষণ ৷
তিন বোনের মধ্যে প্রিশা দ্বিতীয় ৷ তার বড়দিও ট্রেকিং করে ৷ তবে প্রিশা খেলাধুলোর প্রতি বেশি অনুরাগী ৷ ট্রেকিং ছাড়াও সাঁতার, ক্যারাটে, টেবিল টেনিস খেলতেও পছন্দ করে সে ৷ প্রিশার এই আবেগের পিছনে রয়েছে তার বাবা ৷ তিনি একজন পর্বতারোহী এবং মানালির অটল বিহারী বাজপেয়ী ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যালাইড স্পোর্টসের প্রাক্তন প্রশিক্ষণার্থী ৷
প্রিশার বাবা জানান, ভবিষ্যতে তাঁর মেয়ে হিমালয়, ধৌলাগিরি ও অন্নপূর্ণা অঞ্চলের আরও অনেক চূড়ায় আরোহণ করবে ৷ এই তালিকায় রয়েছে মাউন্ট এভারেস্টও ৷ 2 বছর বয়স থেকেই ট্রেকিং শুরু করেছিল প্রিশা ৷ এখনও পর্যন্ত সিংহগড়, লোহগড়, ভিসাপুর, কালসুবাই, কর্নালা, সোন্দাই, কোথলিগড়, ইরশালগড়, প্রবালমাচি, কালাওয়ান্তিন, শিবনেরি ও মহারাষ্ট্রের রায়গড় দুর্গে আরোহণ করেছে ৷ মাত্র 3 বছর বয়সেই প্রিশা মহারাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কালসুবাই আরোহণ করে ৷