পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / technology

এক লাখি ন্যানো, প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন রতন টাটা

টাটা গ্রুপের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটা, যিনি দেশের সবচেয়ে সস্তা গাড়ি টাটা ন্যানো লঞ্চ করেছিলেন, বুধবার বার্ধক্য জনিত কারণে প্রয়াত হয়েছেন তিনি ৷

RATAN TATA NANO STORY
প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটা (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 10, 2024, 5:30 PM IST

হায়দরাবাদ:প্রয়াত হয়েছেন টাটা গ্রুপের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও শিল্পপতি রতন টাটা ৷ পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণে ভূষিত রতন টাটার মৃত্যুতে গোটা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রতন টাটা সেই একই ব্যক্তি যিনি দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারকে গাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। দিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি ৷ টাটা ন্যানো ছিল তাঁর স্বপ্নের মূর্ত প্রতীক। দেশে এটি 'লাখতকিয়া গাড়ি' নামেও পরিচিত ছিল ন্যানো গাড়ি ৷

প্রয়াত রতন টাটা কখন এই ঘোষণা করেছিলেন ?
ন্যানোর কথা উঠলে প্রথমেই আসে সিঙ্গুর কারখানার কথা ৷ যেখানে তিনি 1 লাখ টাকা দামে টাটা ন্যানো তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন ৷ যা দেশের সবচেয়ে সস্তা গাড়ি ৷ টাটা ন্যানো মডেল প্রথমবারের মতো 2008 সালে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত অটো এক্সপোতে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

এর পরে, 2009 সালে কোম্পানি টাটা ন্যানো চালু হয় গুজরাতের সানন্দ থেকে । এই গাড়িটি ভারতীয় বাজারে 'লাখতকিয়া' গাড়ির নাম দিয়ে বেশ শিরোনাম করেছিল। মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে আনতে এর দাম রাখা হয়েছিল মাত্র 1 লাখ টাকা। 2008 অটো এক্সপোতে টাটা ন্যানো চালু করার সময়, রতন টাটা বলেছিলেন যে "আমরা দেশকে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি দিয়েছি এবং দেশের একটি বড় অংশ এতে উপকৃত হবে ।"

2009 সালের মার্চ মাসে টাটা ন্যানো বাজারে আসে ৷ এই গাড়িটি বাজারে সাড়া ফেলতে পারেনি । ন্যানো লঞ্চের সঙ্গে সঙ্গে এর দাম প্রকাশ করা হয়েছিল এবং টাটা ন্যানো-র প্রারম্ভিক মূল্য রাখা হয়েছিল 1 লক্ষ টাকা। গাড়িটির প্রাথমিক বুকিং সবাইকে অবাক করে এবং 2,00,000 ইউনিট বুক করা হয়েছিল। টাটা মোটরস তার বুকিং থেকে 2,500 কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল ৷

বলিউডের এক নামী অভিনেত্রীর জন্য অবিবাহিতই থেকে যান রতন টাটা ?

টাটা ন্যানো-এর নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নথিভুক্ত
টাটা ন্যানো সারা দেশে দীর্ঘতম ভ্রমণ করার জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম নথিভুক্ত করেছিল। ন্যানো এই কীর্তিটি 10 ​​দিনের মধ্যে সম্পন্ন করেছিল। যাত্রাটি তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে শুরু হয়েছিল এবং টাটা ন্যানো 10,218 কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছিল এবং বেঙ্গালুরুতে যাত্রা শেষ করেছিল।

টাটা ন্যানো-র টাইমলাইন

2007: জানুয়ারিতে, সিঙ্গুরে টাটা মোটরস কারখানার নির্মাণ শুরু হয়। জুন মাসে, তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের কাছ থেকে জমি নিয়ে গাড়ি প্রস্তুতকারকদের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে (কথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে) আন্দোলন শুরু করেছিলেন। হুগলির সিঙ্গুরে বিক্ষোভ ও উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায়, টাটা মোটরস সিঙ্গুর প্রকল্প পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। 3 অক্টোবর, 2008-এ, রতন টাটা ঘোষণা করেছিলেন যে টাটা ন্যানো উৎপাদন গুজরাটের সানন্দে স্থানান্তরিত হবে ৷ যেখানে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই প্রকল্পটিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছিলেন ৷

2008: প্রথম টাটা ন্যানো আত্মপ্রকাশ করে

2009: Tata Motors ভারতের সবচেয়ে ছোট গাড়ি হিসেবে ন্যানো লঞ্চ করে

2010: টাটা মোটরসের সানন্দ প্ল্যান্ট শুরু হয়

নভেম্বর 2010: কোম্পানি একটি টু-হুইলারের বিনিময়ে একটি টাটা ন্যানোর অফার ঘোষণা করেছিল

মার্চ, 2011: শ্রীলঙ্কা ও নেপালে রফতানি শুরু হয়েছিল

অক্টোবর, 2013: টাটা ন্যানো সংস্করণ চালু হয়েছে। কোম্পানি ন্যানো সিএনজি ইম্যাক্স ভেরিয়েন্ট লঞ্চ করেছে, যার দাম 2.45 লক্ষ টাকা।

জানুয়ারি,2014: Tata Nano পাওয়ার স্টিয়ারিং ভেরিয়েন্ট দেওয়া হয়েছিল। কোম্পানি বৈদ্যুতিক পাওয়ার স্টিয়ারিং-সহ ন্যানো টুইস্ট চালু করেছে ৷ যার দাম বর্তমান টপ-এন্ড মডেলের চেয়ে 14,000 টাকা বেশি।

মে, 2015: নেস্কস্ট জেনেরেশন Tata Nano চালু করা হয়েছিল। Tata Motors ন্যানো, Tata Nano GenX এর দ্বিতীয়-প্রজন্ম লঞ্চ করেছে, যার দাম 1.99 লক্ষ থেকে 2.89 লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

মার্চ, 2017: মাত্র দুই বছরে, টাটা ন্যানো বিক্রি কমতে শুরু করে এবং মার্চ 2017 সালে, মাত্র 174 ইউনিট বিক্রি হয়েছিল ৷ যা সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছিল। এপ্রিল 2016 থেকে মার্চ 2017 এর মধ্যে, কোম্পানিটি মাত্র 7,591টি ন্যানো বিক্রি করেছে, যা ছিল 63 শতাংশ কম।

মে, 2018: টাটার তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি টাটা ন্যানোকে একটি ব্যর্থ প্রকল্প বলেছিলেন। এই গাড়ির জন্য 1,000 কোটি টাকা ক্ষতির শিকার হয় সংস্থাটি।

টাটা ন্যানো'র ইঞ্জিন
যখন টাটা ন্যানো চালু হয়েছিল, তখন এটি 'জনগণের গাড়ি' বা 'লাখতকিয়া গাড়ি' নামে পরিচিত ছিল। গাড়ির পিছনে মূল ধারণা ছিল প্রত্যেক ভারতীয়কে গাড়ির অভিজ্ঞতা/নিরাপত্তা প্রদান করা। এই গাড়িতে একটি 624cc পেট্রোল ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছিল, যা 33 bhp শক্তি প্রদান করে। 23.1 kmpl এর ARAI মাইলেজ ৷ এটি সেই সময়ে দেশের সবচেয়ে জ্বালানি সাশ্রয়ী গাড়ি ছিল।

ABOUT THE AUTHOR

...view details