জালাউন (উত্তরপ্রদেশ), 11 মার্চ: মাটির নীচ থেকে রুপোর মুদ্রা উদ্ধার ঘিরে হইচই পড়েছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) জালাউনে ৷ স্থানীয় তহসিল এলাকার একটি পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরির জন্য খননকার্যের সময় এই মুদ্রাগুলি উদ্ধার হয় (Silver Coins Found in House Excavation) ৷ প্রাচীন মুদ্রা উদ্ধারের ঘটনার খবর সামনে আসতেই হইচই পড়ে যায় আশপাশের এলাকায় ৷ প্রচুর মানুষ ভিড় করেন ৷ ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যায় পড়ে যান বাড়ির লোকজন ৷
শেষে খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও প্রশাসনকে ৷ পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে৷ ঘটনাস্থলে যান জেলার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ৷ প্রশাসনের আধিকারিকরা মুদ্রাগুলিকে হেফাজতে নেন ৷ অনুমান করা হচ্ছে যে ওই মুদ্রা ব্রিটিশ শাসনকালের ৷ প্রায় 161 বছরের পুরনো ৷ 1862 সালে সেগুলি তৈরি হয়েছিল ৷ প্রত্নতাত্ত্বিক দফতরের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷
পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল জালাউনের কোতোয়ালি থানার ব্যাসপুরা গ্রাম (Silver Coins Found in House in Jalaun) ৷ সেই গ্রামের বাসিন্দা কমলেশ কুশওয়াহার বাড়িতে মাটি খোঁড়ার কাজ চলছিল ৷ শুক্রবার গভীর রাতে শ্রমিকরা যখন মাটি খুঁড়ছিলেন, তখন এক শ্রমিকের বেলচা কোনও পাত্রের সঙ্গে ধাক্কা লাগে । সেই শব্দ শুনে বাড়িওয়ালাকে ডাকেন শ্রমিকরা ৷ তাঁর সামনেই খনন করা হয় ৷ একটি পাত্র পাওয়া যায় ।
সেই পাত্র বের করে আনা হলে তাতে শত শত রৌপ্য মুদ্রা ও রৌপ্য অলংকার পাওয়া যায় । বাড়িওয়ালা দেখে অবাক হয়ে যান । তিনি রৌপ্য মুদ্রা ও রৌপ্য অলঙ্কার লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন । কিন্তু গয়না ও রৌপ্য মুদ্রা পাওয়ার খবর গ্রামে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে ৷ তা দেখতে গ্রামের মানুষ পৌঁছায় কমলেশ কুশওয়াহার বাড়িতে ।
গ্রামের মানুষ প্রাচীন মুদ্রার সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে জানিয়ে দেন । খবর পেয়ে ওরাই তহসিলের ডেপুটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জালাউন কোতোয়ালির পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান । তারা খননকালে পাওয়া মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করেছে । প্রত্নতাত্ত্বিক দফতরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে । এর পর পুলিশের তত্ত্বাবধানে আশেপাশে খনন করা হয়েছিল, যাতে বোঝা যায় যে আরও মুদ্রা মাটির ভিতরে আছে কি না ! এই সব মুদ্রার গায়ে সানও লেখা আছে ৷ মুদ্রার সঙ্গে রুপোর চুড়িও পাওয়া গিয়েছে, যা দেখে মনে হয় মহিলারা হাতে এই চুড়ি পরতেন ।
ওরাইয়ের ডেপুটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ সিং জানান, নিরাপত্তার দিক থেকে ওই স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে । একই সঙ্গে মুদ্রাগুলো বাজেয়াপ্ত করে থানায় পাঠানো হয়েছে । এখন 250টিরও বেশি রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে । এর পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে রূপার চুড়িও ।
তিনি আরও জানান, ফরেনসিক টিমের পাশাপাশি প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগকেও এই বিষয়ে জানানো হয়েছে, যাতে তাদের প্রাচীনত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় । একই সঙ্গে প্রাচীন মুদ্রা লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে । সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে কত মুদ্রা উদ্ধার হয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে ।’’ কমলেশ জানান, বহু বছর ধরে তিনি তাঁর বাপ-ঠাকুর্দার সঙ্গে এখানে থাকেন । তিনি বাড়ি তৈরি করাচ্ছিলেন ৷ সেই কাজের সময় শ্রমিকরা কয়েন পাওয়ার কথা জানান । এই বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা হয় । পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত করে ।
আরও পড়ুন: অর্থের অভাবে ঘুষ হিসেবে ষাঁড় নিয়ে সরকারি আধিকারিকদের কাছে হাজির কৃষক