বেঙ্গালুরু, 26 নভেম্বর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির "বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও" বার্তা যে শুধু কথার কথা হয়েই রয়ে গিয়েছে তা বারবার প্রমাণ করে বেড়ে চলা কন্যা ভ্রূণ হত্যার ঘটনা ৷ এবারে ঘটনাস্থল বেঙ্গালুরুর বাইয়্যাপ্পানাহল্লি এলাকা ৷ কন্যা ভ্রূণ হত্যা ও জন্মপূর্ব লিঙ্গ নির্ধারণ ঘটনায় বেঙ্গালুরু পুলিশ আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে রয়েছেন দু'জন চিকিৎসকও ৷ এই নিয়ে এই ঘটনায় পুলিশের জালে ধরা পড়ল মোট 9 জন ৷
বেয়াপ্পানাহাল্লি পুলিশ জানিয়েছে, চেন্নাই থেকে ডঃ থুলাসিরাম, মহীশূর থেকে ডঃ চন্দন বল্লাল এবং তার স্ত্রী মীনা, মহীশূরের একটি বেসরকারী হাসপাতালের রিসেপশনিস্ট রিজমা এবং শনিবার ল্যাব টেকনিশিয়ান নিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে জন্মপূর্ব লিঙ্গ নির্ধারণ এবং কন্যা ভ্রূণ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে ৷ গত দু'বছরে শত শত গর্ভবতী মহিলাদের সন্তান জন্মের আগে লিঙ্গ নির্ধারণ করেছেন অভিযুক্তরা ৷ শুধু তাই নয়, প্রতি মাসে 20-25টি ভ্রূণও গড়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
অভিযুক্তরা বয়ানে স্বীকার করেছে যে, গত দুবছর ধরে বেঙ্গালুরু, মান্ডিয়া ও মাইসুরুতে তাঁরা এই চক্র চালাত ৷ প্রত্যেক অবৈধ লিঙ্গ নির্ধারণ ও গর্ভপাতের ঘটনায় তাঁরা নিতেন 20 হাজার থেকে 25 হাজার টাকা ৷ চক্রের কথা সামনে আসে যখন বেয়াপ্পানাহাল্লি পুলিশ শিবানঞ্জে গৌড়া, বীরেশ, নবীন কুমার এবং নয়ন কুমারকে গ্রেফতার করে ৷ এরা প্রত্যেকেই গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভস্থ শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল ৷
একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেইা গর্ভপাত এবং গর্ভাবস্থায় সন্তানের লিঙ্গ সনাক্তকরণ চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷ মান্ডিয়ায় যে সকল পরিবার কন্যা সন্তান চাইত না সেই সকল পরিবারের গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে যাওয়া হত ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য ৷ যদি গর্ভস্থ ভ্রূণটি মেয়ে হয় তবে অভিযুক্তরা অবৈধ গর্ভপাত করিয়ে দিতেন ৷ ইতিমধ্যেই রাজকুমার রোডে আয়ুর্বেদিক ডে কেয়ার সেন্টার, উদয়গিরির একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও মাইসোরের হাসপাতাল সিল করে দিয়েছে পুলিশ ৷
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, যারা এই ঘটনায় জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারতের সংবিধান দিবস উপলক্ষে রবিবার বিধান সৌধের সামনে আম্বেদকরের মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি এ কথা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যেই দোষী হোক না কেন আমরা তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে একটি বৈঠক করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷"
উল্লেখ্য, প্রি-কনসেপশন অ্যান্ড প্রি-ন্যাটাল ডায়াগনস্টিক টেকনিকস (পিসিপিএনডিটি) অ্যাক্ট, যা প্রায়ই লিঙ্গ নির্বাচনের নিষেধাজ্ঞা আইন নামে পরিচিত, 1994 সালে সংসদে পাস হয়েছিল। এই আইন অনুসারে, গর্ভধারণের পর ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য কোনও পদ্ধতি ব্যবহার করা হলে তা আইনত নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন:
1. ভারত কখনওই সবচেয়ে জঘন্য জঙ্গি হামলা ভুলবে না, 26/11 নিয়ে মন কি বাতে সরব মোদি
2. শহরে পরপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা, এবার চিংড়িঘাটায় কাঁচি দিয়ে কুপিয়ে খুন যুবককে !
3. 'খুন নয়, ছোটনের মোবাইলে বোনের আপত্তিকর ছবি নষ্ট করতে চেয়েছিলাম', স্বীকারোক্তি অভিযুক্ত মৃত্যুঞ্জয়ের